ব্যভিচার
ব্যভিচার
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ”। (সূরা বনী ইসরাঈল -৩২)
“তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ”। (সূরা বনী ইসরাঈল -৩২)
“আর যারা আল্লাহ ব্যতীত অপর কোন ইলাহের ইবাদত করে না, আল্লাহর নিষিদ্ধকৃত প্রাণী যথার্থ কারণ ব্যতীত হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। আর যে ব্যক্তি এসব কাজ করে, সে শাস্তি ভোগ করবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে সে হীন অবস্থায় চিরস্থায়ী হবে। তবে তারা নয়- যারা তাওবা করে এবং সৎ কাজ করে, আল্লাহ তাদের মন্দ কাজগুলো ভাল কর্ম দিয়ে পরিবর্তন করে দেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াশীল”। (সূরা আল-ফুরকান ৬৮-৬৯)
“ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণী উভয়কে এক’শ ঘা করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকরী করবে এদের প্রতি দয়া যেন তোমাদের অভিভূত না করে। যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী হয়ে থাক। ঈমানদারদের একটি দল যেন এদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে”। (সূরা আন নূর ২)
আলেমগণ বলেছেন, এটাই হচ্ছে অবিবাহিত পুরুষ-মহিলার ব্যভিচারের ইহকালীন শাস্তি। যদি তারা বিবাহিত হয় বা জীবনে একবার হলেও বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল এমন হয়ে থাকে, তাহলে তাদেরকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করতে হবে। এটা হাদীসের নির্দেশনা । এ মৃত্যুদণ্ডেও যদি তাদের পাপের পূর্ণ প্রায়শ্চিত্ত না হয় এবং তারা উভয়েই তওবা না করে মারা যায় তাহলে তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে পোড়ানো লৌহদণ্ড দিয়ে শাস্তি দেয়া হবে।
যবূর কিতাবে বর্ণিত আছে, “ব্যভিচারী নারী-পুরুষের লিংগ রশি দ্বারা বেঁধে জাহান্নামের আগুনে ঝুলানো হবে এবং লোহার ডান্ডা দিয়ে তাদের জননেন্দ্রিয়ে আঘাত করা হবে। আঘাতের যন্ত্রণায় যখন চিৎকার করবে, তখন জাহান্নামের ফেরেশতারা বলবে; পৃথিবীতে যখন তোমরা আনন্দ ফুর্তি করতে, হাসতে এবং আল্লাহর কথা স্মরণ করতে না এবং তাঁকে লজ্জা পেতে না, তখন এ চিৎকার কোথায় ছিল”?
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন;
“কোন ব্যভিচার ব্যভিচারের সময়ে মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না। কোন চোর চুরির সময় মুমিন অবস্থায় চুরি করে না। কোন মদখোর মদ খাওয়ার সময় মুমিন অবস্থায় মদ পান করে না, কোন লুন্ঠনকারী লুন্ঠন করার সময় মুমিন অবস্থায় লুন্ঠন করে না”। [বুখারি,মুসলিম ও আবু দাউদ]
“কোন ব্যভিচার ব্যভিচারের সময়ে মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না। কোন চোর চুরির সময় মুমিন অবস্থায় চুরি করে না। কোন মদখোর মদ খাওয়ার সময় মুমিন অবস্থায় মদ পান করে না, কোন লুন্ঠনকারী লুন্ঠন করার সময় মুমিন অবস্থায় লুন্ঠন করে না”। [বুখারি,মুসলিম ও আবু দাউদ]
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন,
“কোন ব্যক্তি যখন ব্যভিচার করে তখন তার ভেতর থেকে ঈমান বেরিয়ে যায়, এরপর তা তার মাথার উপর ছায়ার মত অবস্থান করতে থাকে। এরপর সে যখন তা থেকে তওবা করে তখন তার ঈমান পুনরায় তার কাছে ফিরে আসে”। [আবু দাউদ]
“কোন ব্যক্তি যখন ব্যভিচার করে তখন তার ভেতর থেকে ঈমান বেরিয়ে যায়, এরপর তা তার মাথার উপর ছায়ার মত অবস্থান করতে থাকে। এরপর সে যখন তা থেকে তওবা করে তখন তার ঈমান পুনরায় তার কাছে ফিরে আসে”। [আবু দাউদ]
হযরত আবু হুরায়রা বর্ণিত অন্য এক হাদীসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন,
“যে ব্যক্তি ব্যভিচার করে অথবা মদ পান করে, আল্লাহ তার কাছ থেকে ঈমান ঠিক এমনভাবে কেড়ে নেন, যেমন কোন মানুষ তার মাথার উপর দিয়ে জামা খুলে থাকে”।
“যে ব্যক্তি ব্যভিচার করে অথবা মদ পান করে, আল্লাহ তার কাছ থেকে ঈমান ঠিক এমনভাবে কেড়ে নেন, যেমন কোন মানুষ তার মাথার উপর দিয়ে জামা খুলে থাকে”।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন,
“কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তিন ব্যক্তির সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না, তাদেরকে পবিত্রও করবেন না এবং তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক কঠোর শাস্তি নির্ধারিত থাকবে। তারা হচ্ছে বৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক এবং অহংকারী গরীব”। [মুসলিম ও নাসায়ী]
“কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তিন ব্যক্তির সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না, তাদেরকে পবিত্রও করবেন না এবং তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক কঠোর শাস্তি নির্ধারিত থাকবে। তারা হচ্ছে বৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক এবং অহংকারী গরীব”। [মুসলিম ও নাসায়ী]
হযরত ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড় পাপ কি? তিনি বললেন, আল্লাহর সমকক্ষ কাউকে নির্ধারণ করা। আমি বললাম, এটা নিশ্চয়ই জঘন্যতম গুনাহ। তারপর কি ? তিনি বললেন; তোমার সন্তান তোমার সাথে আহারে বিহারে অংশ নিবে এ আশংকায় সন্তানকে হত্যা করা। আমি বললাম, এরপর কি? তিনি বললেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া। [বুখারি ও মুসলিম]
আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড় পাপ কি? তিনি বললেন, আল্লাহর সমকক্ষ কাউকে নির্ধারণ করা। আমি বললাম, এটা নিশ্চয়ই জঘন্যতম গুনাহ। তারপর কি ? তিনি বললেন; তোমার সন্তান তোমার সাথে আহারে বিহারে অংশ নিবে এ আশংকায় সন্তানকে হত্যা করা। আমি বললাম, এরপর কি? তিনি বললেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া। [বুখারি ও মুসলিম]
বুখারি শরীফে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্বপ্নের বিবরণ সম্বলিত যে হাদীসটি হযরত সামুরা বিন জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে উল্লেখ রয়েছে এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন;
“জিবরাঈল ও মীকাঈল (আলাইহি সালাম) তাঁর কাছে এলেন এবং আমি তাঁদের সাথে পথ চলতে শুরু করলাম। এক পর্যায়ে আমরা বড় একটা চুল্লির কাছে এসে পৌঁছলাম। সে চুল্লির উপরি অংশ সংকীর্ণ ও নিম্নভাগ প্রশস্ত। ভেতরে বিরাট চিৎকারও শোনা যাচ্ছিল। আমরা চুল্লিটার ভেতরে দেখতে পেলাম উলংগ নারী ও পুরুষদেরকে। তাদের নিচ থেকে কিছুক্ষণ পর পর এক একটা আগুনের হলকা আসছিল আর তার সাথে সাথে আগুনের তীব্র দহনে তারা প্রচন্ডভাবে চিৎকার করছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম; হে জিবরাঈল! এরা কারা ? তখন তিনি বললেনঃ এরা ব্যভিচারী নারী ও পুরুষ”।
