নারী-পুরুষ সংমিশ্রণের বিধান
নারী-পুরুষ সংমিশ্রণের বিধান
সৌদি আরবের ইলমী গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে নিম্নবর্ণিত জিজ্ঞাসা করা হয়েছে :
(এক ব্যক্তি এখনো নারী-পুরুষ সংমিশ্রণ সমস্যায় ভুগছে। আপনারা যদি তার মাতা-পিতা ও ভাই-বেরাদরকে এ ব্যাপারে উপদেশ দিতেন যাতে সে তাদের মাতা-পিতার অনুমতি নিয়েই দূরে থাকতে পারে এবং উত্তমরূপে শরিয়তে বিধান চর্চায় সক্ষম হয়? )
উত্তরে তারা বলেছেন:
গায়রে মাহরাম অর্থাৎ যাদের মাঝে বিবাহ বৈধ এমন নারী-পুরুষের সংমিশ্রণ, নারীদের কর্তৃক তাদের চেহারা ও শরীরের কিছু অংশ উন্মুক্ত করণ অন্যায়, অবৈধ।
আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হুকুম দিয়েছেন তিনি যেন তাঁর স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মুমিন নারীদেরকে পর্দা করার ব্যাপারে নির্দেশ দেন। ইরশাদ হয়েছে :
﴿ يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ يُعْرَفْنَ فَلا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا ﴾.
( হে নবী, তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বল, তারা যেন তাদের জিলবাবের কিছু অংশ তাদের নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়, তাদেরকে চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে। ফলে তাদেরকে কষ্ট দেয়া হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।) [ সূরা আল-আহযাব: ৫৯ ]
আরও ইরাশাদ হয়েছে:
﴿ وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ ﴾.
(আর তোমরা যখন নবীপত্নীদের কাছে কোনো সামগ্রী চাইবে তখন পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটি তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্র। ) [ সূরা আল-আহযাব: ৫৩ ]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ হাদিসে এসেছে, তিনি বলেছেন:
‘একজন পুরুষ একজন নারীকে নিয়ে একাকী হলেই শয়তান তাদের তৃতীয়জন হয়ে যায়’।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন:
‘স্ত্রী অথবা মাহরাম ব্যতীত কোনো পুরুষ কোনো নারীর কাছে কখনোই রাত্রীযাপন করবে না’।
সে হিসেবে পরিবারের সকল সদস্যের উচিত, আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়নে একে অন্যকে সাহায্য করা; যাতে সবাই সত্যিকার অর্থে মুমিন হতে সক্ষম হয়।
ইরশাদ হয়েছে :
﴿ وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ ﴾.
( আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় ও অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ) [ সূরা তাওবা: ৭১ ]
আরও ইরশাদ হয়েছে:
﴿ وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُبِينًا ﴾.
( আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোনো নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন পরুষ ও নারীর জন্য নিজদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে। ) [ সূরা আহযাব: ৩৬ ]
আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দান করুন।
গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটি
আব্দুল্লাহ বিন গাদয়ান.. আব্দুর রাজ্জাক আফিফি.. আব্দুল আযীয বিন বায র.
[ স্থায়ী কমিটির ফতোয়া (১৭/৯১-৯৩) ফতোয়া নং ( ১৪৭৮২) এর দ্বিতীয় প্রশ্ন ]
মুফতী: ইলমী গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটি
সূত্র: ইসলামহাউজ
আরও পড়ুনঃ অবৈধ সম্পর্কের কারণে বেদনা-উৎকণ্ঠা
আরও পড়ুনঃ বৈধ ভালবাসা বনাম নিষিদ্ধ প্রেম
আরও পড়ুনঃ প্রেম-ভালোবাসা
আরও পড়ুনঃ ব্যভিচার
আরও পড়ুনঃ শয়তানের প্রবেশপথ
আরও পড়ুনঃ গুনাহের দরজা সমূহ
পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন