বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৪

মুহাররম মাসের সুন্নাত ও বিদ‘আত

মুহাররম মাসের সুন্নাত ও বিদ‘আত



মুহাররম মাসের সুন্নাত ও বিদ‘আত

ভূমিকা 

আল্লাহ তা‘আলা বার মাসের মধ্যে মুহাররম, রজব, যুলক্বা‘দাহ ও যুলহিজ্জাহ এই চারটি মাসকে বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন। এই মাসগুলো ‘হারাম’ বা সম্মানিত মাস হিসাবে পরিগণিত। ঝগড়া-বিবাদ, লড়াই, খুন-খারাবী ইত্যাদি অন্যায়-অপকর্ম হ’তে দূরে থেকে এর মর্যাদার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য। যেমন আল্লাহ বলেন, 
فَلاَ تَظْلِمُوْا فِيْهِنَّ أَنْفُسَكُمْ 
‘এই মাসগুলিতে তোমরা পরস্পরের উপরে অত্যাচার কর না’ (তওবা ৯/৩৬)। 
রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক আশূরার ছিয়াম পালন ও এর ফযীলত বর্ণনার মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবেই এ মাসের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে দুঃখের বিষয় হ’ল, রাসূল (ছাঃ) যে উদ্দেশ্যে আশূরার ছিয়াম পালন করেছেন, আমরা তাঁর উদ্দেশ্যের কথা ভুলে গিয়ে এমন উদ্দেশ্যে ছিয়াম পালন করছি যা কুরআন ও সুন্নাতের সম্পূর্ণ বিরোধী। সাথে সাথে এমন সব বিদ‘আতে লিপ্ত হয়েছি যা থেকে বেঁচে থাকা একান্ত যরূরী। 
নিম্নে মুহাররম মাসের সুন্নাত ও বিদ‘আত সম্পর্কে আলোকপাত করা হ’ল।-

শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৪

ফরয নামাযের পর হাত তুলে মুনাজাত প্রসঙ্গে

ফরয নামাযের পর হাত তুলে মুনাজাত প্রসঙ্গে



ফরয নামাযের পর হাত তুলে মুনাজাত প্রসঙ্গে

নামাযী যখন নামায পড়ে তখন সে আল্লাহর নিকট মুনাজাত করে। আল্লাহর সাথে নিরালায় যেন কানে কানে কথা বলে। (মুঅত্তা, মুসনাদে আহ্‌মদ ২/৩৬, ৪/ ৩৪৪)

নামাযের মাঝেই আব্দ (দাস) মাবুদের (প্রভুর) ধ্যনে ধ্যানমগ্ন থাকে। যেন সে তাকে দেখতে পায়। যতক্ষণ সে নামাযে থাকে ততক্ষণ সে আল্লাহর সাথে কথা বলে। তিনি তার প্রতি মুখ ফিরান এবং সালাম না ফিরা পর্যন্ত তিনি মুখ ফিরিয়ে নেন না। (বাইহাকী, সহীহুল জামে’১৬১৪ নং)

বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৪

জুম‘আর নামায

জুমআর নামায



জুমআর নামায

জুমআর নামায প্রত্যেক সাবালক জ্ঞান-সম্পন্ন পুরুষের জন্য জামাআত সহকারে ফরয।
মহান আল্লাহ বলেন,
(يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِذَا نُوْدِيَ لِلصَّلاَةِ مِنْ يَّوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ، ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ)
অর্থাৎ, হে ঈমানদারগণ! যখন জুমআর দিন নামাযের জন্য আহবান করা হবে, তখন তোমরা সত্বর আল্লাহর স্মরণের জন্য উপস্থিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় বর্জন কর। এটিই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা উপলব্ধি কর। (কুরআন মাজীদ ৬২/৯)

শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৪

আল্লাহর দিকে দাওয়াতের সম্বল

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

ভূমিকা
সব প্রশংসা আল্লাহর, আমরা তাঁর প্রশংসা করছি, তারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি, তাঁর নিকট ক্ষমা চাচ্ছি, তাঁর কাছে তাওবা করছি। তাঁর কাছে আমাদের অন্তরের সব কলুষ ও সব পাপ কাজ থেকে পানাহ চাই। তিনি যাকে হিদায়াত দান করেন কেউ তাকে গোমরাহ করতে পারে না, আর তিনি যাকে পথ-ভ্রষ্ট করেন কেউ তাকে হিদায়াত দিতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ তাকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীন সহকারে প্রেরণ করেছেন, যাতে তা সব দ্বীনের উপর বিজয় লাভ করে। তিনি তাঁর রিসালাহ (দাওয়াত) পৌঁছে দিয়েছেন, আমানত আদায় করেছেন, উম্মতকে উপদেশ দিয়েছেন, আল্লাহর পথে যথাযথ প্রচেষ্টা করেছেন। তাঁর উম্মতকে সুস্পষ্ট দলিল প্রমাণের উপর রেখে গেছেন, যার দিবারাত্রি সমানভাবে উজ্জল, একমাত্র ধ্বংসপ্রাপ্ত ছাড়া কেউ সে পথ থেকে সরে যায় না। তাই আল্লাহর সালাত ও সালাম তাঁর উপর, তাঁর পরিবার পরিজন, সাহাবীগণ ও কিয়ামত পর্যন্ত একনিষ্ঠার সাথে যারা তাঁর অনুসরণ করবে সকলের উপর বর্ষিত হোক। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন আমাকে ও আপনাদেরকে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সব কাজে তাঁর অনুসারী করেন, তিনি যেন তাঁর নবী (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) দলের অন্তর্ভুক্ত করে আমাদেরকে মৃত্যু দান করেন, তাঁর উম্মতের কাতারে যেন হাশরের দিনে একত্রিত করেন, তাঁর শাফায়াতের অন্তর্ভুক্ত করেন এবং তিনি যেন আমাদেরকে চিরস্থায়ী জান্নাতে তাঁর সাথে ও সে সব নবী রাসূল, সিদ্দিকীন, শুহাদা ও সালেহীন বান্দাদের সাথে একত্রিত করেন যাদের উপর আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন। 

শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৪

ধর্ষকের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য লড়াই করা কি ওয়াজিব?

ধর্ষকের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য লড়াই করা কি ওয়াজিব?

 ধর্ষকের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য লড়াই করা কি ওয়াজিব?

প্রশ্ন: কেউ যদি কোন নারীকে ধর্ষণ করতে উদ্যত হয় তখন সেই নারীর উপর আত্মরক্ষা করা কি ওয়াজিব? আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র ব্যবহার করা জায়েয হবে কি?

উত্তর: 

যে নারীর সাথে জোরপূর্বক যেনা করার চেষ্টা করা হচ্ছে সে নারীর উপর আত্মরক্ষা করা ফরজ। তিনি কিছুতেই দুর্বৃত্তের কাছে হার মানবেন না। এজন্য যদি দুর্বৃত্তকে হত্যা করে নিজেকে বাঁচাতে হয় সেটা করবেন। এই আত্মরক্ষা ফরজ। ধর্ষণ করতে উদ্যত ব্যক্তিকে হত্যা করার কারণে তিনি দায়ী হবেন না। এর সপক্ষে দলিল হচ্ছে- ইমাম আহমাদ ও ইবনে হিব্বান কর্তৃক সংকলিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস, 
“যে ব্যক্তি তার সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ। যে ব্যক্তি তার জীবন রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ। যে ব্যক্তি তার ধর্ম রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ। যে ব্যক্তি তার পরিবার রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ।” 
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় এসেছে- “যে ব্যক্তি তার পরিবার রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ” অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার স্ত্রী অথবা অন্য কোন নিকটাত্মীয় নারীর ইজ্জত রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল (সে শহীদ)।

বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৪

কসর ও জমা করে সালাত আদায় সম্পর্কে কিছু বিধান

কসর ও জমা করে সালাত আদায় সম্পর্কে কিছু বিধান



কসর ও জমা করে সালাত আদায় সম্পর্কে কিছু বিধান

ভূমিকা
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর প্রশংসা ও নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরূদ পাঠের পর আজকের আলোচনা শুরু করছি। 
ইবাদতের ব্যাপারে একটি মৌলিক নীতি হচ্ছে, প্রতিটি ইবাদতের জন্য শরী‘আতপ্রবর্তক আল্লাহ তা‘আলা একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন যা সে সময়েই আদায় করতে হয়, যদি না সেটাকে তার সময় থেকে বিশেষ আবশ্যকতা বা প্রয়োজনের কারণে বের করে অন্য সময়ে করার ব্যাপারে দলীল-প্রমাণাদি পাওয়া যায়। 
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, 
﴿ ٱلَّذِينَ هُمۡ عَن صَلَاتِهِمۡ سَاهُونَ ٥ ﴾ [الماعون: ٥]  
“যারা তাদের সালাত সম্পর্কে বেখবর” [সূরা আল-মা‘উন, ৫] 
অর্থাৎ তারা সালাতকে তার সময় থেকে পিছিয়ে দেয়। 

বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৪

পিতামাতার অবাধ্যতা: কারণ, কিছু বাহ্যিক চিত্র ও প্রতিকারের উপায়

পিতামাতার অবাধ্যতা: কারণ, কিছু বাহ্যিক চিত্র ও প্রতিকারের উপায়


পিতামাতার অবাধ্যতা: কারণ, কিছু বাহ্যিক চিত্র ও প্রতিকারের উপায়

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ভূমিকা
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য; আর দুরূদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি এবং তাঁর পরিবার-পরিজন, সঙ্গী-সাথী ও যারা তাঁকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছেন, তাদের প্রতি।
অতঃপর,
পিতামাতার অধিকারের বিষয়টি অনেক বড় ও মহান এবং দীনের মধ্যে তাদের মর্যাদা ও অবস্থান অনেক উপরে; সুতরাং তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করার বিষয়টি তাওহীদ তথা আল্লাহর একত্ববাদের মতই গুরত্বপূর্ণ; আর তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতার বিষয়টি আল্লাহ তা‘আলার প্রতি কৃতজ্ঞতার সাথে সম্পৃক্ত; আর তাদের প্রতি ইহসান করা সবচেয়ে মহান কাজের অন্তর্ভুক্ত এবং মহান আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় আমল।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿۞ وَٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَلَا تُشۡرِكُواْ بِهِۦ شَيۡ‍ٔٗاۖ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنٗا ﴾ [النساء: ٣٦]
আর তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং কোনো কিছুকে তাঁর শরীক করো না; আর পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করো।[1]

মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৪

ইসলামে হিজাবের বিধান আরোপের কারণ যৌন কামনা রোধ করা নয়

ইসলামে হিজাবের বিধান আরোপের কারণ যৌন কামনা রোধ করা নয়



 ইসলামে হিজাবের বিধান আরোপের কারণ যৌন কামনা রোধ করা নয়

প্রশ্ন: আপনাদের ধর্ম বা সংস্কৃতিতে নারীদের যে আবরণ পরতে হয় আমি সে ব্যাপারে জানতে আগ্রহী। এই পোশাক আমাদের খ্রিষ্টানদের কাছে সত্যিই খুব অসার মনে হয়। কারণ এটি এমন ইঙ্গিত করে যেন একজন নারী ভাবে সে এই পোশাক না পরলে প্রতিটা পুরুষ তাকে কামনা করবে। আরও ইঙ্গিত করে যে সৌন্দর্যের কারণে আপনার ধর্মের বা সংস্কৃতির অনুসারী কোন নারীর ক্ষেত্রে পুরুষদেরকে বিশ্বাস করা যায় না। কারণ আপনি মনে করছেন যে আপনাকে কামনা করা হবে। কিন্তু কেউ সুন্দর হতেই পারে; তাই বলে প্রতিটা পুরুষ তাকে কামনা করবে এমন তো নয়। আপনি কি এ ব্যাপারে কিছু আলোকপাত করতে পারেন? আমি আপনাকে সত্য করেই বলব আমি যখন এই পোশাক পরা কোন নারীকে দেখি আমার মনে হয়, “কত অসার তুমি?” উত্তরের জন্য আপনাকে আগেই ধন্যবাদ দিয়ে রাখছি।

উত্তর:
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

প্রথমেই আমরা আপনাকে আপনার অকপটতা, সুস্পষ্ট প্রশ্ন ও প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা আশা করি নিচে যে সামান্য কিছু কথা আমরা তুলে ধরব এর মাঝে আপনি আপনার উত্তর খুঁজে পাবেন।