“জিবরাঈল ও মীকাঈল (আলাইহি সালাম) তাঁর কাছে এলেন এবং আমি তাঁদের সাথে পথ চলতে শুরু করলাম। এক পর্যায়ে আমরা বড় একটা চুল্লির কাছে এসে পৌঁছলাম। সে চুল্লির উপরি অংশ সংকীর্ণ ও নিম্নভাগ প্রশস্ত। ভেতরে বিরাট চিৎকারও শোনা যাচ্ছিল। আমরা চুল্লিটার ভেতরে দেখতে পেলাম উলংগ নারী ও পুরুষদেরকে। তাদের নিচ থেকে কিছুক্ষণ পর পর এক একটা আগুনের হলকা আসছিল আর তার সাথে সাথে আগুনের তীব্র দহনে তারা প্রচন্ডভাবে চিৎকার করছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম; হে জিবরাঈল! এরা কারা ? তখন তিনি বললেনঃ এরা ব্যভিচারী নারী ও পুরুষ”।
মহান আল্লাহর বাণী; “জাহান্নামের সাতটি দরজা থাকবে”- এ আয়াতের তাফসীরে হযরত আতা (রহ) বলেন,
“ এ সাতটি দরজার মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত, সবচেয়ে বেশি দুঃখে পরিপূর্ণ ও সবচেয়ে ভয়ংকর দরজা হবে যারা জেনে-শুনে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তাদের দরজা”।
“ এ সাতটি দরজার মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত, সবচেয়ে বেশি দুঃখে পরিপূর্ণ ও সবচেয়ে ভয়ংকর দরজা হবে যারা জেনে-শুনে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তাদের দরজা”।
ইমাম মাকহুল দামেস্কী (রহ) বলেনঃ জাহান্নামবাসীদের নাকে একটা উৎকট দুর্গন্ধ ভেসে আসবে। তারা বলবে এমন দুর্গন্ধ আমরা ইতিপূর্বে আর কখনো অনুভব করিনি। তখন তাদেরকে বলা হবে, এ হচ্ছে ব্যভিচারীদের জননেন্দ্রিয় থেকে বেরিয়ে আসা দুর্গন্ধ।
তাফসীরের বিশিষ্ট ইমাম ইবনে যায়েদ (রহ) বলেন, ব্যভীচারীদের জননেন্দ্রিয়ের দুর্গন্ধ জাহান্নামবাসীর জন্যে সবচেয়ে বেশি কষ্ট বয়ে আনবে।
আল্লাহ হযরত মূসা আলাইহি সালাম কে সর্বপ্রথম যে দশটি আয়াত দিয়েছিলেন এর একটি ছিল এরুপঃ
“ তুমি চুরি কর না এবং ব্যভিচার কর না। যদি কর তাহলে তোমার কাছ থেকে আমার চেহারা ঢেকে ফেলব”।
আল্লাহর নবী মূসা(আ) কে যদি এরুপ কঠোর কথা উচ্চারণ করা হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে অন্যদের অবস্থা কত ভয়াবহ তা সহজেই অনুমান করা যেতে পারে।
“ তুমি চুরি কর না এবং ব্যভিচার কর না। যদি কর তাহলে তোমার কাছ থেকে আমার চেহারা ঢেকে ফেলব”।
আল্লাহর নবী মূসা(আ) কে যদি এরুপ কঠোর কথা উচ্চারণ করা হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে অন্যদের অবস্থা কত ভয়াবহ তা সহজেই অনুমান করা যেতে পারে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
ইবলীস তার বাহিনীকে পৃথিবীর চারদিকে ছড়িয়ে দেবার সময় বলে, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে সবচেয়ে বেশি বিভ্রান্ত করতে পারবে, আমি তার মাথায় মুকুট পরিয়ে তাকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করব। দিন শেষে এক একজন করে এসে ইবলীসে কাছে নিজের সাফল্যের বর্ণনা দিতে থাকবে। কেউ বলে; আমি অমুককে কুপ্ররোচনা দিয়ে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে প্রেরণা যুগিয়েছি এবং সে তালাক দিয়েছে। ইবলীস বলেঃ “তুমি উল্লেখযোগ্য তেমন কিছুই করনি। সে আর এক মহিলাকে বিয়ে করবে”। এরপর অন্যজন এসে বলেঃ আমি অমুককে ক্রমাগত কুপ্ররোচনা দিয়ে তার ভাইয়ের সাথে তার শত্রুতা সৃষ্টি করে দিয়েছি। ইবলীস বলেঃ ‘তুমিও তেমন কিছু করনি। তাদের অচিরেই মীমাংসা হয়ে যাবে’। এরপর অপর একজন এসে বলে আমি অমুককে এক নাগাড়ে ক্রমাগত প্ররোচনা দিতে দিতে ব্যভিচারে লিপ্ত করেছি। একথা শুনে ইবলীস তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলবেঃ তুমি একটা কাজের মত উত্তম কাজ করেছ। এরপর তাকে ডেকে নিয়ে তার মাথায় মুকুট পরিয়ে দেবে।
আল্লাহ আমাদেরকে শয়তান ও তার বাহিনীর কবল থেকে রক্ষার জন্যে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
ইবলীস তার বাহিনীকে পৃথিবীর চারদিকে ছড়িয়ে দেবার সময় বলে, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে সবচেয়ে বেশি বিভ্রান্ত করতে পারবে, আমি তার মাথায় মুকুট পরিয়ে তাকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করব। দিন শেষে এক একজন করে এসে ইবলীসে কাছে নিজের সাফল্যের বর্ণনা দিতে থাকবে। কেউ বলে; আমি অমুককে কুপ্ররোচনা দিয়ে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে প্রেরণা যুগিয়েছি এবং সে তালাক দিয়েছে। ইবলীস বলেঃ “তুমি উল্লেখযোগ্য তেমন কিছুই করনি। সে আর এক মহিলাকে বিয়ে করবে”। এরপর অন্যজন এসে বলেঃ আমি অমুককে ক্রমাগত কুপ্ররোচনা দিয়ে তার ভাইয়ের সাথে তার শত্রুতা সৃষ্টি করে দিয়েছি। ইবলীস বলেঃ ‘তুমিও তেমন কিছু করনি। তাদের অচিরেই মীমাংসা হয়ে যাবে’। এরপর অপর একজন এসে বলে আমি অমুককে এক নাগাড়ে ক্রমাগত প্ররোচনা দিতে দিতে ব্যভিচারে লিপ্ত করেছি। একথা শুনে ইবলীস তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলবেঃ তুমি একটা কাজের মত উত্তম কাজ করেছ। এরপর তাকে ডেকে নিয়ে তার মাথায় মুকুট পরিয়ে দেবে।
আল্লাহ আমাদেরকে শয়তান ও তার বাহিনীর কবল থেকে রক্ষার জন্যে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“ঈমান একটি উত্তম পোশাক, যা আল্লাহ তাকে ইচ্ছা করেন তাকেই পরিধান করান। আর কোন বান্দা যখন ব্যভিচার করে তখন তার কাছ থেকে তিনি ঈমানের পোশাক খুলে নেন। এরপর তওবা করলে তাকে পুনরায় এ পোশাক ফিরিয়ে দেয়া হয়”। [বায়হাকী, তিরমিযি, আবু দাউদ ও হাকেম]
“ঈমান একটি উত্তম পোশাক, যা আল্লাহ তাকে ইচ্ছা করেন তাকেই পরিধান করান। আর কোন বান্দা যখন ব্যভিচার করে তখন তার কাছ থেকে তিনি ঈমানের পোশাক খুলে নেন। এরপর তওবা করলে তাকে পুনরায় এ পোশাক ফিরিয়ে দেয়া হয়”। [বায়হাকী, তিরমিযি, আবু দাউদ ও হাকেম]
অন্য এক হাদীসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
“হে মুসলমানগণ ! তোমরা ব্যভিচার পরিত্যাগ কর। কেননা এর ছয়টি শাস্তি রয়েছে। মন্দ পরিণতি এর মধ্যে তিনটি দুনিয়াতে ও তিনটি আখেরাতে প্রকাশ পাবে। যে তিনটি শাস্তি দুনিয়াতে হয় তা হচ্ছে, তার চেহারার ঔজ্জ্বল্য বিনষ্ট হয়ে যাবে, তার আয়ুষ্কাল সংকীর্ণ হয়ে যাবে এবং তার দারিদ্রতা চিরস্থায়ী হবে। আর যে তিনটি শাস্তি আখেরাতে প্রকাশ পাবে তা হচ্ছে, সে আল্লাহর অসন্তোষ, কঠিন হিসাব ও জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে”। [বায়হাকী]
“হে মুসলমানগণ ! তোমরা ব্যভিচার পরিত্যাগ কর। কেননা এর ছয়টি শাস্তি রয়েছে। মন্দ পরিণতি এর মধ্যে তিনটি দুনিয়াতে ও তিনটি আখেরাতে প্রকাশ পাবে। যে তিনটি শাস্তি দুনিয়াতে হয় তা হচ্ছে, তার চেহারার ঔজ্জ্বল্য বিনষ্ট হয়ে যাবে, তার আয়ুষ্কাল সংকীর্ণ হয়ে যাবে এবং তার দারিদ্রতা চিরস্থায়ী হবে। আর যে তিনটি শাস্তি আখেরাতে প্রকাশ পাবে তা হচ্ছে, সে আল্লাহর অসন্তোষ, কঠিন হিসাব ও জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে”। [বায়হাকী]
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন,
“যে ব্যক্তি মদ খাওয়া অবস্থায় মারা যায় আল্লাহ তাকে গাওতা নামক ঝর্ণার পানি পান করাবেন। গাওতা হল ব্যভিচারীণী নারীদের যোনিদেশ থেকে নির্গত পুঁজ ও দূষিত তরল পদার্থের ঝর্ণা যা জাহান্নামে প্রবাহিত থাকবে। এরপর তা মদপান করা অবস্থায় মারা যাওয়া লোকদের পান করানো হবে। [আহমদ]
“যে ব্যক্তি মদ খাওয়া অবস্থায় মারা যায় আল্লাহ তাকে গাওতা নামক ঝর্ণার পানি পান করাবেন। গাওতা হল ব্যভিচারীণী নারীদের যোনিদেশ থেকে নির্গত পুঁজ ও দূষিত তরল পদার্থের ঝর্ণা যা জাহান্নামে প্রবাহিত থাকবে। এরপর তা মদপান করা অবস্থায় মারা যাওয়া লোকদের পান করানো হবে। [আহমদ]
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন,
“আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করার পর অবৈধভাবে কোন মহিলার সাথে সহবাস করার মত বড় পাপ আর নাই”।[আহমদ, তাবারানী]
“আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করার পর অবৈধভাবে কোন মহিলার সাথে সহবাস করার মত বড় পাপ আর নাই”।[আহমদ, তাবারানী]
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন,
“জাহান্নামে একটা হ্রদ আছে। এতে বহু সংখ্যক সাপের বসবাস। প্রতিটি সাপ উটের ঘাড়ের সমান মোটা। সে সাপগুলো নামায তরককারীদেরকে দংশন করবে। একবারের দংশনেই তার দেহে সত্তর বছর পর্যন্ত বিষক্রিয়া থাকবে। এরপর তার গোশত ঝরে পড়বে। এছাড়া জাহান্নামে আরো একটা হ্রদ রয়েছে ,যাকে ‘দুঃখের হ্রদ’ বলা হয়। এতেও বহু সাপ ও বিচ্ছুর বসবাস। প্রতিটা বিচ্ছু এক একটা খচ্চরের সমান। এর সত্তরটি হুল রয়েছে । প্রত্যেকটি হুল বিষে পরিপূর্ণ। সে বিচ্ছু ব্যভিচারীকে দংশন করে সমস্ত বিষ তার দেহে ঢেলে দিবে। এতে সে এক হাজার বছর পর্যন্ত বিষের যন্ত্রণা ভোগ করবে। এরপর তার গোশত খসে পড়ে তার জননেন্দ্রীয় থেকে পুঁজ, নোংরা তরল পদার্থ নির্গত হবে”।
“জাহান্নামে একটা হ্রদ আছে। এতে বহু সংখ্যক সাপের বসবাস। প্রতিটি সাপ উটের ঘাড়ের সমান মোটা। সে সাপগুলো নামায তরককারীদেরকে দংশন করবে। একবারের দংশনেই তার দেহে সত্তর বছর পর্যন্ত বিষক্রিয়া থাকবে। এরপর তার গোশত ঝরে পড়বে। এছাড়া জাহান্নামে আরো একটা হ্রদ রয়েছে ,যাকে ‘দুঃখের হ্রদ’ বলা হয়। এতেও বহু সাপ ও বিচ্ছুর বসবাস। প্রতিটা বিচ্ছু এক একটা খচ্চরের সমান। এর সত্তরটি হুল রয়েছে । প্রত্যেকটি হুল বিষে পরিপূর্ণ। সে বিচ্ছু ব্যভিচারীকে দংশন করে সমস্ত বিষ তার দেহে ঢেলে দিবে। এতে সে এক হাজার বছর পর্যন্ত বিষের যন্ত্রণা ভোগ করবে। এরপর তার গোশত খসে পড়ে তার জননেন্দ্রীয় থেকে পুঁজ, নোংরা তরল পদার্থ নির্গত হবে”।
অন্য এক হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,
যে ব্যক্তি কোন বিবাহিত মহিলার সাথে ব্যভিচার করবে তাদের উভয়ের উপর মুসলিম উম্মাহর অর্ধেক আযাব নিপতিত হবে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ এ মহিলার স্বামীকে তার সৎ কর্মের বিচারের দায়িত্ব অর্পণ করে জিজ্ঞেস করবেন, তার স্ত্রী যে অপকর্ম করেছে তা সে জানত কিনা ? যদি সে জেনে থাকে তাহলে এ কুকর্ম প্রতিহত করতে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে থাকে তাহলে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দিবেন। কেননা, আল্লাহ জান্নাতের দরজার উপর এ মর্মে লিখে রেখেছেন, দায়ূসের জন্য জান্নার হারাম। দায়ূস হচ্ছে সে ব্যক্তি, যার পরিবারে অশ্লীল কার্যকলাপ চলতে থাকা সত্ত্বেও, সে তা জেনে নীরবতা পালন করে এবং একে প্রতিহত করার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।
যে ব্যক্তি কোন বিবাহিত মহিলার সাথে ব্যভিচার করবে তাদের উভয়ের উপর মুসলিম উম্মাহর অর্ধেক আযাব নিপতিত হবে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ এ মহিলার স্বামীকে তার সৎ কর্মের বিচারের দায়িত্ব অর্পণ করে জিজ্ঞেস করবেন, তার স্ত্রী যে অপকর্ম করেছে তা সে জানত কিনা ? যদি সে জেনে থাকে তাহলে এ কুকর্ম প্রতিহত করতে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে থাকে তাহলে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দিবেন। কেননা, আল্লাহ জান্নাতের দরজার উপর এ মর্মে লিখে রেখেছেন, দায়ূসের জন্য জান্নার হারাম। দায়ূস হচ্ছে সে ব্যক্তি, যার পরিবারে অশ্লীল কার্যকলাপ চলতে থাকা সত্ত্বেও, সে তা জেনে নীরবতা পালন করে এবং একে প্রতিহত করার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।
হাদীসে আরো উল্লেখ রয়েছে,
যে ব্যক্তি কোন মহিলাকে কুমতলবের ইচ্ছা নিয়ে স্পর্শ করবে, কিয়ামতের দিন সে এমনভাবে আসবে যে তার হাত তার ঘাড়ের সাথে যুক্ত থাকবে। সে যদি এ নারীকে চুমু দিয়ে থাকে, তাহলে তার ঠোঁট দুটিকে আগুনের কাঁচি দিয়ে কেঁটে ফেলা হবে। আর যদি তার সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে থাকে তাহলে তার দুই উরু সাক্ষী দিবে, আমি অবৈধ কাজের জন্য আরোহণ করেছিলাম। তখন আল্লাহ তার দিকে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকাবেন এবং এতে সে অপমান বোধ করে গোয়ার্তুমি করে বলবে ; আমি এ কাজ করিনি। তখন তার জিহ্বা তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়ে বলবে, ‘আমি অবৈধ বিষয়ে কথা বলেছিলাম’। তার হাত সাক্ষী দিবে, ‘আমি অবৈধ বস্তু ধরেছিলাম’। এরপর চক্ষু বলবে, ‘ আমি অবৈধ বস্তুর দিকে তাকাতাম’। তার দুখানা পা বলবে, ‘ আমি ব্যভিচার করেছি’। প্রহরী ফেরেশতারা বলবে, ‘ আমি শুনেছি’। অন্য ফেরেশতা বলবে, ‘আর আমি লিখে রেখেছি’। আর আল্লাহ বলবেন, ‘আমি জেনেছি এবং লুকিয়ে রেখেছি’। এরপর আল্লাহ বলবেন, ‘হে ফেরেশতাগণ! একে পাকড়াও করে আমার আযাব ভোগ করাও। কেননা যে ব্যক্তির লজ্জা কমে যায় তার উপর আমার ক্রোধের অন্ত নাই’।
যে ব্যক্তি কোন মহিলাকে কুমতলবের ইচ্ছা নিয়ে স্পর্শ করবে, কিয়ামতের দিন সে এমনভাবে আসবে যে তার হাত তার ঘাড়ের সাথে যুক্ত থাকবে। সে যদি এ নারীকে চুমু দিয়ে থাকে, তাহলে তার ঠোঁট দুটিকে আগুনের কাঁচি দিয়ে কেঁটে ফেলা হবে। আর যদি তার সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে থাকে তাহলে তার দুই উরু সাক্ষী দিবে, আমি অবৈধ কাজের জন্য আরোহণ করেছিলাম। তখন আল্লাহ তার দিকে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকাবেন এবং এতে সে অপমান বোধ করে গোয়ার্তুমি করে বলবে ; আমি এ কাজ করিনি। তখন তার জিহ্বা তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়ে বলবে, ‘আমি অবৈধ বিষয়ে কথা বলেছিলাম’। তার হাত সাক্ষী দিবে, ‘আমি অবৈধ বস্তু ধরেছিলাম’। এরপর চক্ষু বলবে, ‘ আমি অবৈধ বস্তুর দিকে তাকাতাম’। তার দুখানা পা বলবে, ‘ আমি ব্যভিচার করেছি’। প্রহরী ফেরেশতারা বলবে, ‘ আমি শুনেছি’। অন্য ফেরেশতা বলবে, ‘আর আমি লিখে রেখেছি’। আর আল্লাহ বলবেন, ‘আমি জেনেছি এবং লুকিয়ে রেখেছি’। এরপর আল্লাহ বলবেন, ‘হে ফেরেশতাগণ! একে পাকড়াও করে আমার আযাব ভোগ করাও। কেননা যে ব্যক্তির লজ্জা কমে যায় তার উপর আমার ক্রোধের অন্ত নাই’।
এ হাদীসের সমর্থনে সত্যতা নিম্নের আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়ঃ
“যেদিন তাদের কৃতকর্মের বিরুদ্ধে তাদের জিহ্বা, তাদের হাত ও পা সাক্ষী দিবে”। [সূরা আন নূর-২৪]
ব্যভিচারের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্যতম ধরনের ব্যভিচার হচ্ছে মাহরাম অর্থাৎ মা, বোন, খালা, সৎ মা, খালা, মেয়ে চিরনিষিদ্ধ মহিলাদের সাথে সংগম করা।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“যে ব্যক্তি কোন মুহাররম মহিলার সাথে ব্যভিচার করলো, একে তোমরা হত্যা কর”।
“যে ব্যক্তি কোন মুহাররম মহিলার সাথে ব্যভিচার করলো, একে তোমরা হত্যা কর”।
হযরত বারা ইবন আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু তায়ালা থেকে বর্ণিত,
“রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বারবার আমাকে এ মর্মে নির্দেশ প্রেরণ করেছিলেন, অমুক ব্যক্তিকে হত্যা করে তার সম্পদের এক পঞ্চমাংশ বাজেয়াপ্ত করার জন্য। কেননা সে নিজের সৎ মাকে বিবাহ করেছিল”।[হাকেম]
“রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বারবার আমাকে এ মর্মে নির্দেশ প্রেরণ করেছিলেন, অমুক ব্যক্তিকে হত্যা করে তার সম্পদের এক পঞ্চমাংশ বাজেয়াপ্ত করার জন্য। কেননা সে নিজের সৎ মাকে বিবাহ করেছিল”।[হাকেম]
মহান আল্লাহ আমাদেরকে এসব ঘৃণ্য মহাপাপ থেকে আত্মরক্ষা করার জন্য তওফীক দান করুন।
মূলঃ কবীরা গুনাহ – ইমাম আয যাহবী (রহ)
সূত্র : সরল পথ
আরও পড়ুনঃ ব্যভিচার হতে তওবা
আরও পড়ুনঃ যে ব্যক্তি ধৈর্য হারিয়ে যেনা করতে চায়
আরও পড়ুনঃ যিনা-ব্যভিচারকারী পুরুষ অথবা নারী কি তাওবার পর বিবাহ করতে পারে?
আরও পড়ুনঃ যে ব্যক্তি ধৈর্য হারিয়ে যেনা করতে চায়
আরও পড়ুনঃ যিনা-ব্যভিচারকারী পুরুষ অথবা নারী কি তাওবার পর বিবাহ করতে পারে?
আরও পড়ুনঃ এক তালিবে ইল্ম নারীদেরকে ইল্ম শিক্ষা দিতে গিয়ে নিজে তাদের একজনের সাথে বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন
আরও পড়ুনঃ অবৈধ সম্পর্কের কারণে বেদনা-উৎকণ্ঠা
আরও পড়ুনঃ সমকামী এবং সে এর এলাজ প্রার্থী
আরও পড়ুনঃ পাপ : আকার-প্রকৃতি, প্রভাব ও প্রতিকার
আরও পড়ুনঃ কবীরা গুনাহ
আরও পড়ুনঃ একশটি কবীরা গুনাহ
পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন