রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে পবিত্রতা অর্জন করতেন (৩য় পর্ব)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে পবিত্রতা অর্জন করতেন (৩য় পর্ব)


 
১ম পর্ব | ২য় পর্ব | ৩য় পর্ব

গোসল
যখন গোসল করা ফরয:
নিম্নোক্ত চারটি কারণের যে কোনো একটি কারণ সংঘটিত হলে যে কোনো পুরুষ বা মহিলার উপর গোসল করা ফরয। উপরন্তু মহিলাদের গোসল ফরয হওয়ার জন্য আরো দু’টি বাড়তি কারণ রয়েছে। সে কারণগুলো নিম্নরূপ:

১. উত্তেজনাসহ বীর্যপাত হলে:
উত্তেজনাসহ বীর্যপাত হলে গোসল ফরয হয়ে যায়। তেমনিভাবে স্বপ্নদোষ হলেও। তবে তাতে উত্তেজনার শর্ত নেই।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَإِن كُنتُمۡ جُنُبٗا فَٱطَّهَّرُواْۚ﴾ [المائ‍دة: ٦]
“তোমরা জুনুবী হলে ভালোভাবে গোসল করে নিবে”। [সূরা আল-মায়দাহ, আয়াত: ৬]
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّمَا الْـمَاءُ مِنَ الْـمَاءِ».
“বীর্যপাত হলেই গোসল করতে হয়”।[233]
‘আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا رَأَيْتَ الْمَذْيَ فَاغْسِلْ ذَكَرَكَ، وَتَوَضَّأْ وُضُوْءَكَ لِلصَّلاَةِ، فَإِذَا فَضَخْتَ الْمَاءَ فَاغْتَسِلْ».
“মযি দেখতে পেলে লিঙ্গটি ধুয়ে সালাতের অযুর ন্যায় অযু করবে। আর বীর্যপাত হলে গোসল করে নিবে”।[234]

স্বপ্নদোষ:
যে কোনো ব্যক্তির (পুরুষ হোক বা মহিলা) স্বপ্নদোষ হলে তদুপরি কাপড়ে বা শরীরে বীর্যের কোনো দাগ পরিলক্ষিত হলে তাকে গোসল করতে হবে। তবে কোনো দাগ পরিলক্ষিত না হলে তাকে গোসল করতে হবে না। যদিও স্বপ্নদোষের পুরো চিত্রটি তার মনে পড়ে। পুরুষের যেমন স্বপ্নদোষ হয় তেমনিভাবে মহিলাদেরও হয়।
উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন একদা উম্মে সুলাইম রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন: মহিলাদের স্বপ্নদোষ হলে গোসল করতে হবে কি? তিনি বললেন:
«نَعَمْ، إِذَا رَأَتِ الْـمَاءَ»
“হ্যাঁ, যদি সে (কাপড়ে বা শরীরে) বীর্য দেখতে পায়। উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা এ কথা শুনে লজ্জায় মুখ ঢেকে নিলেন এবং বলেন, হে রাসুল! মেয়েদেরও কি স্বপ্নদোষ হয়? তখন তিনি বললেন”:
«نَعَمْ، تَرِبَتْ يَمِيْنُكِ، فَبِمَ يُشْبِهُهَا وَلَدُهَا»
“হ্যাঁ, তোমার হাত ধূলিধূসরিত হোক, (যদি তাদের স্বপ্নদোষ নাই হয়) তাহলে সন্তান কীভাবে তাদের রং ও রূপ ধারণ করে”।[235]
অন্য বর্ণনায় রয়েছে:
«إِنَّ مَاءَ الرَّجُلِ غَلِيْظٌ أَبْيَضُ، وَمَاءُ الـْمَرْأَةِ رَقِيْقٌ أَصْفَرُ فَإِذَا عَلاَ مَاؤُهَا مَاءَ الرَّجُلِ أَشْبَهَ الْوَلَدُ أَخْوَالَهُ، وَإِذَا عَلاَ مَاءُ الرَّجُلِ مَاءَهَا أَشْبَهَ أَعْمَامَهُ».
“পুরুষের বীর্য গাঢ় শুভ্র। আর মেয়েদের বীর্য পাতলা হলদে। যদি মহিলার বীর্য পুরুষের বীর্যের আগে ও অধিকহারে পতিত হয় তাহলে বাচ্চাটি মামাদের রং ও গঠন ধারণ করবে। আর যদি পুরুষের বীর্য মহিলার বীর্যের আগে ও অধিকহারে পতিত হয় তাহলে বাচ্চাটি চাচাদের রং ও গঠন ধারণ করবে”।[236]

ঘুম থেকে জেগে পোশাকে আর্দ্রতা দেখতে পেলে:
কেউ ঘুম থেকে জেগে নিজ পোশাকে আর্দ্রতা দেখতে পেলে তা তিনের এক অবস্থা থেকে খালি হবে না। তা নিম্নরূপ:
১. সে নিশ্চিত যে, এ আর্দ্রতা বীর্যের।
এমতাবস্থায় তাকে গোসল করতে হবে। স্বপ্নদোষের কথা স্মরণে আসুক বা নাই আসুক।
যুবাইদ ইবন সাল্ত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«خَرَجْتُ مَعَ عُمَرَ بْنِ الْـخَطَّابِ رضي الله عنهما إِلَى الْـجُـرُفِ، فَنَظَرَ فَإِذَا هُوَ قَدِ احْتَلَمَ، وَصَلَّى، وَلَمْ يَغْتَسِلْ فَقَالَ: وَاللهِ مَا أُرَانِيْ إِلاَّ قَدِ احْتَلَمْتُ وَمَا شَعَرْتُ، وَصَلَّيْتُ، وَمَا اغْتَسَلْتُ، فَاغْتَسَلَ، وَغَسَـلَ مَا رَأَى فِيْ ثَوْبِهِ، وَنَضَحَ مَا لَمْ يَرَ، وَأَذَّنَ، وَأَقَامَ، ثُمَّ صَلَّى بَعْدَ اِرْتِفَاعِ الضُّحَى».
“উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর সাথে জুরুফের দিকে রওয়ানা হলাম। হঠাৎ তিনি পোশাকের দিকে লক্ষ্য করে বুঝতে পারলেন যে, স্বপ্নদোষ হওয়ার পরও তিনি গোসল না করে সালাত পড়েছেন। অতঃপর তিনি বললেন: আল্লাহর কসম! আমার স্বপ্নদোষ হয়েছে; অথচ আমার খবর নেই। এমতাবস্থায় আমি গোসল না করে সালাত পড়েছি। এরপর তিনি গোসল করেন এবং কাপড়ের দৃষ্ট নাপাকীটুকু ধুয়ে ফেলেন ও অদৃষ্ট নাপাকীটুকুর জন্য পানি ছিঁটিয়ে দেন। পরিশেষে তিনি দ্বিপ্রহরের পূর্ব মুহূর্তে আযান-ইকামাত দিয়ে উক্ত সালাত আদায় করেন”।[237]
২. সে নিশ্চিত যে, এ আর্দ্রতা বীর্যের নয়।
এমতাবস্থায় তাকে গোসল করতে হবে না। বরং দৃষ্ট নাপাকীটুকু ধুয়ে ফেলবে।
৩. সে নিশ্চিতভাবে জানে না যে, এ আর্দ্রতা বীর্যের না মযির।
এ প্রকার আবার দু’য়ের এক অবস্থা থেকে খালি নয়। তা নিম্নরূপঃ
ক. সে স্মরণ করতে পারছে যে, সে ঘুমানোর পূর্বে নিজ স্ত্রীর সাথে কোলাকুলি, চুমাচুমি ইত্যাদি করেছে অথবা সে সহবাসের চিন্তা ও কামোত্তেজনার সহিত স্ত্রীর দিকে তাকিয়েছে। এমতাবস্থায় তাকে গোসল করতে হবে না। বরং সে লিঙ্গ ও অন্ডকোষ ধুয়ে সালাতের অযুর ন্যায় অযু করবে। কারণ, সাধারণত এ সকল পরিস্থিতিতে মযিই বের হয়ে থাকে।
খ. সে স্মরণ করতে পারছে যে, সে ঘুমের পূর্বে উপরোক্ত আচরণ করে নি; যাতে মযি বের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমতাবস্থায় তাকে গোসল করতে হবে।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«سُئِلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم عَنِ الرَّجُلِ يَجِدُ الْبَلَلَ، وَلاَ يَذْكُرُ اِحْتِلاَمًا ؟ قَالَ: يَغْتَسِلُ، وَعَنِ الرَّجُلِ يَرَى أَنَّهُ قَدِ احْتَلَمَ، وَلاَ يَجِدُ الْبَلَلَ ؟ قَالَ: لاَ غُسْلَ عَلَيْهِ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, জনৈক ব্যক্তি নিজ পোশাকে আর্দ্রতা পেয়েছে। তবে স্বপ্নদোষের কথা তার স্মরণে নেই। সে কি করবে? তিনি বললেন: গোসল করবে। অন্য ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, তার স্বপ্নদোষ হয়েছে ঠিকই। তবে সে নিজ পোশাকে আর্দ্রতা দেখতে পায় নি। সে কি করবে? তিনি বললেন: তাকে গোসল করতে হবে না”।[238]

২. স্ত্রীসহবাস করলে:
স্ত্রীসঙ্গম করলে গোসল করতে হয়। বীর্যপাত হোক বা নাই হোক।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَإِن كُنتُمۡ جُنُبٗا فَٱطَّهَّرُواْ﴾ [المائ‍دة: ٦]
“তোমরা জুনুবী হলে ভালোভাবে গোসল করে নিবে”। [সূরা আল-মায়দাহ, আয়াত: ৬]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا جَلَسَ بَيْنَ شُعَبِهَا الأَرْبَعِ، وَمَسَّ الْخِتَانُ الْخِتَانَ، فَقَدْ وَجَبَ الْغُسْلُ»
“যখন কোনো পুরুষ স্ত্রীসঙ্গমের জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে নেয় এবং পুরুষের লিঙ্গাগ্র স্ত্রীর যোনিদ্বারকে অতিক্রম করে (বীর্যপাত হোক বা নাই হোক) তখন গোসল ওয়াজিব হয়ে যায়”।[239]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا جَلَسَ بَيْنَ شُعَبِهَا الأَرْبَعِ ثُمَّ جَهَدَهَا، فَقَدْ وَجَبَ الْغَسْلُ».
“যখন কোনো পুরুষ স্ত্রীসঙ্গমের জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে নেয়। অতঃপর রমণের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত করে দেয়। এমতাবস্থায় তার বীর্যপাত হোক বা নাই হোক তাকে অবশ্যই গোসল করতে হবে”।[240]

জানাবত (বীর্যপাত সংক্রান্ত অপবিত্রতা) বিষয়ক বিধান 

জুনুবী মহিলার কেশ সংক্রান্ত মাসআলা:
জানাবতের গোসলের সময় মহিলাদের (মজবুত করে বাঁধা) বেণী খুলতে হয় না।
উম্মু সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললাম: হে আল্লাহর রাসুল! আমি খুব মজবুত করে বেণী বেঁধে থাকি। জানাবতের গোসলের সময় তা খুলতে হবে কি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তদুত্তরে বললেন:
«لاَ، إِنَّمَا يَكْفِيْكِ أَنْ تَحْثِيَ عَلَىْ رَأْسِكِ ثَلاَثَ حَثَيَاتٍ، ثُمَّ تُفِيْضِيْنَ عَلَيْكِ الـْمَاءَ فَتَطْهُرِيْنَ».
“বেণী খুলতে হবে না। তোমার জন্য এটিই যথেষ্ট যে, মাথার উপর তিন কোষ পানি ঢেলে দিবে। অতঃপর পুরো শরীরে পানি প্রবাহিত করবে। তাতেই পবিত্র হয়ে যাবে। তবে ঋতুস্রাব থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য যে গোসল করা হয় তাতে বেণী খোলা মুস্তাহাব”।[241]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ঋতুশেষে গোসল করার সময় আদেশ করের।
«اُنْقُضِيْ شَعْرَكِ، وَاغْتَسِلِي»
“বেণী খুলে গোসল সেরে নাও”।[242]

জুনুবী ব্যক্তির সাথে মেলামেশা বা মোসাফাহা:
জুনুবী ব্যক্তি বাস্তবিকপক্ষে এমনভাবে নাপাক হয় না যে, তাকে ছোঁয়া যাবে না। শুধু এতটুকু যে, ইসলামী শরী‘আত তাকে বিধানগতভাবে নাপাক সাব্যস্ত করে গোসল করা ফরয করে দিয়েছে। সুতরাং তার সাথে উঠা-বসা, মেলামেশা, খাওয়া-পান করা, মোসাফাহা ইত্যাদি জায়েয।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«لَقِيَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم وَأَنَا جُنُبٌ، فَأَخَذَ بِيَدِيْ فَمَشَيْتُ مَعَهُ حَتَّى قَعَدَ فَانْسَلَلْتُ فَأَتَيْتُ الرَّحْلَ فَاغْتَسَلْتُ ثُمَّ جِئْتُ وَهُوَ قَاعِدٌ، فَقَالَ: أَيْنَ كُنْتَ يَا أَبَا هِرٍّ؟ فَقُلْتُ لَهُ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! لَقِيْتَنِيْ وَأَنَا جُنُبٌ، فَكَرِهْتُ أَنْ أُجَالِسَكَ حَتَّى أَغْتَسِلَ، فَقَالَ: سُبْحَانَ اللهِ يَا أَبَا هِرٍّ، إِنَّ الْـمُؤْمِنَ لاَ يَنْجُسُ».
“একদা জুনুবী অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়। তিনি আমার হাত ধরলে আমি তাঁর সাথে চলতে থাকি। অতঃপর তিনি এক জায়গায় বসলেন। ইত্যবসরে আমি চুপে চুপে ঘরে এসে গোসল সেরে তাঁর নিকট উপস্থিত হই। তিনি তখনো বসা ছিলেন। তিনি আমাকে বললেন: হে আবু হুরায়রা! তুমি কোথায় ছিলে? আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন; অথচ আমি জুনুবী। অতএব, গোসল করার পূর্বেই আপনার সাথে উঠাবসা করবো তা আমি পছন্দ করি নি। তিনি বললেন: সুবহানাল্লাহ্! (আশ্চর্য) মুমিন ব্যক্তি (বাস্তবিকপক্ষে) কখনো নাপাক হয় না”।[243]
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أَرْسَلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم إِلَىْ رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ، فَجَاءَ وَرَأْسُهُ يَقْطُرُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم لَعَلَّنَا أَعْجَلْنَاكَ، فَقَالَ: نَعَمْ، فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم إِذَا أُعْجِلْتَ أَوْ قُحِطْتَ فَعَلَيْكَ الْوَضُوْءَ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক আনসারীকে ডেকে পাঠালে সে দ্রুত গোসল সেরে তাঁর নিকট উপস্থিত হয়। তখনো তার মাথা থেকে পানি ঝরছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাকে বললেন: মনে হয় আমি তোমাকে তাড়াহুড়োয় ফেলে দিয়েছি। সে বললো: জী হ্যাঁ। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: যখন সঙ্গম সম্পন্ন অথবা বীর্যপাত না হয় তখন অযু করলেই চলবে গোসল করতে হবে না। তবে সালাতের জন্য অবশ্যই গোসল করতে হবে”।[244]
জুনুবী ব্যক্তির পানাহার, নিদ্রা ও পুনঃসহবাস:
জুনুবী ব্যক্তি লজ্জাস্থান ধৌত করে শুধু অযু সেরেই ঘুমুতে বা কোনো খাদ্য গ্রহণ করতে পারে।
একদা উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করেনঃ আমরা কেউ জুনুবী অবস্থায় ঘুমাতে পারবো কি? তিনি বললেন:
«نَعَمْ، إِذَا تَوَضَّأَ»
“হ্যাঁ, তবে অযু করে নিলে”।[245]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم إِذَا كَانَ جُنُبًا، فَأَرَادَ أَنْ يَأْكُلَ أَوْ يَنَامَ، تَوَضَّأَ وُضُوْءَهُ لِلصَّلاَةِ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুনুবী অবস্থায় যখন ঘুমুতে অথবা কিছু খেতে ইচ্ছে করতেন তখন সালাতের অযুর ন্যায় অযু করে নিতেন”।[246]
জুনুবী অবস্থায় আবারো সহবাস করতে চাইলে অযু করে নিতে হয়।
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا أَتَىْ أَحَدُكُمْ أَهْلَهُ، ثُمَّ أَرَادَ أَنْ يَعُوْدَ، فَلْيَتَوَضَّأْ».
“তোমাদের কেউ একবার স্ত্রীসহবাস করে আবারো করতে চাইলে তখন সে অযু করে নিবে”।[247]

৩. কোনো কাফির ব্যক্তি মুসলিম হলে। চাই সে আদতেই কাফির থেকে থাকুক অতঃপর মুসলিম হয়েছে অথবা ইসলাম গ্রহণ করার পর মুরতাদ (পুনরায় কাফির) হয়ে অতঃপর মুসলিম হয়েছে।
ক্বাইস ইবন ‘আসিম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم أُرِيْدُ الإِسْلاَمَ، فَأَمَرَنِيْ أَنْ أَغْتَسِلَ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ».
“আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ইসলাম গ্রহণের জন্য আসলে তিনি আমাকে বরই পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল করতে আদেশ করেন”।[248]
তেমনিভাবে যখন কোনো ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে নিজ অন্তরকে নিষ্কলুষ করে নিল তখন তার শরীরকেও গোসলের মাধ্যমে পবিত্র করে নিতে হবে।

৪. যুদ্ধক্ষেত্রের শহীদ ব্যতীত যে কোনো মুসলিম ইন্তেকাল করলে।
আব্দুল্লাহ ইবন ‘আববাস্ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«بَيْنَمَا رَجُلٌ وَاقِفٌ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم بِعَرَفَـةَ، إِذْ وَقَعَ مِنْ رَاحِلَتِهِ، فَوَقَصَتْهُ فَمَاتَ، فَذُكِرَ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم فَقَالَ: اِغْسِلُوْهُ بِمَاءٍ، وَ سِدْرٍ، وَكَفِّنُوْهُ فِيْ ثَوْبَيْنِ، وَلاَ تُحَنِّطُوْهُ، وَلاَ تُخَمِّرُوْا رَأْسَهُ، فَإِنَّ اللهَ يَبْعَثُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مُلَبِّيًا».
“একদা জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথেই হজ মৌসুমে আরাফায় অবস্থান করছিল। এমতাবস্থায় হঠাৎ সে উট থেকে পড়ে গেলে তার ঘাড় ভেঙ্গে যায়। কিছুক্ষণ পর সে মারা গেলে তার ব্যাপারটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কর্ণগোচরে আনা হলে তিনি বললেন: তাকে বরই পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল দাও। অতঃপর তাকে খোশবু লাগিয়ে ইহরামের কাপড় দু’টিতেই কাফন দিয়ে দাও। কিন্তু তার মাথা ঢেকে দিবে না। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা তাকে কিয়ামতের দিবসে তালবিয়্যাহ্ পড়াবস্থায়ই পুনরুত্থিত করবে”।[249]
উম্মে ‘আতিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«دَخَلَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم وَ نَحْنُ نَغْسِلُ اِبْنَتَهُ فَقَالَ: اِغْسِلْنَهَا ثَلاَثًا أَوْ خَمْسًا أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ إِنْ رَأَيْتُنَّ ذَلِكَ بِمَاءٍ وَ سِدْرٍ».
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট এসেছেন যখন আমরা তাঁর মেয়েকে গোসল দিচ্ছিলাম। অতঃপর তিনি বললেন: তোমরা ওকে বরই পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে তিন বার, পাঁচ বার অথবা যতবার প্রয়োজন গোসল দাও”।[250]

৫. মহিলাদের ঋতুস্রাব হলে। তবে গোসল বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়া পূর্ব শর্ত।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَيَسۡ‍َٔلُونَكَ عَنِ ٱلۡمَحِيضِۖ قُلۡ هُوَ أَذٗى فَٱعۡتَزِلُواْ ٱلنِّسَآءَ فِي ٱلۡمَحِيضِ وَلَا تَقۡرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ يَطۡهُرۡنَۖ فَإِذَا تَطَهَّرۡنَ فَأۡتُوهُنَّ مِنۡ حَيۡثُ أَمَرَكُمُ ٱللَّهُۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلتَّوَّٰبِينَ وَيُحِبُّ ٱلۡمُتَطَهِّرِينَ ٢٢٢﴾ [البقرة: ٢٢٢]
“তারা (সাহাবগণ) আপনাকে ঋতুস্রাব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে ; আপনি বলুনঃ তা হচ্ছে অশুচিতা। অতএব, তোমরা ঋতুকালে স্ত্রীদের নিকট যাবে না ও তাদের সাথে সহবাসে লিপ্ত হবে না যতক্ষণ না তারা সম্পূর্ণরূপে পবিত্র হয়ে যায়। তবে যখন তারা (গোসল করে) ঋতুস্রাব থেকে পবিত্র হয়ে যাবে তখনই তোমরা তাদের সাথে সম্মুখ পথে সহবাস করবে। নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাওবাকারী ও পবিত্রতা অন্বেষণকারীদের ভালোবাসেন”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২২২]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِيْ حُبَيْشٍ تُسْتَحَاضُ، فَسَأَلَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم فَقَالَ: ذَلِكَ عِرْقٌ وَلَيْسَتْ بِالْـحَيْضَةِ، فَإِذَا أَقْبَلَتِ الْـحَيْضَةُ فَدَعِي الصَّلاَةَ، وَإِذَا أَدْبَرَتْ فَاغْتَسِلِيْ وَصَلِّيْ».
“ফাতিমা বিনতে আবু হুবাইশ রাদিয়াল্লাহু আনহার ইস্তিহাযা হতো। তাই তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এ হচ্ছে রোগ যা কোনো নাড়ি বা শিরা থেকে বের হচ্ছে। ঋতুস্রাব নয়। তাই যখন ঋতুস্রাব শুরু হবে তখন সালাত বন্ধ রাখবে। আর যখন সাধারণ নিয়মানুযায়ী ঋতুস্রাব শেষ হয়ে যাবে তখন গোসল করে সালাত পড়বে।[251]

৬. নিফাস বা সন্তান প্রসবোত্তর স্রাব নির্গত হলে। তবে নিফাস থেকে গোসল শুদ্ধ হওয়ার জন্য তা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাওয়া পূর্ব শর্ত। নিফাস ঋতুস্রাবের ন্যায়। বরং তা ঋতুস্রাবই বটে। বাচ্চাটি মায়ের পেটে থাকাবস্থায় তার নাভিকূপের মধ্য দিয়ে তন্ত্রী যোগে এ ঋতুস্রাবই খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতো। তাই বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ঋতুস্রাবটুকু কোনো বিতরণক্ষেত্র না পাওয়ার দরুন যোনিপথে বের হয়ে আসছে। নিফাস সন্তান প্রসবের সাথে সাথে অথবা উহার পরপরই বের হয়। তেমনিভাবে তা সন্তান প্রসবের এক দু’ তিন দিন পূর্ব থেকেও প্রসব বেদনার সাথে বের হয়। শরী‘আতের পরিভাষায় ঋতুস্রাবকেও নিফাস বলা হয়।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم ، وَلاَ نَرَى إِلاَّ الْـحَجَّ، حَتَّى إِذَا كُنَّا بِسَرِفَ أَوْ قَرِيْبًا مِنْهَا حِضْتُ فَدَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم، وَ أَنَا أَبْكِيْ فَقَالَ: مَا لَكِ أَنُفِسْتِ؟ قُلْتُ: نَعَمْ، قَالَ: إِنَّ هَذَا شَيْءٌ كَتَبَهُ اللهُ عَلَى بَنَاتِ آدَمَ، فَاقْضِيْ مَا يَقْضِي الْـحَاجُّ غَيْرَ أَنْ لاَ تَطُوْفِيْ بِالْبَيْتِ حَتَّى تَغْتَسِلِيْ».
“আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে হজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। ইতোমধ্যে আমরা সারিফ নামক স্থানে পৌঁছুলে আমার ঋতুস্রাব শুরু হয়ে যায়। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে কাঁদতে দেখে বললেন: ক হলো, তোমার কি নিফাস্ তথা ঋতুস্রাব শুরু হয়েছে? আমি বললামঃ জি হ্যাঁ! তিনি বললেন: এ ব্যাপারটি পূর্ব থেকেই আল্লাহ তা‘আলা মহিলাদের জন্য অবধারিত করে রেখেছেন। অতএব, তুমি হাজী সাহেবানরা যাই করে তাই করবে। তবে তুমি পবিত্র হয়ে গোসলের পূর্বে তাওয়াফ করবে না”।[252]
উক্ত হাদীসে ঋতুস্রাবকে নিফাস্ বলা হয়েছে। অতএব, বুঝা গেলো, উভয়ের বিধান একই।
সমস্ত আলিম সম্প্রদায় নিফাসের পর গোসল করা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে একমত।

জুনুবী অবস্থায় যা করা নিষেধ

জুনুবী ব্যক্তি পাঁচটি কাজ করতে পারবে না যতক্ষণ না সে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র হয়ে যায়। সে কাজগুলো নিম্নরূপ:
১. সালাত পড়া:
জুনুবী অবস্থায় সালাত পড়া জায়েয নেই।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَقۡرَبُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنتُمۡ سُكَٰرَىٰ حَتَّىٰ تَعۡلَمُواْ مَا تَقُولُونَ وَلَا جُنُبًا إِلَّا عَابِرِي سَبِيلٍ حَتَّىٰ تَغۡتَسِلُواْ﴾ [النساء: ٤٣]
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত বা জুনুবী অবস্থায় সালাতের নিকটবর্তী হবে না যতক্ষণ না তোমরা বোধ শক্তি ফিরে পাও এবং গোসল কর। তবে পথ অতিক্রমের উদ্দেশ্যে তোমরা মসজিদের উপর দিয়ে চলতে পার”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪৩] 
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لاَ تُقْبَلُ صَلاَةُ مَنْ أَحْدَثَ حَتَّى يَتَوَضَّأَ».
“অযু ভঙ্গকারী কোনো ব্যক্তির সালাত আদায় হবে না যতক্ষণ না সে অযু করে”।[253]

২. কা‘বা শরীফ তাওয়াফ করা:
জুনুবী অবস্থায় কা‘বা শরীফ তাওয়াফ করা নাজায়েয।
আব্দুল্লাহ ইবন ‘আববাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«الطَّوَافُ حَوْلَ الْبَيْتِ مِثْلُ الصَّلاَةِ، إِلاَّ أَنَّكُمْ تَتَكَلَّمُوْنَ فِيْهِ، فَمَنْ تَكَلَّمَ فِيْهِ فَلاَ يَتَكَلَّمَنَّ إِلاَّ بِخَيْرٍ».
“কা‘বা শরীফ তাওয়াফ করা সালাতের ন্যায়। তবে তাতে কথা বলা যায়। অতএব, তোমরা কথা বলতে চাইলে কল্যাণকর কথাই বলবে”।[254]

৩. করআন মাজীদ স্পর্শ করা:
জুনুবী অবস্থায় কুরআন মাজীদ স্পর্শ করা নাজায়েয।
‘আমর ইবন হাযম, হাকীম ইবন হিযাম ও আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকে বর্ণিত, তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لاَ يَمَسُّ الْقُرآنَ إِلاَّ طَاهِرٌ».
“পবিত্র ব্যক্তি ছাড়া তোমাদের কেউ কুরআন স্পর্শ করবে না”।[255]

৪. কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করা:
জুনুবী অবস্থায় কুরআন মাজীদ পড়া যাবে না।
‘আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم يُقْرِئُنَا الْقُرْآنَ عَلَى كُلِّ حَالٍ مَا لَمْ يَكُنْ جُنُبًا، وَفِيْ رِوَايَةٍ: كَانَ يَخْرُجُ مِنَ الْـخَلاَءِ فَيُقْرِئُنَا الْقُرْآنَ، وَيَأْكُـلُ مَعَنَا اللَّحْمَ، وَ لَمْ يَكُنْ يَحْجُبُهُ أَوْ قَالَ: يَحْجِزُهُ عَنِ الْقُرْآنِ شَيْءٌ سِوَى الْـجَنَابَةِ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুনুবী অবস্থা ছাড়া যে কোনো সময় আমাদেরকে কুরআন পড়াতেন। অন্য বর্ণনায় রয়েছেঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শৌচাগার সেরে আমাদেরকে কুরআন পড়াতেন ও গোশত খেতেন। অর্থাৎ জুনুবী অবস্থা ছাড়া তিনি কখনো আমাদেরকে কুরআন পড়ানো বন্ধ করতেন না”।[256]
‘আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে আরো বর্ণিত তিনি অযু শেষে বললেন: এভাবেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অযু করেছেন। অতঃপর তিনি সামান্যটুকু কুরআন পাঠ করলেন। এরপর বললেন:
«هَذَا لِمَنْ لَيْسَ بِجُنُبٍ، فَأَمَّا الْـجُنُبُ فَلاَ، وَلاَ آيَةً».
“জুনুবী ব্যক্তি ছাড়া সবাই কুরআন পড়তে পারবে। তবে জুনুবী ব্যক্তি একেবারেই পড়তে পারবে না। এমনকি একটি আয়াতও নয়”[257]

৫. মসজিদে অবস্থান করা:
জুনুবী অবস্থায় মসজিদে অবস্থান করা না জায়েয।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَقۡرَبُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنتُمۡ سُكَٰرَىٰ حَتَّىٰ تَعۡلَمُواْ مَا تَقُولُونَ وَلَا جُنُبًا إِلَّا عَابِرِي سَبِيلٍ حَتَّىٰ تَغۡتَسِلُواْ﴾ [النساء: ٤٣]
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত বা জুনুবী অবস্থায় সালাতের নিকটবর্তী হবে না যতক্ষণ না তোমরা বোধ শক্তি ফিরে পাও এবং গোসল কর। তবে পথ অতিক্রমের উদ্দেশ্যে তোমরা মসজিদের উপর দিয়ে চলতে পার”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪৩]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«وَجِّهُوْا هَذِهِ الْبُيُوْتَ عَنِ الـْمَسْجِدِ ؛ فَإِنِّيْ لاَ أُحِلُّ الـْمَسْجِدَ لِحَائِضٍ وَلاَ جُنُبٍ».
“তোমরা মসজিদমুখী ঘরের দরজাগুলো বন্ধ করে দাও। কারণ, ঋতুবতী বা জুনুবী ব্যক্তির জন্য মসজিদে অবস্থান করা জায়েয নয়”[258]
হাদীসটি সনদের দিক দিয়ে দুর্বল। তবে উহার শেষাংশের সমর্থন উক্ত আয়াতে রয়েছে।
তবে জুনুবী ব্যক্তি মসজিদের উপর দিয়ে পথ অতিক্রম করতে পারে যা পূর্বের আয়াতে উল্লখ হয়েছে।
ঋতুবতী এবং নিফাসী মহিলাও মসজিদের উপর দিয়ে পথ অতিক্রম করতে পারে। যদি মসজিদ নাপাক হওয়ার ভয় না থাকে।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«قَالَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم : نَاوِلِيْنِي الْـخُمْرَةَ مِنَ الْـمَسْجِدِ، قَالَتْ فَقُلْتُ: إِنِّيْ حَائِضٌ فَقَالَ: تَنَاوَلِيْهَا فَإِنَّ الْـحَيْضَةَ لَيْسَتْ فِيْ يَدِكِ».
“আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: মসজিদ থেকে সালাতের বিছানাটি দাও দেখি। আমি বললাম: আমি ঋতুবতী। তিনি বললেন: দাও, ঋতুস্রাব তো আর তোমার হাতে লাগেনি”।[259]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«بَيْنَمَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم فِي الْـمَسْجِدِ فَقَالَ: يَا عَائِشَةُ! نَاوِلِيْنِي الثَّوْبَ فَقَالَتْ: إِنِّيْ حَائِضٌ فَقَالَ: إِنَّ حَيْضَتَكِ لَيْسَتْ فِيْ يَدِكِ».
“একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে অবস্থান করছিলেন। এমতাবস্থায় তিনি বললেন: হে ‘আয়েশা! (মসজিদ থেকে) আমাকে কাপড়টি দাও দেখি। ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন: আমি ঋতুবতী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: ঋতুস্রাব তো আর তোমার হাতে লাগে নি”।[260]
মাইমূনা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم يَدْخُلُ عَلَى إِحْدَانَا، وَهِيَ حَائِضٌ فَيَضَعُ رَأْسَهُ فِيْ حِجْرِهَا فَيَقْرَأُ الْقُرْآنَ، ثُمَّ تَقُوْمُ إِحْدَانَا بِخُمْرَتِهِ فَتَضَعُهَا فِي الْـمَسْجِدِ وَهِيَ حَائِضٌ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কোনো একজন ঋতুবতী থাকাবস্থায় তার নিকট এসে কোলে মাথা রেখে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। তেমনিভাবে আমাদের কোনো একজন ঋতুবতী থাকাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাতের বিছানাটি মসজিদে রেখে আসতো”।[261]

গোসলের শর্তসমূহ:
গোসলের শর্ত আটটি, তা নিম্নরূপঃ
১. নিয়্যাত করতে হবে। অতএব, নিয়্যাত ব্যতীত গোসল শুদ্ধ হবে না।
২. গোসলকারী মুসলিম হতে হবে। অতএব, কাফিরের গোসল শুদ্ধ হবে না যতক্ষণ না সে মুসলিম হয়।
৩. গোসলকারী জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে। অতএব, পাগল ও মাতালের গোসল শুদ্ধ হবে না যতক্ষণ না তার চেতনা ফিরে আসে।
৪. গোসলকারী ভালোমন্দ ভেদাভেদ জ্ঞান রাখে এমন হতে হবে। অতএব, বাচ্চাদের গোসল শরী‘আতের দৃষ্টিতে ধর্তব্য নয়। তাদের গোসল করা বা না করা সমান।
৫. গোসল শেষ হওয়া পর্যন্ত পবিত্রতার্জনের নিয়্যাত স্থির থাকতে হবে। অতএব, গোসল চলাকালীন নিয়্যাত ভঙ্গ করলে গোসল শুদ্ধ হবে না।
৬. গোসল চলাকালীন গোসল ওয়াজিব হয় এমন কোনো কারণ যেন পাওয়া না যায়। তা না হলে গোসল তৎক্ষণাৎই নষ্ট হয়ে যাবে।
৭. গোসলের পানি পবিত্র ও জায়েয পন্থায় সংগৃহীত হতে হবে।
৮. গোসলের অঙ্গগুলোতে পানি পৌঁছুতে বাধা প্রদান করে এমন বস্তু অপসারণ করতে হবে।


রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে গোসল করতেন

পরিপূর্ণ গোসলের বর্ণনা নিম্নরূপ:
১. প্রথমে গোসলের নিয়্যাত করতেন।
উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:
«إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنيِّاَّتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيْبُهَا أَوْ إِلَى اِمْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا، فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ».
“প্রতিটি কর্ম নিয়্যাত নির্ভরশীল। যেমন নিয়্যাত তেমনই ফল। যেমন, কেউ যদি দুনিয়ার্জন বা কোনো রমণীকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে হিজরত (নিজ আবাসভূমি ত্যাগ) করে তাহলে সে তাই পাবে যে জন্য সে হিজরত করেছে।[262]
২.বিসমিল্লাহ” বলে গোসল শুরু করতেন। যেমনিভাবে তা বলে অযু শুরু করতেন।
৩. উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত তিন বার ধুয়ে নিতেন।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ النّبِيُّ  صلى الله عليه وسلم إِذَا اغْتَسَلَ مِنَ الْـجَنَابَةِ، بَدَأَ فَغَسَلَ يَدَيْهِ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: غَسَلَ كَفَّيْهِ ثَلاَثًا ثُمَّ أَفْرَغَ بِيَمِيْنِهِ عَلَى شِمَالِهِ، فَغَسَلَ فَرْجَهُ ثُمَّ يَتَوَضَّأُ كَمَا يَتَوَضَّأُ لِلصَّلاَةِ، ثُمَّ يُدْخِلُ أَصَابِعَهُ فِي الْـمَاءِ فَيُخَلِّلُ بِهَا أُصُوْلَ شَعْرِهِ، ثُمَّ يَصُبُّ عَلَى رَأْسِهِ ثَلاَثَ غُرَفٍ بِيَدَيْهِ، ثُمَّ يُفِيْضُ الْـمَاءَ عَلَى جِلْدِهِ كُلِّهِ».
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানাবাতের গোসল করতেন তখন প্রথমে উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত তিন বার ধুয়ে নিতেন। অতঃপর বাম হাতে পানি ঢেলে লজ্জাস্থান পরিষ্কার করতেন। এরপর সালাতের অযুর ন্যায় অযু করতেন। অতঃপর আঙ্গুলসমূহ পানিতে ভিজিয়ে কেশমূল খেলাল করতেন। অনন্তর মাথায় তিন চিল্লু পানি ঢালতেন। পরিশেষে পুরো শরীরে পানি প্রবাহিত করতেন”।[263]
মায়মূনা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أَدْنَيْتُ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم غُسْلَهُ مِنَ الْـجَنَابَةِ، فَغَسَلَ كَفَّيْهِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا، ثُمَّ أَدْخَلَ يَدَهُ فِي الإِنَاءِ، ثُمَّ أَفْرَغَ بِهِ عَلَى فَرْجِهِ وَغَسَلَهُ بِشِمَالِـهِ، ثُمَّ ضَرَبَ بِشِمَالِهِ الأَرْضَ فَدَلَكَهَا دَلْكًا شَدِيْدًا، ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوْءَهُ لِلصَّلاَةِ غَيْرَ رِجْلَيْهِ، ثُمَّ أَفْرَغَ عَلَى رَأْسِهِ ثَلاَثَ حَفَنَاتٍ مِلْءَ كَفِّهِ، ثُمَّ غَسَلَ سَائِرَ جَسَدِهِ، ثُمَّ تَنَحَّى عَنْ مَقَامِهِ ذَلِكَ، فَغَسَلَ رِجْلَيْهِ ثُمَّ أَتَيْتُهُ بِالْمِنْدِيْلِ فَرَدَّهُ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: وَجَعَلَ يَقُوْلُ: بِالـْمَاءِ هَكَذَا يَعْنِيْ يَنْفُضُهُ».
“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানাবাতের গোসলের জন্য পানি দিলে তিনি নিজ হস্তযুগল দু’ বা তিন বার ধৌত করেন। অতঃপর পাত্র থেকে পানি নিয়ে বাম হাত দিয়ে নিজ লজ্জাস্থান পরিষ্কার করেন। এরপর ভূমিতে হস্তস্থাপন করে তা ভালোভাবে ঘষে নেন। অতঃপর সালাতের অযুর ন্যায় অযু করেন। তবে পদযুগল ধোন নি। অনন্তর তিনি নিজ মাথায় তিন চিল্লু পানি ঢেলে দেন এবং পুরো শরীর ভালোভাবে ধৌত করেন। অতঃপর পূর্বস্থান থেকে একটু সরে গিয়ে পদযুগল ধুয়ে ফেলেন। পরিশেষে আমি তাঁর নিকট তোয়ালে নিয়ে আসলে তিনি তা গ্রহণ করেন নি; বরং হাত দিয়ে পানিটুকু ঝেড়ে ফেলেন”[264]
৪. বাম হাতে পানি ঢেলে নিজ লজ্জাস্থান পরিষ্কার করতেন।
মায়মূনাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أَفْرَغَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم عَلَى شِمَالِهِ فَغَسَلَ مَذَاكِيْرَهُ».
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা বাম হাতে পানি ঢেলে নিজ লজ্জাস্থান ধৌত করেন”।[265]
৫. বাম হাতটি পবিত্র মাটি দিয়ে বা দেওয়ালে ঘষে নিতেন অথবা পানি দ্বারা ভালোভাবে ধুয়ে নিতেন ।
মায়মূনা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أَفْرَغَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم بِيَمِيْنِهِ عَلَى شِمَالِهِ فَغَسَلَ فَرْجَهُ، ثُمَّ دَلَكَ يَدَهُ بِالأَرْضِ أَوْ بِالْـحَائِطِ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা বাম হাতে পানি ঢেলে নিজ লজ্জাস্থান ধৌত করেন। অতঃপর হাত খানা ভূমিতে বা দেওয়ালে ঘষে নেন”।[266]
৬. সালাতের অযুর ন্যায় ভালোভাবে পূর্ণাঙ্গরূপে অযু করতেন অথবা অযুর সময় পদযুগল না ধুয়ে গোসল শেষে তা ধৌত করতেন। তবে অযু করার সময় মাথা মাসাহ করেন নি।
মায়মূনা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«غَسَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا، ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ، وَغَسَلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ وَغَسَلَ رَأْسَهُ ثَلاَثًا، ثُمَّ أَفْرَغَ عَلَى جَسَدِهِ، ثُمَّ تَنَحَّى مِنْ مَقَامِهِ فَغَسَلَ قَدَمَيْهِ».
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (গোসল করার সময়) উভয় হাত দু’ বা তিন বার ধুয়েছেন। অতঃপর কুলি করেছেন। নাকে পানি দিয়েছেন। মুখ মণ্ডল ও হস্তদ্বয় ধৌত করেছেন। মাথা তিন বার ধুয়েছেন। পুরো শরীরে পানি প্রবাহিত করেছেন। অতঃপর পূর্বস্থান ছেড়ে অন্যত্র সরে গিয়ে পদযুগল ধুয়েছেন”।[267]
‘আয়েশা ও আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তারা বলেন,
«كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم يَغْسِلُ يَدَيْهِ ثَلاَثًا، وَيُمَضْمِضُ، وَيَسْتَنْشِقُ، وَيَغْسِلُ وَجْهَهُ وَذِرَاعَيْهِ ثَلاَثًا ثَلاَثًا حَتَّى إِذَا بَلَغَ رَأْسَهُ لَمْ يَمْسَحْ، وَأَفْرَغَ عَلَيْهِ الْـمَاءَ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (গোসল করার সময়) উভয় হাত তিনবার ধুয়ে নিতেন। তিনবার কুলি করতেন ও নাকে পানি দিতেন। তিনবার মুখ মণ্ডল ও হস্তযুগল ধৌত করতেন। তবে মাথা মাসাহ না করে তৎপরিবর্তে তিনি মাথায় পানি ঢেলে দিতেন”।[268]
৭. পানি দ্বারা হাতের আঙ্গুলগুলো ভিজিয়ে তা দিয়ে চুল খেলাল করতেন। যাতে কেশমূল তথা চর্ম পর্যন্ত পানি পৌঁছে যায়। অতঃপর দু’হাতে তিন চিল্লু পানি নিয়ে তা মাথায় ঢেলে দিতেন। প্রথমে মাথার ডান ভাগ অতঃপর মাথার বাম অংশ এবং পরিশেষে মাথার মধ্য ভাগে পানি প্রবাহিত করতেন।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم إِذَا اغْتَسَـلَ مِنَ الْجَنَابَةِ، دَعَا بِشَيْءٍ نَحْوَ الْحِلاَبِ، فَأَخَذَ بِكَفِّهِ، بَدَأَ بِشِقِّ رَأْسِهِ الأَيْمَنِ، ثُمَّ الأَيْسَرِ ثُمَّ أَخَذَ بِكَفَّيْهِ فَقَالَ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ».
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানাবাতের গোসলের ইচ্ছে করতেন তখন দুগ্ধদোহনপাত্রের ন্যায় এক পাত্র পানি আনতে বলতেন। এরপর তিনি হাতে পানি নিয়ে প্রথমে মাথার ডান পার্শ্বে অতঃপর বাম পার্শ্বে প্রবাহিত করতেন। পুনরায় দু’ হাতে পানি নিয়ে তা মাথায় ঢেলে দিতেন।[269]
জানাবাতের গোসলের সময় মহিলাদের মাথার বেণী খুলতে হবে না।
উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«قُلْتُ: يَارَسُوْلَ اللهِ! إِنِّيْ اِمْرَأَةٌ أَشُدُّ ضَفْرَ رَأْسِيْ فَأَنْقُضُهُ لِغُسْـلِ الْـجَنَابَةِ؟، وَفِيْ رِوَايَةٍ: فَأَنْقُضُهُ لِلْحَيْضَةِ وَالْـجَنَابَةِ؟ قَالَ: لاَ، إِنَّمَا يَكْفِيْكِ أَنْ تَحْثِيَ عَلَى رَأْسِكِ ثَلاَثَ حَثَيَاتٍ، ثُمَّ تُفِيْضِيْنَ عَلَيْكِ الْـمَاءَ فَتَطْهُرِيْنَ».
“আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল! আমি ভালোভাবে মাথায় বেণী বেঁধে থাকি। তা জানাবাতের গোসলের সময় খুলতে হবে কি? অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তা জানাবাত ও ঋতুস্রাবের গোসলের সময় খুলতে হবে কি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: বেণী খুলতে হবে না। তোমার জন্য যথেষ্ট এই যে, তুমি তোমার মাথায় তিন চিল্লু পানি ঢেলে দিবে। পুনরায় পুরো শরীরে পানি প্রবাহিত করবে। তাতেই তুমি পবিত্র হয়ে যাবে। তবে ঋতুস্রাব পরবর্তী গোসলের সময় বেণী খোলা মুস্তাহাব”।[270]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ঋতুশেষে গোসল করার সময় আদেশ করেন:
«اُنْقُضِيْ شَعْرَكِ، وَاغْتَسِلِيْ»
“(হে আয়েশা!) তুমি বেণী খুলে গোসল সেরে নাও”।[271]
৮. পুরো শরীরে পানি প্রবাহিত করতেন। প্রথমে ডান পার্শ্বে অতঃপর বাম পার্শ্বে প্রবাহিত করতেন।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم يُعْجِبُهُ التَّيَمُّنُ فِيْ تَنَعُّلِهِ وَتَرَجُّلِهِ وَطُهُوْرِهِ وَفِيْ شَأْنِهِ كُلِّهِ».
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্ব কাজই ডান দিক থেকে শুরু করা পছন্দ করতেন। এমনকি জুতা পরা, মাথা আঁচড়ানো, পবিত্রতার্জন তথা সর্ব ব্যাপারই”।
বিশেষকরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বগল, কুঁচকি ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ভাঁজসমূহ ভালোভাবে ধুয়ে নিতেন।[272]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم إِذَا أَرَادَ أَنْ يَّغْتَسِلَ مِـنَ الْـجَنَابَةِ بَدَأَ بِكَفَّيْهِ فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ غَسَلَ مَرَافِغَهُ، وَأَفَاضَ عَلَيْهِ الْـمَاءَ، فَإِذَا أَنْقَاهُمَا أَهْوَى بِهِمَا إِلَى حَائِطٍ، ثُمَّ يَسْتَقْبِلُ الْوُضُوْءَ، وَيُفِيْضُ الـْمَاءَ عَلَى رَأْسِهِ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাবাতের গোসল করার ইচ্ছে করলে প্রথমে দু’হাত ধুয়ে নিতেন। অতঃপর পানি ঢেলে বগল ও কুঁচকি ধৌত করতেন। এরপর উভয় হাত পরিষ্কার করে দেওয়ালে ঘঁষে নিতেন। অনন্তর অযু করে মাথায় পানি ঢালতেন”।[273]
ঘষা মলার প্রয়োজন হলে তা করে নিবে।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আস্মা রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঋতুস্রাব পরবর্তী গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,
«تَأْخُذُ إِحْدَاكُنَّ مَاءَهَا وَسِدْرَتَهَا فَتَطَهَّرُ، فَتُحْسِنُ الطُّهُوْرَ، ثُمَّ تَصُبُّ عَلَى رأْسِهَا فَتَدْلُكُهُ دَلْكًا شَدِيْدًا».
“বরই পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে খুব ভালোভাবে পবিত্রতার্জন করবে। অতঃপর মাথায় পানি ঢেলে খুব ভালোভাবে মলবে”।[274]
৯. পূর্বের জায়গা ছেড়ে একটু দূরে গিয়ে উভয় পা ধুয়ে নিতেন। তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোসল শেষে তোয়ালে দিয়ে শরীর শুকিয়ে নিতেন না। এ সংক্রান্ত হাদীস ইতোঃপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।

খোলা জায়গায় গোসল করা নিষেধ:
খোলামেলা জায়গায় গোসল করা অনুচিত, বরং পর্দার ভেতরে গোসল করবে।
উম্মে হানী রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ذَهَبْتُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم عَامَ الْفَتْحِ، فَوَجَدْتُهُ يَغْتَسِلُ، وَفَاطِمَةُ تَسْتُرُهُ».
“আমি মক্কা বিজয়ের বছর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাক্ষাতে গিয়েছিলাম। তখন তিনি গোসল করছিলেন এবং ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহা তাঁকে পর্দা দিয়ে আড়াল করে রেখেছিলেন।”[275]
মায়মূনা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«سَتَرْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَغْتَسِلُ مِنَ الْـجَنَابَةِ».
“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পর্দা দিয়ে ঢেকে রেখেছি। এমতাবস্থায় তিনি জানাবাতের গোসল করেছেন”।[276]

গোসলের অযু দিয়েই সালাত পড়া যায়:
গোসলের অযু দিয়ে সালাত পড়া, কুরআন তিলাওয়াত করা ইত্যাদি সম্ভব। এ জন্য নতুন অযু করতে হবে না।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم يَغْتَسِلُ، وَيُصَلِّيْ الرَّكْعَتَيْنِ، وَصَلاَةَ الْغَدَاةِ، وَلاَ أَرَاهُ يُحْدِثُ وُضُوْءًا بَعْدَ الْغُسْلِ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোসল সেরে দু’ রাকআত সুন্নাত ও ফজরের ফরয সালাত পড়তেন। কিন্তু তিনি গোসলের পর নতুন অযু করতেন না”।[277]

যখন গোসল করা মুস্তাহাব

কিছু কিছু কারণ ও সময়ে গোসল করা মুস্তাহাব। তা নিম্নরূপ:
১. জুমুআর দিন গোসল করা:
জুমুআর দিন গোসল করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত।
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«غُسْلُ يَوْمِ الْـجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ
“জুমুআর দিন গোসল করা প্রত্যেক সাবালকের উপর ওয়াজিব”।[278]
আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا جَاءَ أَحَدُكُمُ الْـجُمُعَةَ فَلْيَغْتَسِلْ».
“তোমাদের কেউ জুমুআ পড়ার ইচ্ছে করলে সে যেন গোসল করে নেয়”।[279]
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«الْغُسْلُ يَوْمَ الْـجُمُعَةِ واجبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ، وَأَنْ يَّسْتَنَّ، وَأَنْ يَّمَسَّ طِيْبًا إِنْ وَجَدَ».
“জুমুআর দিন গোসল করা প্রত্যেক সাবালকের পর ওয়াজিব। সম্ভব হলে মিসওয়াক ও খোশবু গ্রহণ করবে”।[280]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন,
«حَقٌّ لِلَّه تَعَالَى عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ أَنْ يَّغْتَسِلَ فِيْ كُلِّ سَبْعَةِ أَيَّامٍ يَوْمًا، يَغْسِلُ فِيْهِ رَأْسَهُ وَجَسَدَهُ».
“প্রত্যেক মুসলিপর আল্লাহর অধিকার এই যে, সে প্রতি সপ্তাহে একদিন গোসল করবে। তখন সে নিজ মাথা ও পুরো শরীর ধৌত করবে”।[281]
উক্ত হাদীসগুলো থেকে জুমুআর দিন গোসল ওয়াজিব হওয়া বুঝা যাচ্ছে এবং তা ইব্নুল জাওযী, ইবন হায্ম্ ও ইমাম শাওকানীর নিজস্ব মত। তবে এর বিপরীত হাদীসগুলোর প্রতি লক্ষ্য করলে জুমুআর দিন গোসল করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত হিসেবেই প্রমাণিত হয়।
সামুরা এবং আনাস  রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ تَوَضَّأَ يَوْمَ الْـجُمُعَةِ فَبِهَا وَنِعْمَتْ، وَمَنِ اغْتَسَلَ فَالْغُسْلُ أَفْضَلُ».
“জুমুআর দিন অযু করা যথেষ্ট এবং ভালো কাজ। তবে গোসল করা আরো ভালো”।[282]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوْءَ ثُمَّ أَتَى الْـجُمُعَةَ فَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْـجُمُعَةِ وَزِيَادَةُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ، وَمَنْ مَسَّ الْـحَصَى فَقَدْ لَغَا».
“যে ব্যক্তি ভালোভাবে অযু করে জুমু‘আয় উপস্থিত হয়। অতঃপর নীরবে খুতবা শ্রবণ করে আল্লাহ তা‘আলা গত জুমু‘আ থেকে এ জুমু‘আ পর্যন্ত এবং বাড়তি আরো তিন দিনের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি কঙ্কর স্পর্শ করল সে যেন অযথা কর্মে লিপ্ত হল”।[283]
জুমুআর দিন গোসল করা ওয়াজিব না হলেও তাতে অনেক ফযীলত রয়েছে।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنِ اغْتَسَلَ ثُمَّ أَتَى الْـجُمُعَةَ فَصَلَّى مَا قُدِّرَ لَهُ ثُمَّ أَنْصَتَ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ خُطْبَتِهِ، ثُمَّ يُصَلِّيْ مَعَهُ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْـجُمُعَةِ الأُخْرَى وَفَضْلُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ».
“যে ব্যক্তি গোসল করে জুমুআ উপস্থিত হয়েছে। অতঃপর যতটুকু সম্ভব সালাত পড়ে খুৎবা শেষ হওয়া পর্যন্ত নিশ্চুপ থেকেছে। এরপর ইমাম সাহেবের সাথে সালাত পড়েছে। আল্লাহ তা‘আলা তার এ জুমু‘আ থেকে অন্য জুমু‘আ পর্যন্ত এবং আরো বাড়তি তিন দিনের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন”।[284]
আবু হুরারা ও আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الـْجُمُعَةِ وَلَبِسَ مِنْ أَحْسَنِ ثِيَابِهِ وَمَسَّ مِنْ طِيْبٍ إِنْ كَانَ عِنْدَهُ - ثُمَّ أَتَى الـْجُمُعَةَ، فَلَمْ يَتَخَطَّ أَعْنَاقَ النَّاسِ، ثُمَّ صَلَّى مَا كَتَبَ اللهُ لَهُ، ثُمَّ أَنْصَتَ إِذَا خَرَجَ إِمَامُهُ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ صَلاَتِهِ، كَانَتْ كَفَّارَةً لِمَا بَيْنَهَا وَبَيْنَ جُمُعَتِهِ الَّتِيْ قَبْلَهَا وَزِيَادَةُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ».
“যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন গোসল করে, সুন্দর পোষাক-পরিচ্ছদ পরে এবং খোশবু থাকলে তা ব্যবহার করে জুমু‘আয় উপস্থিত হয়েছে। অতঃপর সে মানুষের ঘাড় মাড়িয়ে সামনে যেতে চায় নি এবং যতটুকু সম্ভব নফল সালাত পড়েছে। অনন্তর ইমাম সাহেব মিম্বারে উঠার পর হতে সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত নিশ্চুপ থেকেছে। তার এ কর্মকলাপ পূর্ববর্তী জুমু‘আ থেকে এ জুমু‘আ পর্যন্ত এবং বাড়তি আরো তিন দিনের গুনাহ মোচনের জন্য যথেষ্ট হবে”।[285]
আউস ইবন আউস সাক্বাফী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:
«مَنْ غَسَّلَ يَوْمَ الْـجُمُعَةِ وَاغْتَسَلَ، ثُمَّ بَكَّرَ وَابْتَـكَرَ، وَمَشَى وَلَمْ يَرْكَبْ، وَدَنَا مِنَ الإِمَامِ فَاسْتَمَعَ وَلَمْ يَلْغُ ؛ كَانَ لَهُ بِكُلِّ خُطْوَةٍ عَمَلُ سَنَةٍ، أَجْرُ صِيَامِهَا وَقِيَامِهَا».
“যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভালোভাবে ধৌত করে গোসল করেছে। অতঃপর খুব সকাল-সকাল ঘর থেকে বের হয়ে পায়ে হেঁটে মসজিদে উপস্থিত হয়েছে। এরপর ইমামের নিকটবর্তী হয়ে অনর্থ কর্মে মগ্ন না হয়ে সর্বান্তঃকরণে খুতবা শুনেছে, তার প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা এক বছর যাবৎ সালাত-সাওম পালনের সাওয়াব দিবেন”।[286]
২. হজ বা উমরার ইহরামের জন্য গোসল করা:
হজ বা উমরার ইহরামের জন্য গোসল করা মুস্তাহাব।
যায়েদ ইবন সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم  تَجَرَّدَ لإِهْلاَلِهِ، وَاغْتَسَلَ».
“আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইহরাম বাঁধার জন্য জামা-কাপড় খুলে গোসল করতে দেখেছি”।[287]
৩. মক্কায় প্রবেশের পূর্বে গোসল করা:
মক্কায় প্রবেশের পূর্বে গোসল করা মুস্তাহাব। নাফি’ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ عَبْدُ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا - إِذَا دَخَلَ أَدْنَى الـْحَـرَمِ أَمْسَكَ عَنِ التَّلْبِيَةِ، ثُمَّ يَبِيْتُ بِذِيْ طُوًى، ثُمَّ يُصَلِّيْ بِهِ الصُّبْـحَ وَيَغْتَسِلُ، وَيُحَدِّثُ أَنَّ نَبِيَّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم كَانَ يَفْعَلُ ذَلِكَ».
“আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা হারাম শরীফের নিকটবর্তী হলে তাল্বিয়্যা পড়া বন্ধ করে যু-ত্বুয়া নামক স্থানে রাত্রিযাপন করতেন। অতঃপর ভোরের সালাত পড়ে সেখানে গোসল করতেন এবং বলতেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবেই করতেন”।[288]
৪. প্রতিবার স্ত্রীসঙ্গমের জন্য গোসল করা:
প্রতিবার স্ত্রীসহবাসের জন্য গোসল করা মুস্তাহাব।
আবু রাফি’ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একে একে সকল বিবিদের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছেন। প্রত্যেক সঙ্গমের পর গোসল করেছেন। তখন আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যদি শুধু একবার গোসল করতেন! তখন তিনি বললেন:
«هَذَا أَزْكَى، وَأَطْيَبُ، وَأَطْهَرُ».
“এটি অধিকতর নির্মল, পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন কর্ম”।[289]
৫. মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়ার পর গোসল করা:
মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়ার পর গোসল করা মুস্তাহাব।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ غَسَّلَ الْـمَيِّتَ فَلْيَغْتَسِلْ».
“যে ব্যক্তি মৃতকে গোসল দিয়েছে সে যেন গোসল করে নেয়”।[290]
সমা বিনতে উমাইস রাদিয়াল্লাহু আনহা নিজ স্বামী আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে মৃতের গোসল দিয়ে উপস্থিত মুহাজিরদেরকে এ বলে প্রশ্ন করেন যে, আমি রোযাদার। অন্যদিকে আজকের দিনটি সীমাতিরিক্ত হিমশীতল। এমতাবস্থায় আমাকে গোসল করতে হবে কি? উত্তরে মুহাজিররা বললেন: না, গোসল করতে হবে না।[291]
৬. মুশরিক ও কাফির ব্যক্তিকে মাটিচাপা দিয়ে গোসল করা:
মুশরিক ও কাফির ব্যক্তিকে মাটিচাপা দিয়ে গোসল করা মুস্তাহাব।
‘আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«قُلْتُ لِلنَّبِيِّ  صلى الله عليه وسلم: إِنَّ عَمَّكَ الشَّيْخَ الضَّالَّ قَدْ مَاتَ!، قَالَ: اِذْهَبْ فَوَارِ أَبَاكَ، ثُمَّ لاَ تُحْدِثَنَّ شَيْئًا حَتَّى تَأْتِيَنِيْ، فَذَهَبْتُ فَوَارَيْتُهُ، وَجِئْتُهُ فَأَمَرَنِيْ فَاغْتَسَلْتُ وَدَعَا لِيْ».
“আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সংবাদ দিলাম যে, আপনার পথভ্রষ্ট বৃদ্ধ চাচা মারা গেছে। তখন তিনি বললেন: যাও, তাকে মাটিচাপা দিয়ে আসো এবং আমার নিকট আসা পর্যন্ত নতুন করে কিছু করতে যাবে না। ‘আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন: আমি মাটিচাপা দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসলে তিনি আমাকে গোসল করতে আদেশ করেন এবং আমার জন্য দো‘আ করেন”।[292]
৭. মুস্তাহাযা মহিলার ক্ষেত্রে প্রতি ওয়াক্ত সালাতের জন্য অথবা দু’ ওয়াক্ত সালাত একত্রে পড়ার জন্য গোসল করা:
মুস্তাহাযাহ্ মহিলার ক্ষেত্রে প্রতি বেলা সালাতের জন্য অথবা দু’বেলা সালাত একত্রে পড়ার জন্য গোসল করা মুস্তাহাব।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«اسْتُحِيْضَتْ أُمُّ حَبِيْبَةَ بِنْتُ جَحْشٍ فِيْ عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَأَمَرَهَا بِالْغُسْلِ لِكُلِّ صَلاَةٍ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে উম্মু হাবীবা বিনতে জাহ্শ্ মুস্তাহাযা হলে তিনি তাকে প্রতি বেলা সালাতের জন্য গোসল করতে আদেশ করেন”।[293]
হাম্না বিনতে জাহাশ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার ইস্তিহাযা হলে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার করণীয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,
«سَآمُرُكِ بِأَمْرَيْنِ أَيَّهُمَا فَعَلْتِ أَجْزَأَ عَنْكِ مِنَ الآخَرِ، وَإِنْ قَوِيْتِ عَلَيْهِمَا فَأَنْتِ أَعْلَـمُ، حَتَّى أَنْ قَالَ: وَإِنْ قَوِيْتِ عَلَى أَنْ تُؤَخِّرِيْ الظُّهْرَ وَتُعَجِّلِيْ الْعَصْرَ فَتَغْتَسِلِيْنِ وَتَجْمَعِيْنَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ ؛ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ، وَتُؤَخِّرِيْنَ الْمَغْرِبَ وَتُعَجِّلِيْنَ الْعِشَاءَ، ثُمَّ تَغْتَسِلِيْنَ وَتَجْمَعِيْنَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ فَافْعَلِيْ، وَتَغْتَسِلِيْنَ مَعَ الْفَجْـرِ فَافْعَلِيْ، وَصُوْمِيْ إِنْ قَدِرْتِ عَلَى ذَلِكِ، وَهَذَا أَعْجَبُ الأَمْرَيْنِ إِلَيَّ».
“আমি তোমাকে দু’টি কাজের আদেশ করবো। তার মধ্য হতে যে কাজটিই তুমি করো না কেন তা তোমার জন্য যথেষ্ট হবে। আর যদি তুমি উভয়টাই করতে পার সে ব্যাপারে তুমিই ভালো জানো। পরিশেষে তিনি বলেন, আর যদি তুমি জোহরকে পিছিয়ে এবং আসরকে এগিয়ে একবার গোসল করে উভয় সালাত একত্রে পড়তে পার তাহলে তা করবে। তেমনিভাবে যদি মাগরিবকে পিছিয়ে এবং ইশাকে এগিয়ে একবার গোসল করে উভয় সালাত একত্রে পড়তে পার তাহলে তা করবে। অনুরূপভাবে যদি ফজরের জন্য গোসল করে ফজরের সালাতটুকু পড়তে পার তাহলে তা করবে এবং সম্ভব হলে সাওম রাখবে। তবে উভয় কাজের মধ্যে এটিই আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়”।[294]
জানা আবশ্যক যে, মুস্তাহাযা মহিলার জন্য ঋতুস্রাবের নির্ধারিত সময়টি পার হয়ে গেলে একবার গোসল করা ওয়াজিব। এরপর প্রতি বেলা সালাত অথবা দু’বেলা সালাত একত্রে পড়ার জন্য গোসল করা মুস্তাহাব। তা না করলে প্রতি বেলা সালাতের জন্য অবশ্যই অযু করতে হবে।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«اسْتُحِيْضَتْ أُمُّ حَبِيْبَةَ بِنْتُ جَحْشٍ وَهِيَ تَحْتَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ سَبْعَ سِنِيْنَ فَقَالَ لَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: إِذَا أَقْبَلَتِ الْـحَيْضَةُ فَدَعِي الصَّلاَةَ، وَإِذَا أَدْبَرَتْ فَاغْتَسِلِيْ وَصَلِّيْ».
“আব্দুর রহমান ইবন ‘আউফের স্ত্রী উম্মু হাবীবা বিনতে জাহ্শ সাত বছর যাবৎ ইস্তিহাযার পীড়ায় পীড়িত ছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন: ঋতুস্রাবের নির্ধারিত সময় আসলে তুমি সালাত বন্ধ রাখবে। আর যখন ঋতুস্রাবের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যায় তখন গোসল করে সালাত পড়বে”।[295]
যায়নাব বিনতে আবী সালামাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم أُمَّ حَبِيْبَةَ أَنْ تَغْتَسِلَ عِنْدَ كُلِّ صَلاَةٍ وَتُصَلِّيَ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: إِنْ قَوِيْتِ فَاغْتَسِلِيْ لِكُلِّ صَلاَةٍ ؛ وَإِلاَّ فَاجْمَعِيْ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মু হাবীবাকে প্রতি বেলা সালাতের জন্য গোসল করে সালাত আদায় করতে আদেশ করেন। অন্য বর্ণনায় রয়েছেঃ যদি পার তাহলে প্রতি বেলা সালাতের জন্য গোসল করবে। তা না পারলে দু’ বেলা সালাতের জন্য একবার গোসল করে তা একসঙ্গে আদায় করবে”।[296]
ফাতিমা বিনতে আবী হুবাইশ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে মুস্তাহাযা থাকাবস্থায় বলেন,
«إِذَا كَانَ دَمُ الْحَيْضِ فَإِنَّهُ دَمٌ أَسْوَدُ يُعْرَفُ، فَإِذَا كَانَ ذَلِكَ فَأَمْسِكِيْ عَنِ الصَّلاَةِ، فَإِذَا كَانَ الآخَرُ فَتَوَضَّئِيْ وَصَلِّيْ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: اغْتَسِلِيْ، ثُمَّ تَوَضَّئِيْ لِكُلِّ صَلاَةٍ وَصَلِّيْ».
“ঋতুস্রাব মহিলাদের নিকট পরিচিত। তা কালো বর্ণের। অতএব, ঋতুস্রাব চলাকালীন সালাত বন্ধ রাখবে। আর ইস্তিহাযা হলে অযু করে সালাত পড়বে। অন্য বর্ণনায় রয়েছেঃ ঋতুস্রাব শেষে গোসল করবে। এরপর প্রতি বেলা সালাতের জন্য অযু করে সালাত আদায় করবে”।[297]
৮. বেঁহুশ হওয়ার পর চেতনা ফিরে পেলে:
বেঁহুশ হওয়ার পর চেতনা ফিরে পেলে গোসল করা মুস্তাহাব।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ثَقُلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم فَقَالَ: أَصَلَّى النَّاسُ ؟ قُلْنَا: لاَ، هُمْ يَنْتَظِرُوْنَكَ، قَال: ضَعُوْا لِيْ مَاءً فِي الْمِخْضَبِ قَالَتْ: فَفَعَلْنَا فَاغْتَسَلَ، فَذَهَبَ لِيَنُوْءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ، ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ: أَصَلَّى النَّاسُ؟ قُلْنَا: لاَ، هُمْ يَنْتَظِرُوْنَكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ، قَالَ: ضَعُوْا لِيْ مَاءً فِي الْمِخْضَبِ، قَالَتْ: فَقَعَدَ فَاغْتَسَلَ، ثُمَّ ذَهَبَ لِيَنُوْءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ، ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ: أَصَلَّى النَّاسُ؟ قُلْنَا: لاَ، هُمْ يَنْتَظِرُوْنَكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ، فَقَالَ: ضَعُوْا لِيْ مَاءً فِي الْمِخْضَبِ فَقَعَدَ فَاغْتَسَلَ».
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রোগ যখন বেড়ে গেল তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ সাহাবীগণ সালাত পড়েছে কি? আমরা বললামঃ পড়েনি, তবে আপনার অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি বললেন: পাত্রের মধ্যে আমার জন্য একটু পানি রেখে দাও। আমরা তাই করলাম। অতঃপর তিনি গোসল সেরে দাঁড়াতে চাইলে চেতনা হারিয়ে ফেলেন। পুনরায় চেতনা ফিরে পেয়ে আবারো তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ সাহাবীগণ সালাত পড়েছে কি? আমরা বললাম: পড়ে নি, তবে আপনার অপেক্ষায় রয়েছে হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন: পাত্রের মধ্যে আমার জন্য একটু পানি রেখে দাও। অতঃপর তিনি বসাবস্থায় গোসল সেরে দাঁড়াতে চাইলে আবারো অবচেতন হয়ে পড়েন। পুনরায় চেতনা ফিরে পেয়ে আবারো জিজ্ঞাসা করলেনঃ সাহাবীগণ সালাত পড়েছে কি? আমরা বললামঃ পড়ে নি, তবে আপনার অপেক্ষায় রয়েছে হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন: পাত্রের মধ্যে আমার জন্য একটু পানি রেখে দাও। অতঃপর তিনি বসাবস্থায় গোসল সেরে নেন।[298]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন বার অবচেতন হয়ে তিন বার গোসল করেন। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি, অবচেতন হওয়ার পর চেতনা ফিরে পেলে গোসল করা মুস্তাহাব।
৯. কাফির ব্যক্তি মুসলমান হলে:
কাফির ব্যক্তি মুসলমান হলে কোনো কোনো আলেমের মতে গোসল করা মুস্তাহাব। তবে বিশুদ্ধ মত হচ্ছে এমন ব্যক্তির জন্য গোসল করা ওয়াজিব। ক্বাইস ইবন ‘আসিম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أُرِيْدُ الإِسْلاَمَ، فَأَمَرَنِيْ أَنْ أَغْتَسِلَ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ».
“আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ইসলাম গ্রহণের জন্য আসলে তিনি আমাকে বরই পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল করতে আদেশ করেন”।[299]
তেমনিভাবে যখন কোনো ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে নিজ অন্তরকে নিষ্কলুষ করে নিল তখন তার শরীরকেও গোসলের মাধ্যমে পবিত্র করে নিতে হবে।
১০. দু’ ঈদের সালাতের জন্য গোসল করা:
দু’ ঈদের সালাতের জন্য গোসল করা মুস্তাহাব। যাযান থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«سَأَلَ رَجُلٌ عَلِيًّا رضي الله عنه عَنِ الْغُسْلِ، قَالَ: اِغْتَسِلْ كُلَّ يَوْمٍ إِنْ شِئْتَ، فَقَالَ: لاَ، الْغُسْلَ الَّذِيْ هُوَ الْغُسْلُ، قَالَ: يَوْمَ الْـجُمُعَةِ، وَيَوْمَ عَرَفَةَ، وَيَوْمَ النَّحْرِ، وَيَوْمَ الْفِطْرِ».
“জনৈক ব্যক্তি ‘আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু কে গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তোমার ইচ্ছে হলে প্রতিদিনই গোসল করতে পার। সে বললঃ সাধারণ গোসল সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হয় নি; বরং জিজ্ঞাসা করা হয়েছে এমন গোসল সম্পর্কে যা অবশ্যই করতে হয়। তিনি বললেন: জুমু‘আ, ‘আরাফাহ, ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিত দিবসে গোসল করতে হয়”।[300]
নাফে’ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا - يَغْتَسِلُ يَوْمَ الْفِطْرِ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: فِي الْعِيْدَيْنِ الأَضْحَى وَالْفِطْرِ، قَبْلَ أَنْ يَّغْدُوَ إِلَى الْـمُصَلَّى».
“আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা ঈদুল ফিত ও ঈদুল আযহা দিবসে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করে নিতেন”।[301]
সাঈদ ইবন মুসাইয়িব রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«سُنَّةُ الْفِطْرِ ثَلاَثٌ: الْـمَشْيُ إِلَى الـْمُصَلَّى، وَالأَكْلُ قَبْلَ الْـخُرُوْجِ، وَالاِغْتِسَالُ».
“ঈদুল ফিত দিবসের সুন্নাত তিনটি: ঈদগাহের দিকে হেঁটে যাওয়া, বের হওয়ার পূর্বে যৎসামান্য আহার গ্রহণ ও গোসল করা”।[302]
১১. আরাফার দিন গোসল করা:
হাজীদের জন্য আরাফার দিন গোসল করা মুস্তাহাব।
নাফি রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا - يَغْتَسِلُ لإِحْرَامِـهِ قَبْلَ أَنْ يُّحْرِمَ، وَلِدُخُوْلِ مَكَّةَ، وَلِوُقُوْفِهِ عَشِيَّةَ عَرَفَةَ».
“আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা ইহরাম বাঁধার পূর্বে, মক্কায় প্রবেশ ও আরাফার ময়দানে অবস্থানের জন্য গোসল করতেন”।[303]


তায়াম্মুম

আরবী ভাষায় তায়াম্মুম শব্দটি ইচ্ছা পোষণের অর্থে ব্যবহৃত হয়। শরী‘আতের পরিভাষায় তায়াম্মুম বলতে পানি না পেলে অথবা তা ব্যবহারে অপারগ হলে সাওয়াবের নিয়্যাতে এবং নাপাকী দূরীকরণের উদ্দেশ্যে পবিত্র মাটি দিয়ে সমস্ত মুখ মণ্ডল ও উভয় হাত কব্জিসহ ভালোভাবে মর্দন করাকে বুঝানো হয়।

তায়াম্মুমের বিধান:
তায়াম্মুমের বিধানটি কুরআন, হাদীস ও ইজমা’ কর্তৃক প্রমাণিত।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَإِن كُنتُم مَّرۡضَىٰٓ أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوۡ جَآءَ أَحَدٞ مِّنكُم مِّنَ ٱلۡغَآئِطِ أَوۡ لَٰمَسۡتُمُ ٱلنِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُواْ مَآءٗ فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدٗا طَيِّبٗا فَٱمۡسَحُواْ بِوُجُوهِكُمۡ وَأَيۡدِيكُم مِّنۡهُۚ مَا يُرِيدُ ٱللَّهُ لِيَجۡعَلَ عَلَيۡكُم مِّنۡ حَرَجٖ وَلَٰكِن يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمۡ وَلِيُتِمَّ نِعۡمَتَهُۥ عَلَيۡكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ﴾ [المائ‍دة: ٦]
“তোমরা রোগাক্রান্ত বা মুসাফির হলে কিংবা স্ত্রী সহবাস করলে অতঃপর পানি না পেলে পবিত্র মাটি দিয়ে সমস্ত মুখমণ্ডল ও উভয় হাত (কব্জিসহ) মাসাহ করবে। আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে সমস্যায় ফেলতে চান না। বরং তিনি চান তোমাদেরকে পবিত্র করতে এবং তোমাদের উপর নিজ নিয়ামত পরিপূর্ণ করে দিতে যেন তোমরা তাঁর নিকট কৃতজ্ঞ হতে পার”। [সূরা আল-মায়দাহ, আয়াত: ৬]
ইমরান ইবন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كُنَّا فِيْ سَفَرٍ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم  فَصَلَّى بِالنَّاسِ فَلَمَّا انْفَتَلَ مِنْ صَلاَتِهِ إِذَا هُوَ بِرَجُلٍ مُعْتَزِلٍ لَمْ يُصَلِّ مَعَ الْقَوْمِ، قَالَ: مَا مَنَعَكَ يَا فُلاَنُ أَنْ تُصَلِّيَ مَعَ الْقَوْمِ ؟ قَالَ: أَصَابَتْنِيْ جَنَابَةٌ وَلاَ مَاءَ، قَالَ: عَلَيْكَ بِالصَّعِيْدِ فَإِنَّهُ يَكْفِيْكَ».
“আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সফরে ছিলাম। এমতাবস্থায় তিনি সকলকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষে তিনি দেখলেন, জনৈক ব্যক্তি সবার সাথে সালাত আদায় না করে সামান্য দূরে অবস্থান করছে। তখন তিনি বললেন: তোমার কি হয়েছে, সবার সঙ্গে সালাত পড়োনি কেন? সে বলল: আমি জুনুবী, অথচ পানি নেই। তিনি বললেন: মাটি ব্যবহার (তায়াম্মুম) কর। তোমার জন্য মাটিই যথেষ্ট”।[304]
জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«أُعْطِيْتُ خَمْسًا لَمْ يُعْطَهُنَّ أَحَدٌ قَبْلِيْ : جُعِلَتْ لِيَ الأَرْضُ مَسْجِدًا وَطَهُوْرًا».
“আমাকে পাঁচটি বস্তু দেওয়া হয়েছে যা ইতিপূর্বে কাউকে দেওয়া হয়নি। তম্মধ্য হতে একটি হচ্ছে: মাটিকে আমার জন্য পবিত্রতার্জনের মাধ্যম ও মসজিদ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে”।[305]
অনুরূপভাবে সকল আলিমের ঐকমত্যে ইসলামী শরী‘আতে তায়াম্মুমের বিধান রয়েছে।
মুসলিমদের জন্য পবিত্রতার্জনের মাধ্যম দু’টিঃ একটি পানি, অপরটি মাটি। আর তা পানি না পেলে অথবা পানি ব্যবহারে অপারগ হলে। অতএব, যে ব্যক্তি পানি পেল এবং সে তা ব্যবহারে সক্ষমও বটে তখন তাকে অবশ্যই পানি দিয়ে পবিত্রতার্জন করতে হবে। আর যে ব্যক্তি পানি পেল না অথবা সে তা ব্যবহারে একান্ত অপারগ তখন সে অযুর পরিবর্তে তায়াম্মুম করবে। বিশুদ্ধ মতে তার এ তায়াম্মুমটি পানি না পাওয়া পর্যন্ত নাপাকী দূরীকরণে সম্পূর্ণরূপে যথেষ্ট। সুতরাং যে ইবাদাতের জন্য পানি দিয়ে পবিত্রতার্জন ওয়াজিব সে ইবাদাত সম্পাদনের জন্য পানির অবর্তমানে মাটি দিয়ে পবিত্রতার্জন আবশ্যক। তেমনিভাবে যে ইবাদাতের জন্য পানি দিয়ে পবিত্রতার্জন মুস্তাহাব সে ইবাদাত সম্পাদনের জন্য পানির অবর্তমানে মাটি দিয়ে পবিত্রতার্জনও মুস্তাহাব। বিশুদ্ধ মতে কোনো ব্যক্তি পানি না পেলে বা পানি ব্যবহারে অপারগ হলে যখন ইচ্ছে তায়াম্মুম করতে পারে এবং তার এ তায়াম্মুমটি যে কোনো ইবাদাত সংঘটনের জন্য যথেষ্ট যতক্ষণ না সে পানি পায় অথবা অযু কিংবা গোসল ভঙ্গের কোনো কারণ পাওয়া না যায়। তেমনিভাবে একটি তায়াম্মুম নিয়্যাতানুসারে যে কোনো ছোটবড় নাপাকী দূরীকরণে একান্ত যথেষ্ট।

যখন তায়াম্মুম জায়েয:
মুসাফির বা মুক্বীম থাকাবস্থায় যে কোনো কারণে কারোর অযু বা গোসল ভঙ্গ হলে নিম্নোক্ত অবস্থাগুলোতে তায়াম্মুম করা জায়েয:
১. পানি না পেলে:
পানি না পেলে তায়াম্মুম করা জায়েয। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَلَمۡ تَجِدُواْ مَآءٗ فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدٗا طَيِّبٗا﴾ [المائ‍دة: ٦]
“অতঃপর তোমরা পানি না পেলে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে”। [সূরা আল-মায়দাহ, আয়াত: ৬]
এ সম্পর্কীয় হাদীস পূর্বেল্লখ হয়েছে।
২. অযু বা গোসলের জন্য যথেষ্ট এতটুকু পানি না পেলে:
অযু বা গোসলের জন্য যথেষ্ট এতটুকু পানি না পেলে তায়াম্মুম করা জায়েয। অতএব, যতটুকু পানি আছে তা দিয়ে অযু বা গোসল করবে এবং বাকী অঙ্গগুলোর জন্য তায়াম্মুম করবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ مَا ٱسۡتَطَعۡتُمۡ﴾ [التغابن: ١٦]
“তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর”। [সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত: ১৬]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا أَمَرْتُكُمْ بِشَيْءٍ فَأْتُوْا مِنْهُ مَا اسْتَطَعْتُمْ، وَإِذَا نَهَيْتُكُمْ عَنْ شَيْءٍ فَدَعُوْهُ».
“যখন আমি তোমাদেরকে কোনো কাজের আদেশ করব তখন তোমরা তা যথাসাধ্য পালন করবে। আর যখন তোমাদেরকে কোনো কাজ করতে নিষেধ করব তখন তা হতে তোমরা অবশ্যই বিরত থাকবে”।[306]
৩. পানি অত্যন্ত ঠাণ্ডা হলে:
যখন পানি অতিশয় ঠান্ডা যা ব্যবহারে নিশ্চিত ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে এবং গরম করারও কোনো ব্যবস্থা নেই এমতাবস্থায় তায়াম্মুম করা জায়েয।
‘আমর ইবন ‘আস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«اِحْتَلَمْتُ فِيْ لَيْلَةٍ بَارِدَةٍ غَزْوَةِ ذَاتِ السَّلاَسِلِ، فَأَشْفَقْتُ إِنِ اغْتَسَلْتُ أَنْ أَهْلِكَ ! فَتَيَمَّمْتُ، ثُمَّ صَلَّيْتُ بِأَصْحَابِيْ الصُّبْحَ، فَذَكَرُوْا ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ: يَا عَمْرُو! صَلَّيْتَ بِأَصْحَابِكَ وَأَنْتَ جُنُبٌ ؟ فَأَخْبَرْتُهُ بِالَّذِيْ مَنَعَنِيْ مِنَ الاِغْتِسَالِ وَقُلْتُ: إِنِّيْ سَمِعْتُ اللهَ يَقُوْلُ: ﴿وَلَا تَقۡتُلُوٓاْ أَنفُسَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُمۡ رَحِيمٗا﴾ [النساء: ٢٩] فَضَحِكَ رَسُوْلُ اللهِ  صلى الله عليه وسلم، وَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا».
“যাতুস সালাসিল” নামক গাযওয়ায় থাকাবস্থায় এক হিমশীতল রাত্রিতে অকস্মাৎ আমার স্বপ্নদোষ হয়ে গেলে মৃত্যুর আশঙ্কায় গোসল না করে আমি তায়াম্মুম করেছি। এমতাবস্থায় আমি সাথীদেরকে নিয়ে ফজরের সালাত আদায় করেছি। অতঃপর আমার সাথীরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ ব্যাপারে অবগত করালে তিনি আমাকে ডেকে বললেন: হে ‘আম! তুমি কি জুনুবী থাকাবস্থায় নিজ সাথীদেরকে নিয়ে সালাত পড়েছ? তখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার গোসল না করার কারণটি জানিয়েছি এবং কৈফিয়ত স্বরূপ বলেছি: আমি কুরআন মাজীদে পেয়েছি, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমরা নিজে নিজকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু। তাই আমি গোসল করিনি। কৈফিয়তটি শুনা মাত্রই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে দিলেন এবং আমাকে আর কিছুই বলেন নি”।[307]
৪. রোগাক্রান্ত বা আঘাতপ্রাপ্ত হলে:
রোগাক্রান্ত বা আঘাতপ্রাপ্ত হলে এবং পানি ব্যবহারে রোগ বেড়ে যাওয়া বা আরোগ্য হতে বিলম্ব হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে তখন তায়াম্মুম করা জায়েয। জাবির ইবন আব্দুল্লাহ ও আব্দুল্লাহ ইবন ‘আববাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তারা বলেন,
«خَرَجْنَا فِيْ سَفَرٍ فَأَصَابَ رَجُلًا مِّنَّا حَجَرٌ فَشَجَّهُ فِيْ رَأْسِهِ ثُمَّ احْتَلَمَ، فَسَأَلَ أَصْحَابَهُ فَقَالَ: هَلْ تَجِدُوْنَ لِيْ رُخْصَةً فِي التَّيَمُّمِ؟ فَقَالُوْا: مَا نَجِدُ لَكَ رُخْصَةً، وَأَنْتَ تَقْدِرُ عَلَى الْـمَاءِ، فَاغْتَسَلَ فَمَاتَ، فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم  أُخْبِرَ بِذَلِكَ فَقَالَ: قَتَلُوْهُ قَتَلَهُمُ اللهُ! أَلاَ سَأَلُوْا إِذْ لَمْ يَعْلَمُوْا، فَإِنَّمَا شِفَاءُ الْعِيِّ السُّؤَالُ، إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيْهِ أَنْ يَتَيَمَّمَ وَيَعْصِرَ أَوْ يَعْصِبَ عَلَى جُرْحِهِ خِرْقَةً ثُمَّ يَمْسَحَ عَلَيْهَا وَيَغْسِلَ سَائِرَ جَسَدِهِ».
“আমরা সফরে বের হলে আমাদের একজনের মাথায় পাথর পড়ে তার মাথা ফেটে যায়। ইতোমধ্যে তার স্বপ্নদোষ হয়। তখন সে তার সাথীদেরকে এ মর্মে জিজ্ঞাসা করে যে, তোমরা শরী‘আতে আমার জন্য তায়াম্মুম করার কোনো সুযোগ খুঁজে পাচ্ছো কি? তারা বললঃ না, তোমার জন্য তায়াম্মুমের কোনো সুযোগ নেই। কারণ, তুমি পানি ব্যবহারে সক্ষম। অতঃপর সে গোসল করার সাথে সাথেই মারা যায়। এরপর আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট পৌঁছুলে তাঁকে এ সম্পর্কে জানানো হলে তিনি (তিরস্কার স্বরূপ) বললেন: ওরা বেচারাকে মেরে ফেলেছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে ধ্বংস করুক। তারা যখন ব্যাপারটি সম্পর্কে অবগত নয় তখন তারা কাউকে জিজ্ঞাসা করে নি কেন? কারণ, জিজ্ঞাসাই হচ্ছে অজ্ঞানতার উপশম। তায়াম্মুমই তার জন্য যথেষ্ট ছিল। ক্ষতের উপর ব্যান্ডেজবেঁধে তাতে মাসাহ এবং বাকী শরীর ধৌত করে নিলেই চলতো”।[308]
৪. পানি সংগ্রহে অপারগতা প্রমাণিত হলে:
পানি সংগ্রহে অপারগতা প্রমাণিত হলে তায়াম্মুম করা জায়েয। যেমন, শত্রু, চোর-ডাকাত বা অগ্নিকাণ্ডের হাতে নিজ মান-সম্মান, ধন-সম্পদ বা জীবন হারানোর ভয়। তেমনিভাবে সে খুবই অসুস্থ নড়চড়ে অক্ষম এবং পানি এনে দেওয়ার মতো আশেপাশে কেউ নেই।
৫. মজুদ পানি ব্যবহার করলে কঠিন পিপাসায় মৃত্যুর ভয় হলে:
পানি সামান্য যা ব্যবহার করলে কঠিন পিপাসায় মৃত্যুর ভয় হয় এমতাবস্থায় পানি ব্যবহার না করে প্রয়োজনের জন্য মজুদ রেখে তায়াম্মুম করা জায়েয। এ ব্যাপারে আলিমদের ঐকমত্য রয়েছে। মোট কথা, যে কোনো কারণে পানি সংগ্রহে অক্ষম বা পানি না পেলে কিংবা পানি ব্যবহারে নিশ্চিত অসুবিধে দেখা দিলে তায়াম্মুম করা জায়েয।

তায়াম্মুমের শর্তসমূহ:
তায়াম্মুমের শর্ত আটটি তা নিম্নরূপ:
১. নিয়্যাত করতে হবে। অতএব, নিয়্যাত ব্যতীত তায়াম্মুম শুদ্ধ হবেনা।
২. তায়াম্মুমকারী মুসলিম হতে হবে। অতএব, কাফিরের তায়াম্মুম শুদ্ধ হবে না যতক্ষণ না সে মুসলিম হয়।
৩. তায়াম্মুমকারী জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে। অতএব, পাগল ও মাতালের তায়াম্মুম শুদ্ধ হবে না যতক্ষণ না তার চেতনা ফিরে আসে।
৪. তায়াম্মুমকারী ভালোমন্দ ভেদাভেদ জ্ঞান রাখে এমন হতে হবে। অতএব, বাচ্চাদের তায়াম্মুম শরী‘আতের দৃষ্টিতে ধর্তব্য নয়। তাদের তায়াম্মুম করা বা না করা সমান।
৫. তায়াম্মুম শেষ হওয়া পর্যন্ত পবিত্রতার্জনের নিয়্যাত স্থির থাকতে হবে। অতএব, তায়াম্মুম চলাকালীন নিয়্যাত ভেঙ্গে দিলে তায়াম্মুম শুদ্ধ হবে না।
৬. তায়াম্মুম চলাকালীন অযু বা গোসল ওয়াজিব হয় এমন কোনো কারণ অবর্তমান থাকতে হবে। তা না হলে তায়াম্মুম তৎক্ষণাৎই নষ্ট হয়ে যাবে।
৭. তায়াম্মুমের মাটি পবিত্র ও জায়েয পন্থায় সংগৃহীত হতে হবে।
৮. তায়াম্মুমের পূর্বে মল-মূত্র ত্যাগ করে থাকলে ইস্তিঞ্জা করতে হবে।


নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে তায়াম্মুম করতেন
২. প্রথমে নিয়্যাত করতেন।
এ সম্পর্কীয় হাদীস পূর্বে উল্লখ হয়েছে।
২. “বিসমিল্লাহ” বলে তায়াম্মুম শুরু করতেন।
৩. উভয় হাত মাটিতে প্রক্ষেপণ করে ধুলো ঝেড়ে প্রথমে সমস্ত মুখমণ্ডল অতঃপর উভয় হাত কব্জিসহ মাসাহ করতেন।
‘আম্মার ইবন ইয়াসির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«بَعَثَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم فِيْ حَاجَةٍ فَأَجْنَبْتُ، فَلَمْ أَجِدِ الْـمَاءَ، فَتَمَرَّغْتُ فِي الصَّعِيْدِ كَمَا تَمَرَّغُ الدَّابَّةُ، ثُمَّ أَتَيْتُ النَّبِيَّ  صلى الله عليه وسلم فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ: إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيْكَ أَنْ تَقُوْلَ بِيَدَيْكَ هَكَذَا، فَضَرَبَ بِكَفَّيْهِ الأَرْضَ ضَرْبَةً وَاحِدَةً وَنَفَخَ فِيْهِمَا، ثُمَّ مَسَحَ بِهِمَا وَجْهَهُ وَكَفَّيْهِ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: وَضَرَبَ بِيَدَيْهِ إِلَى الأَرْضِ فَنَفَضَ يَدَيْهِ فَمَسَحَ وَجْهَهُ وَكَفَّيْهِ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে কোনো এক প্রয়োজনে সফরে পাঠালে অকস্মাৎ আমার স্বপ্নদোষ হয়ে যায়। পানি না পেয়ে আমি পশুর ন্যায় মাটিতে গড়াগড়ি দিয়েছি। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ সম্পর্কে জানালে তিনি বললেন: মাটিতে দু’হাত মেরে তায়াম্মুম করাই তোমার জন্য যথেষ্ট ছিল। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় হাত একবার মাটিতে প্রক্ষেপণ করে তাতে ফুঁ মেরে তা দিয়ে সমস্ত মুখমণ্ডল ও হস্তযুগল কব্জি পর্যন্ত মাসাহ করেন। অন্য বর্ণনায় রয়েছেঃ তিনি উভয় হাত মাটিতে প্রক্ষেপণ করে ঝেড়েমেড়ে তা দিয়ে মুখমণ্ডল ও উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত মাসাহ করেন”।[309]

তায়াম্মুমের রুকনসমূহ

তায়াম্মুমের রুকন তিনটিঃ
১. যে জন্য তায়াম্মুম করা হচ্ছে উহার সুস্পষ্ট ও নির্দিষ্ট নিয়্যাত করা।
অর্থাৎ সে ব্যক্তি যদি দৃশ্যমান নাপাকী থেকে তায়াম্মুম করতে চায় তাহলে তায়াম্মুমের সময় তাকে তাই নিয়্যাত করতে হবে। তেমনিভাবে সে যদি অযু বা গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করতে চায় তাহলে তায়াম্মুমের সময় তাকে তাই নিয়্যাত করতে হবে।
উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:
«إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنيِّاَّتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيْبُهَا أَوْ إِلَى اِمْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا، فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ».
“প্রতিটি কর্ম নিয়্যাত নির্ভরশীল। যেমন নিয়্যাত তেমনই ফল। যেমন, কেউ যদি দুনিয়ার্জন বা কোনো রমণীকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে হিজরত (নিজ আবাসভূমি ত্যাগ) করে সে তাই পাবে যে জন্য সে হিজরত করেছে”।[310]
২. সমস্ত মুখমণ্ডল একবার মাসাহ করা।
৩. উভয় হাত কব্জি সহ একবার মাসাহ করা।
এ সম্পর্কীয় হাদীস ইতপূর্বে উল্লখ হয়েছে। 
  
তায়াম্মুম ভঙ্গকারী কারণসমূহ :
এমন দু’টি কারণ রয়েছে যা তায়াম্মুমকে ইবনষ্ট করে দেয়। কারণ দু’টি নিম্নরূপ:
১. যে কারণগুলো অযু বিনষ্ট করে তা তায়াম্মুমকেও বিনষ্ট করে। কারণ, তায়াম্মুম অযু বা গোসলের স্থলাভিষিক্ত। তাই অযু বা গোসল যে যে কারণে ইবনষ্ট হয় সে সে কারণে তায়াম্মুমও বিনষ্ট হয়।
২. পানি পাওয়া গেলে তায়াম্মুম বিনষ্ট হয়ে যাবে। অতএব, যে ব্যক্তি পানি না পাওয়ার দরুন তায়াম্মুম করেছে সে পানি পেলেই তার তায়াম্মুম ভেঙ্গে যাবে।
আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّ الصَّعِيْدَ الطَّيِّبَ طَهُوْرُ الـمُسْلِمِ ؛ وَإِنْ لَمْ يَجِدِ الْـمَاءَ عَشْرَ سِنِيْنَ، فَإِذَا وَجَدَ الْـمَاءَ فَلْيُمِسَّهُ بَشَرَتَهُ».
“পবিত্র মাটি মুসলির পবিত্রতার জন্য নিশ্চিত মাধ্যম যদিও সে দশ বছর যাবত পানি না পায়। যখনই সে পানি পাবে তখনই অযু বা গোসল করে নিবে। তবে কোনো কারণে পানি ব্যবহারে অক্ষম হওয়ার দরুন তায়াম্মুম করে থাকলে পানি থাকা সত্ত্বেও তার তায়াম্মুম বহাল থাকবে। তবে যখনই সে পানি ব্যবহারে সক্ষম হবে তখনই তার তায়াম্মুম ভেঙ্গে যাবে”।[311]

পানিও নেই মাটিও নেই এমতাবস্থায় কী করতে হবে:
পানিও নেই মাটিও নেই এবং এর কোনো একটি সংগ্রহ করাও সম্ভবপর হয়নি অথবা পেয়েছে তবে অযু বা তায়াম্মুম করা তার পক্ষে অসম্ভব এমতাবস্থায় সে অযু বা তায়াম্মুম না করেই সালাত আদায় করবে। যেমন, কোনো ব্যক্তির হাত-পা সম্পূর্ণরূপে বাঁধা। অযু বা তায়াম্মুম করা কোনোমতেই তার পক্ষে সম্ভবপর নয়। এমতাবস্থায় সে অযু বা তায়াম্মুম ছাড়াই সালাত আদায় করবে।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«اسْتَعَرْتُ مِنْ أَسْمَاءَ قِلاَدَةً فَهَلَكَتْ، فَأَرْسَلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم نَاسًا مِّنْ أَصْحَابِهِ فِيْ طَلَبِهَا فَأَدْرَكَتْهُمُ الصَّلاَةُ فَصَلُّوْا بِغَيْرِ وُضُوْءٍ، فَلَمَّا أَتَوْا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم شَكَوْا ذَلِكَ إِلَيْهِ، فَنَزَلَتْ آيَةُ التَّيَمُّمِ، فَقَالَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ: جَزَاكِ اللهُ خَيْرًا، فَوَاللهِ! مَا نَزَلَ بِكِ أَمْرٌ قَطُّ إِلاَّ جَعَلَ اللهُ لَكِ مِنْهُ مَخْرَجًا، وَجَعَلَ لِلْمُسْلِمِيْنَ فِيْهِ بَرَكَةً».
“আমি আমার বোন আসমা থেকে একটি হার ধার নিয়ে সফরে রওয়ানা করলে অকস্মাৎ তা হারিয়ে যায়। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে হারের খোঁজে কিছু সংখ্যক সাহাবকে পাঠালেন। ইতোমধ্যে সালাতের সময় হলে পানি না পাওয়ার দরুন তারা অযু না করেই সালাত আদায় করেন। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ব্যাপারটি জানানোর পরপরই তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ হয়। তখন উসাইদ ইবন হুযাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু ‘আয়েশাকে উদ্দেশ্য করে বললেন: আল্লাহ তা‘আলা আপনার কল্যাণ করুক! আল্লাহর কসম! আপনার কোনো সমস্যা হলেই আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে সে সমস্যা থেকে উদ্ধার করেন এবং তাতে নিহিত রাখেন মুসলিমদের জন্য প্রচুর কল্যাণ ও সমৃদ্ধি”।[312]
উক্ত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদেরকে পুনরায় সালাত আদায় করতে আদেশ করেন নি। এ থেকে বুঝা যায় পানি বা মাটি না পেলে নাপাক অবস্থায় সালাত পড়া জায়েয।
অতএব, পানি পেলে অযু করবে। পানি না পেলে বা পানি ব্যবহারে অক্ষম হলে তায়াম্মুম করবে। পানি বা মাটি কিছুই না পেলে নাপাক অবস্থায় সালাত পড়ে নিবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ مَا ٱسۡتَطَعۡتُمۡ﴾ [التغابن: ١٦]
“তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর”। [সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত: ১৬]
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
﴿وَمَا جَعَلَ عَلَيۡكُمۡ فِي ٱلدِّينِ مِنۡ حَرَجٖ﴾ [الحج: ٧٨]
“আল্লাহ তা‘আলা ধর্মীয় ব্যাপারে তোমাদের পর কোনো কঠোরতা আরোপ করেন নি”। [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ৭৮]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا أَمَرْتُكُمْ بِشَيْءٍ فَأْتُوْا مِنْهُ مَا اسْتَطَعْتُمْ، وَإِذَا نَهَيْتُكُمْ عَنْ شَيْءٍ فَدَعُوْهُ».
“যখন আমি তোমাদেরকে কোনো কাজের আদেশ করব তখন তোমরা তা যথাসাধ্য পালন করবে। আর যখন আমি তোমাদেরকে কোনো কাজ করতে নিষেধ করব তখন তা হতে তোমরা বিরত থাকবে”।[313]

তায়াম্মুম করে সালাত পড়ার পর সময় থাকতে পানি পেলে:
যে কোনো কারণে তায়াম্মুম করে সালাত পড়ার পর সময় থাকতে পানি পেলে অথবা পানি ব্যবহারে সক্ষম হলে পুনরায় অযু করে সালাত আদায় করতে হবে না। যদিও উক্ত সালাত দ্বিতীয়বার পড়ার সময় থাকে। তেমনিভাবে যদি কোনো ব্যক্তি পানি বা মাটি পায়নি অথবা তা ব্যবহারে অক্ষম তখন সে পবিত্রতা ছাড়াই সালাত পড়েছে। পুনরায় সালাতের সময় থাকতেই সে পানি বা মাটি পেয়েছে অথবা তা ব্যবহারে সক্ষম হয়েছে এমতাবস্থায় আদায়কৃত সালাত তাকে দ্বিতীয়বার আদায় করতে হবে না।
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«خَرَجَ رَجُلاَنِ فِيْ سَفَرٍ فَحَضَرَتِ الصَّلاَةُ وَلَيْسَ مَعَهُمَا مَاءٌ، فَتَيَمَّمَا صَعِيْدًا طَيِّبًا، فَصَلَّيَا ثُمَّ وَجَدَا الْمَاءَ فِي الْوَقْتِ، فَأَعَادَ أَحَدُهُمَا الصَّلاَةَ وَالْوُضُوْءَ، وَلَمْ يُعِدِ الآخَرُ ثُمَّ أَتَيَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيه وسلم فَذَكَرَا ذَلِكَ لَهُ، فَقَالَ لِلَّذِيْ لَمْ يُعِدْ: أَصَبْتَ السُّنَّةَ وَأَجْزَأَتْكَ صَلاَتُكَ، وَقَالَ لِلَّذِيْ تَوَضَّأَ وَأَعَادَ: لَكَ الأَجْرُ مَرَّتَيْنِ».
“দু’ ব্যক্তি সফরে বের হয়েছে। অতঃপর সালাতের সময় হলে পানি না পাওয়ার দরুন তারা পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করে সালাত আদায়ের পরপরই ওয়াক্ত থাকতে পানি পেয়েছে। এমতাবস্থায় তাদের একজন অযু করে উক্ত সালাত দ্বিতীয়বার আদায় করে এবং অন্যজন তা করে নি। এরপর উভয় ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে ব্যাপারটি তাঁকে জানালে তিনি যে ব্যক্তি অযু করে সালাত পুনর্বার আদায় করে নি তাকে বললেন: তুমি সুন্নাহ অনুযায়ী কাজ করেছ এবং তোমার পূর্বের সালাতই তোমার জন্য যথেষ্ট। দ্বিতীয়জনকে বললেন: তোমার দু’বার সালাত পড়ার সাওয়াব হয়েছে”।[314]
সালাত পুনর্বার আদায় না করা যখন সুন্নাহ তখন দ্বিতীয়বার সালাত আদায় করা অবশ্যই সুন্নাহ বিরোধী।
وَصَلَّى اللهُ عَلَى نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ وَّعَلَى اٰلِهِ وَصَحْبِهِ أَجْمَعِيْنَ.
সমাপ্ত
আল্লাহ তাআলা ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সুদৃঢ় বিশ্বাস স্থাপনের পরপরই ইসলামের দ্বিতীয় রুকন ও বিধান হচ্ছে সালাত। এটি ইসলামের বিশেষ স্তম্ভ। সালাত নবীদের ভূষণ ও নেককারদের অলঙ্কার, বান্দা ও প্রভুর মাঝে গভীর সংযোগ স্থাপনকারী, অপরাধ ও অপকর্ম থেকে হিফাযতকারী। তবে বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ অপবিত্রতা থেকে যথাসাধ্য পবিত্রতা অর্জন ছাড়া কোনো সালাতই আল্লাহ তাআলার দরবারে গ্রহণযোগ্য নয়। এ কারণেই পবিত্রতার ব্যাপারটি ইসলামী শরীআতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অত্র গ্রন্থে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে পবিত্রতা অর্জন করতেন তার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।




[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭১, ৩১১৬ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৩৭।
[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৭১।
[3] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৩।
[4]  আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৭; তিরমিযী, হাদীস নং ৬৬; নাসাঈ, হাদীস নং ৩২৫।
[5] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩৫, ৬৯৫৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৫।
[6] আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৬; তিরমিযী, হাদীস নং ৬৬।
[7] আবু দাউদ, হাদীস নং ৮৩; তিরমিযী, হাদীস নং ৬৯; নাসাঈ, হাদীস নং ৩৩১; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩৯২, ৩৯৩, ৩৯৪; আহমাদ ৭১৯২।
[8] আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৩; তিরমিযী, হাদীস নং ৬৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৫২৩।
[9] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৮৩।
[10] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৩৯।
[11] তিরমিযী, হাদীস নং ৬৮।
[12] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৪৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৯৮।
[13] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১৮।
[14] তিরমিযী, হাদীস নং ২৫১৮।
[15] তিরমিযী, হাদীস নং ১২৪; আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৩২, ৩৩৩; নাসাঈ, হাদীস নং ৩২১।
[16] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২১৬, ২১৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯২।
[17] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৭৫।
[18] আবু দাউদ, হাদীস নং ৬; ইবন খুযাইমা, হাদীস নং ৬৯।
[19] তিরমিযী, হাদীস নং ৬০৬; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৯৭।
[20] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩০; তিরমিযী, হাদীস নং ৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩০০।
[21] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৯৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৪।
[22] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬২।
[23] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৮৬০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৫০।
[24] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৯।
[25] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৬; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩২৮।
[26] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৭।
[27] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৭।
[28] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৬১, ১৬২, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৭।
[29] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬২; আবু দাউদ, হাদীস নং ৭।
[30] আবু দাউদ, হাদীস নং ২।
[31] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০, ১৫১, ১৫২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭০, ২৭১।
[32] আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৪; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩৬৩।
[33] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৭০।
[34] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৭।
[35] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৭।
[36] আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৫।
[37] সহীহ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৬০।
[38] তিরমিযী, হাদীস নং ১৪; আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪।
[39] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৩৯ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৮২।
[40] আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৫; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩৫৮।
[41] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২১৬, ২১৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯২।
[42] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৪।
[43] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৫৮৯।
[44] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২২০, ৬১২৮ মুসলিম; ২৮৪, ২৮৫।
[45] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৮৫।
[46]সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২২৭, ৩০৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯১।
[47] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৮৩; তিরমিযী, হাদীস নং ১৪৩।
[48] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২২৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৮৭; আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৭৪।
[49] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৫২৮; আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৭৫।
[50] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৭৭।
[51] আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৫০।
[52] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৮৫।
[53] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৯।
[54] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৯।
[55] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩২৭৮, ৩৩৭৭।
[56] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৭২।
[57] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৩২০।
[58] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৬৩; সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪৯২, ২২২১।
[59] বুখারী, হাদীস ৬৬৮৬।
[60] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৬৬।
[61] আবু দাউদ, হাদীস নং ৪১৩২; তিরমিযী, হাদীস নং ১৭৭১।
[62] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৮৮।
[63] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯০।
[64] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২২৯, ২৩০, ২৩১, ২৩২।
[65] বুখারী, হাদীস ১৩২, ১৭৮, ২৬৯ মুসলিম, হাদীস ৩০৩।
[66] আবু দাউদ, হাদীস নং ২০৬, ২০৭, ২০৮।
[67] তিরমিযী, হাদীস নং ১১৫ আবু দাউদ, হাদীস নং ২১০।
[68] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২২৭, ৩০৭ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯১।
[69] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৫৮।
[70] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৬৪।
[71] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০২।
[72] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০২, ৩০৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯৩, ২৯৪।
[73] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯৮।
[74] সহীহ সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৯৭; সহীহ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০১।
[75] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৮৫।
[76] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৯৪, ১৬৫০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১১।
[77] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৭৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৯০।
[78] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৭৩।
[79] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০৪ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৯।
[80] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৩৫।
[81] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২২৮, ৩০৬, ৩২০, ৩২৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৩৩।
[82] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৮৬।
[83] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩০৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৬৫৩।
[84] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩১১; তিরমিযী, হাদীস নং ১৩৯; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৬৫৪।
[85] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৭৮৫, ৩৭৮৬; তিরমিযী, হাদীস নং ১৮২৪; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩২৪৯।
[86] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৭৮৭।
[87] ইবন আবী শায়বাহ, হাদীস নং ২৫০৫।
[88] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৩৫, ২৩৬, ৫৫৩৮, ৫৫৩৯, ৫৫৪০।
[89] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৬।
[90] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৩৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৭১।
[91] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৩৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫২৪।
[92] আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৫০।
[93] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৪।
[94] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৪২৬, ৫৬৩২, ৫৬৩৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২০৬৭।
[95] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩৭ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৬১।
[96] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৬৫।
[97] আবু দাউদ, হাদীস নং ৭৫; তিরমিযী, হাদীস নং ৯২।
[98] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৫৬।
[99] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৩৫৬, ৬২৯৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৭০।
[100] আবু দাউদ, হাদীস নং ৫২৭১।
[101] তিরমিযী, হাদীস নং ২৭৬১; নাসাঈ, হাদীস নং ১৩।
[102] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৮৯৩।
[103] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৮৮৯, ৫৮৯১, ৬২৯৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৭; তিরমিযী, হাদীস নং ২৭৫৬; নাসাঈ, হাদীস নং ৯, ১০, ১১; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৯৪।
[104] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৮; তিরমিযী, হাদীস নং ২৭৫৮, ২৭৫৯; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৯৭।
[105] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৮৯২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৯
[106] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৯; তিরমিযী, হাদীস নং ২৭৬৩, ২৭৬৪।
[107] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬০।
[108] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৯।
[109] নাসাঈ, হাদীস নং ৫।
[110] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৫।
[111] মালিক, হাদীস নং ১১৫; আহমাদ, হাদীস নং ৪০০, ৪৬০।
[112] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৮৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫২; আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬, ৪৭।
[113] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৩; আবু দাউদ, হাদীস নং ৫১।
[114] সাহীহুত তারগীব, হাদীস নং ২১৫; সিলসিলা সাহীহা, হাদীস নং ১২১৩।
[115] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৪; আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৯।
[116] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৬৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৮।
[117] আবু দাউদ, হাদীস নং ৫।
[118] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬১; আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৩; তিরমিযী, হাদীস নং ২৭৫৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৯৫।
[119] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৬২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৮।
[120] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩২৯৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৮।
[121] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৫; আবু দাউদ, হাদীস নং ৬০।
[122] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৪; আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৯; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৭১, ২৭৩, ২৭৪, ২৭৫।
[123] তিরমিযী, হাদীস নং ৩; আবু দাউদ, হাদীস নং ৬১; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৭৬, ২৭৭।
[124] তিরমিযী, হাদীস নং ৯৬০; নাসাঈ, হাদীস নং ২৯২৫, ২৯২৬।
[125] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০৫ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১১।
[126] মালিক, হাদীস নং ১; দারুকুতনী, হাদীস ৪৩১, ৪৩২, ৪৩৩।
[127] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪৬।
[128] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৯, ১৬৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৬।
[129] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৭।
[130] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৮।
[131] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৪।
[132] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪৪, ৮৩২।
[133] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪৫।
[134] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৩২।
[135] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫১ তিরমিযী, হাদীস নং ৫১ ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৩৩।
[136] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯০৭।
[137] তিরমিযী, হাদীস নং ২৫; আবু দাউদ, হাদীস নং ১০১; নাসাঈ, হাদীস নং ৭৮; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪০৩, ৪০৪, ৪০৫, ৪০৬।
[138] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৬৮ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৮।
[139] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪০৮।
[140] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৯, ১৬৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৬।
[141] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪২; তিরমিযী, হাদীস নং ৩৮; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৫৪।
[142] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪৮; তিরমিযী, হাদীস নং ৪০; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৫২।
[143] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৬, ১৯১, ১৯৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৫।
[144] আবু দাউদ, হাদীস নং ১১১, ১১৩।
[145] নাসাঈ, হাদীস নং ৯১।
[146] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪২।
[147] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৫, ১৮৬, ১৯২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৫।
[148] তিরমিযী, হাদীস নং ৩১ ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৩৬।
[149] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪৫।
[150] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৬৪ , ১৯৩৪ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৬।
[151] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪৬।
[152] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৫, ১৮৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৫; আবু দাউদ, হাদীস নং ১১৮; তিরমিযী, হাদীস নং ৩২, ৩৪; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৪০, ৪৪১, ৪৪২, ৪৪৩।
[153] আবু দাউদ, হাদীস নং ১২১, ১২২, ১২৩ তিরমিযী, হাদীস নং ৩৬ ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৪৫, ৪৪৬, ৪৪৭, ৪৪৮।
[154] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৩৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৬।
[155] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪৬।
[156] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৬৬।
[157] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৪; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৭৫।
[158] তিরমিযী, হাদীস নং ৫৫।
[159] আমালুল ইয়াওমি ওয়াল্লাইলাহ ৮১।
[160] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৬৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৬।
[161] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৪।
[162] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১১৪৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪৫৮।
[163] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৭; তিরমিযী, হাদীস নং ৪২; আবু দাউদ, হাদীস নং ১৩৮; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪১৭।
[164] তিরমিযী, হাদীস নং ৪৩; আবু দাউদ, হাদীস নং ১৩৬।
[165] তিরমিযী, হাদীস নং ৪৭।
[166] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৩৫।
[167] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০, ৯৬, ১৬৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪১; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৫৬।
[168] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪৩।
[169] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৭।
[170] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪২।
[171] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪৪।
[172] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৬১; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৭।
[173] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৬।
[174] আবু দাউদ, হাদীস নং ৪১৪১; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪০৮।
[175] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৩৪; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৪৯, ৪৫০, ৪৫১।
[176] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৫।
[177] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৫।
[178] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৪।
[179] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৫।
[180] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০, ৯৬, ১৬৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪১; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৫৬।
[181] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১৮
[182] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪৩।
[183] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৭৫।
[184] মালিক ১১৫
[185] ইব খুযাইমা, হাদীস নং ১১৮
[186] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৫০ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩১৯
[187] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩২৫
[188] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩২১
[189] আবু দাউদ, হাদীস নং ৯৪
[190] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩৮
[191] নাসাঈ, হাদীস নং ১৪০ ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪২৮
[192] আবু দাউদ, হাদীস নং ৯৬
[193] তিরমিযী, হাদীস নং ৯৬ ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৮৩
[194] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩৭ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৬১ ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৫১৯
[195] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩২, ১৭৮, ২৬৯ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৩ আবু দাউদ, হাদীস নং ২০৬, ২০৭
[196] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২২৮
[197] আবু দাউদ ২০৩; ইবন মাজাহ ৪৮২।
[198] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৮১ নাসাঈ, হাদীস নং ১৬৩ তিরমিযী, হাদীস নং ৮২ ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৮৪, ৪৮৫
[199] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৮৬, ৪৮৭ ইবন হিববান ১১১৪, ১১১৫, ১১১৭
[200] ইব্নু হিববান ১১১৮ মাওয়ারিদ ২১০ দারাক্বুত্বনী ৬ বায়হাকী ৬৩০
[201] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৮৪ ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৯৯
[202] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৯৮
[203] আবু দাউদ, হাদীস নং ১১১৪
[204] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৩২৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪৯৮
[205] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩১১ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭১০
[206] তিরমিযী, হাদীস নং ৩৬৮৯; তারগীব, হাদীস নং ২০১
[207] তারগীব, হাদীস নং ২০০
[208] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩১৬১; তিরমিযী, হাদীস নং ৯৯৩; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৪৮৫
[209] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩৮১; তিরমিযী, হাদীস নং ৮৭
[210] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৫৩
[211] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৭, ২০৮, ২১০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৫৪, ৩৫৫, ৩৫৬, ৩৫৭
[212] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৫
[213] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৮
[214] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৬৮, ২৮৪, ৫০৬৮, ৫২১৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৯
[215] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৫
[216] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮৭, ২৮৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৬
[217] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৭
[218] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২
[219] ইবন খুযাইমাহ ৯৫০, ২০২৭
[220] ইবন হিববান ৩৫৬৮
[221] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৬, ৫৭৯৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৪
[222] তিরমিযী, হাদীস নং ৯৬; নাসাঈ, হাদীস নং ১২৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৮৩
[223] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬
[224] ইবন খুযাইমা, হাদীস নং ১৯২; ইবন হিববান, হাদীস নং ১৩২৪
[225] আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৫০
[226] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৬২
[227] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৬১
[228] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৫৯
[229] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৫
[230] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৫
[231] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪৬
[232] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৪ আবু দাউদ, হাদীস নং ১৫০
[233] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৪৩
[234] আবু দাউদ, হাদীস নং ২০৬
[235] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩০, ২৮২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩১৩
[236] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩১১,৩১৪
[237] বায়হাকী, হাদীস নং ৭৭২
[238] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩৬; তিরমিযী, হাদীস নং ১১৩; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৬১৭
[239] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৪৯
[240] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৯১ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৪৮
[241] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৩০
[242] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৬৪৬
[243] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮৩, ২৮৫ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৭১
[244] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৪৫
[245] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৬
[246] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৫
[247] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৮
[248] আবু দাউদ ৩৫৫; তিরমিযী ৬০৫; নাসাঈ ১৮৮।
[249] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১২৬৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২০৬
[250] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১২৫৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৩৯
[251] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩২০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৩৪
[252] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৯৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১১
[253] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৫
[254] তিরমিযী, হাদীস নং ৯৬০; নাসাঈ, হাদীস নং ২৯২৫
[255] মালিক ১; দারাক্বুত্বনী ৪৩১, ৪৩২, ৪৩৩
[256] তিরমিযী, হাদীস নং ১৪৬; আবু দাউদ, হাদীস নং ২২৯; নাসাঈ, হাদীস নং ২৬৬, ২৬৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৬০০
[257] আহ, হাদীস নং ৮৮২
[258] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩২
[259] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯৮; নাসাঈ, হাদীস নং ২৭২
[260] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯৯; নাসাঈ, হাদীস নং ২৭১
[261] নাসাঈ, হাদীস নং ২৭৪, ৩৮৫ হুমাইদী ৩১০
[262] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯০৭
[263] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩১৬
[264] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪৯, ২৭৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩১৭
[265] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৫৭
[266] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৬৬, ২৭৪
[267] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৫৭, ২৫৯, ২৬৫, ২৭৪, ২৭৬
[268] নাসাঈ, হাদীস নং ৪২২
[269] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৫৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩১৮
[270] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৩০
[271] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৬৪৬
[272] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৬৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৮
[273] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৪৩
[274] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৩২
[275] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৩৬
[276] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮১; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৩৭
[277] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৫০; তিরমিযী, হাদীস নং ১০৭; নাসাঈ, হাদীস নং ২৫৩; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৫৮৫
[278] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৭৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৪৬
[279] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৭৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৪৪
[280] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৮০ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৪৬
[281] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৯৭, ৮৯৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৪৯
[282] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৫৪; তিরমিযী, হাদীস নং ৪৯৭; নাসাঈ, হাদীস নং ১৩৮১; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১১০০
[283] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৫৭ তিরমিযী, হাদীস নং ৪৯৮
[284] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৫৭
[285] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৪৩
[286] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৪৫; তিরমিযী, হাদীস নং ৪৯৬; নাসাঈ, হাদীস নং ১৩৮২
[287] তিরমিযী, হাদীস নং ৮৩০; দারামী ১৮০১; ইবন খুযাইমাহ ২৫৯৫
[288] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৭৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২৫৭
[289] আবু দাউদ, হাদীস নং ২১৯; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৫৯৬
[290] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩১৬১; তিরমিযী, হাদীস নং ৯৯৩; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৪৮৫
[291] মুয়াত্তা মালিক ৩
[292] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩২১৪; নাসাঈ, হাদীস নং ১৯০, ২০০৮
[293] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৯২
[294] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৮৭
[295] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২২৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৩৩; আবু দাউদ, হাদীস নং ২৮৫
[296] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩২৭; আবু দাউদ, হাদীস নং ২৯৩
[297] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৯৮, ৩০৪
[298] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৮৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪১৮
[299] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৫৫; তিরমিযী, হাদীস নং ৬০৫; নাসাঈ, হাদীস নং ১৮৮
[300] বায়হাকী, হাদীস নং ৫৯১৯
[301] বায়হাকী, হাদীস নং ৫৯২০
[302] ফিরয়াবী
[303] মালিক ৩২৪
[304] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৪৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৮২
[305] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৩৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫২১
[306] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭২৮৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৩৩৭
[307] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৩৪; দারাক্বুত্বনী ৬৭০
[308] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৩৬, ৩৩৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৫৭৮
[309] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৩৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৬৮
[310] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯০৭
[311] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৩২, ৩৩৩; তিরমিযী, হাদীস নং ১২৪ নাসাঈ, হাদীস নং ৩২৩
[312] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৩৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৬৭
[313] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭২৮৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৩৩৭
[314] আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৩৮; নাসাঈ, হাদীস নং ৪৩৩
_________________________________________________________________________________

 লেখক: মোস্তাফিজুর রহমান ইবন আব্দুল আযীয আল-মাদানী
সম্পাদনা: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
সূত্র: ইসলামহাউজ


পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন