মঙ্গলবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৮

স্বালাতে মুবাশ্‌শির (৩য় পর্ব)

স্বালাতে মুবাশ্‌শির (৩য় পর্ব)



১ম পর্ব | ২য় পর্ব | ৩য় পর্ব

জুম'আ

জুমআর নামায

জুমআর নামায প্রত্যেক সাবালক জ্ঞান-সম্পন্ন পুরুষের জন্য জামাআত সহকারে ফরয।

মহান আল্লাহ বলেন,

(يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِذَا نُوْدِيَ لِلصَّلاَةِ مِنْ يَّوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ، ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ)
অর্থাৎ, হে ঈমানদারগণ! যখন জুমআর দিন নামাযের জন্য আহবান করা হবে, তখন তোমরা সত্বর আল্লাহর স্মরণের জন্য উপস্থিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় বর্জন কর। এটিই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা উপলব্ধি কর। (কুরআন মাজীদ ৬২/৯)

মহানবী (সাঃ) বলেন, “দুনিয়াতে আমাদের আসার সময় সকল জাতির পরে। কিন্তু কিয়ামতের দিন আমরা সকলের অগ্রবর্তী। (সকলের আগে আমাদের হিসাব-নিকাশ হবে।) অবশ্য আমাদের পূর্বে ওদেরকে (ইয়াহুদী ও নাসারাকে) কিতাব দেওয়া হয়েছে। আমরা কিতাব পেয়েছি ওদের পরে। এই (জুমআর) দিনের তা’যীম ওদের উপর ফরয করা হয়েছিল। কিন্তু ওরা তাতে মতভেদ করে বসল। পক্ষান্তরে আল্লাহ আমাদেরকে তাতে একমত হওয়ার তওফীক দান করেছেন। সুতরাং সকল মানুষ আমাদের থেকে পশ্চাতে। ইয়াহুদী আগামী দিন (শনিবার)কে তা’যীম করে (জুমআর দিন বলে মানে) এবং নাসারা করে তার পরের দিন (রবিবার)কে।” (বুখারী, মুসলিম,  মিশকাত)

সোমবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৮

স্বালাতে মুবাশ্‌শির (২য় পর্ব)

স্বালাতে মুবাশ্‌শির (২য় পর্ব) 



১ম পর্ব | ২য় পর্ব | ৩য় পর্ব

তাশাহহুদের বৈঠক

দ্বিতীয় রাকআতের সকল কর্ম (শেষ সিজদাহ) শেষ করে মহানবী (সাঃ) দুই সিজদার মাঝের বৈঠকের মত বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসে যেতেন এবং ডান পায়ের পাতাকে খাড়া করে রাখতেন। (বুখারী, আবূদাঊদ, সুনান ৭৩১নং)

তাশাহহুদের জন্য বসতে আদেশ দিয়ে নামায ভুলকারী সাহাবীকে তিনি বলেছেন, “--- অতঃপর তুমি যখন নামাযের মাঝে বসবে, তখন স্থির হবে এবং বাম ঊরুকে বিছিয়ে দিয়ে তাশাহহুদ পড়বে।” (আবূদাঊদ, সুনান ৮৬০ নং, বায়হাকী)

আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আমার দোস্ত (সাঃ) আমাকে কুকুরের মত (দুই পায়ের রলাকে খাড়া রেখে, দুই পাছার উপর ভর করে ওহাত দু’টিকে মাটিতে রেখে) বসতে নিষেধ করেছেন। (আহমাদ, মুসনাদ ২/২৬৫, ত্বায়ালিসী, ইবনে আবী শাইবা) উক্ত প্রকার বসাকে তিনি শয়তানের বৈঠক বলে অভিহিত করেছেন। (মুসলিম, সহীহ ৪৯৮নং, আহমাদ, মুসনাদ)

তাশাহ্‌হুদে বসে তিনি ডানহাতের চেটোকে ডান ঊরু (জাং) বা হাঁটুর উপর রাখতেন, আর বামহাতের চেটোকে রাখতেন বাম জাং বা হাঁটুর উপর বিছিয়ে। (মুসলিম, সহীহ ৫৮০নং, আহমাদ, মুসনাদ) ডানহাতের কনুই-এর শেষ প্রান্ত ডান জাং-এর উপর রাখতেন। (আবূদাঊদ, সুনান ৯৫৭নং, নাসাঈ, সুনান) অর্থাৎ কনুইকে পায়ের রলার উপর না রেখে ঊরুর উপর পাঁজরে লাগিয়ে রাখতেন।

এক ব্যক্তি নামাযে বাম হাতের উপর মাটিতে ঠেস দিয়ে বসলে তিনি তাঁকে বারণ করে বলেছিলেন, “এরুপ হল ইয়াহুদীদের নামায।” (বায়হাকী,হাকেম, মুস্তাদরাক, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৩৮০নং) “এরুপ বসো না। কারণ, এটা তো তাদের বৈঠক, যাদেরকে আযাব দেওয়া হবে।” (আহমাদ, মুসনাদ, আবূদাঊদ, সুনান, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৩৮০নং) “এটা হল তাদের বৈঠক, যাদের প্রতি আল্লাহ ক্রোধান্বিত।” (আবূদাঊদ, সুনান ৯৯৩ নং, আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ)

রবিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৮

স্বালাতে মুবাশ্‌শির (১ম পর্ব)

স্বালাতে মুবাশ্‌শির (১ম পর্ব) 



১ম পর্ব | ২য় পর্ব | ৩য় পর্ব

শুরুর কথা 

মহান আল্লাহর অনুগ্রহে ‘স্বালাতে মুবাশ্‌শির’-এর দ্বিতীয় খন্ড পাঠকের হাতে উপস্থিত হল। তার জন্য তাঁর দরবারে লাখো শুকরিয়া জ্ঞাপন করি। দ্বীনের অন্যতম খুঁ টির একটি কাঠামো পেশ করতে পেরে আমি নিজেকে যেমন ধন্য মনে করছি, তেমনি আশা করছি দুআ ও সওয়াব লাভের।

কেবল সহীহ হাদীসকে ভিত্তি করেই, অধিক ক্ষেত্রে কে কি বলেছেন তা উল্লেখ না করেই কেবল সহীহ দিকটা তুলে ধরেছি আমার এই পুস্তিকায়। মানুষের মনে সহীহ শিক্ষার চেতনা ও বাসনার কথা খেয়াল রেখেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। আল্লাহ যেন তা কবুল করেন, তাই আমার কামনা।

বিভিন্ন বিতর্কিত মাসায়েলে আমি বর্তমান বিশ্বের প্রধান ৩টি রত্ন; বর্তমান বিশ্বের অদ্বিতীয় মুহাদ্দিস আল্লামা শায়খ মুহাম্মাদ নাসেরুদ্দ্বীন আলবানী, আল্লামা শায়খ ইবনে বায এবং আল্লামা ও ফকীহ্‌ শায়খ ইবনে উষাইমীন (রাহিমাহুমুল্লাহু জামীআন)গণের হাদীস লব্ধ ও সহীহ দলীল ভিত্তিক মতকে প্রাধান্য দিয়েছি। আর এ কথা অবশ্যই প্রমাণ করে যে, আমি তাঁদের প্রত্যেকের; বরং প্রত্যেক হ্‌ক-সন্ধানী রব্বানী আলেমের ভক্ত ও অনুরক্ত। তা বলে কারো অন্ধভক্ত নই। পক্ষান্তরে প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য অধিকারীর অধিকার সঠিকরুপে আদায় করা। উলামার যথার্থ কদর করা। প্রত্যেক হ্‌ক-সন্ধানীর অনুরক্ত হওয়া; যদিও বা তাঁদের কোন কোন অভিমত আমার-আপনার বুঝের অনুকূল নয়। বলা বাহুল্য, খাঁটি সোনা স্বর্ণকারই চিনতে পারে; স্বর্ণ-ব্যবসায়ী নয়।

‘নামায’ ইসলামের প্রধান ইবাদত। ‘নামায’ শব্দটি ফারসী, উর্দু , হিন্দী ও আমাদের বাংলা ভাষায় আরবী ‘সালাত’ অর্থেই পরিপূ র্ণ রুপে ব্যবহৃত বলেই আমি ‘সালাত’-এর স্থানে ‘নামায’ই ব্যবহার করেছি। তাছাড়া বাংলাভাষীর অধিকাংশ মানুষ ‘সালাত’ শব্দটির সাথে পরিচিত নয়। তাই পরিচিত ও প্রসিদ্ধ শব্দই ব্যবহার করতে আমি প্রয়াস পেয়েছি। আর এতে শরয়ী কোন বাধাও নেই। সুতরাং এ বিষয়ে সুহৃদ পাঠকের কাছে আমার ইজতিহাদী  কৈফিয়ত পেশ করে সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বিনীত
আব্দুল হামীদ আল-মাদানী
  আল-মাজমাআহ
সঊদীআরব

প্রয়োজনের তাকীদে যা কিছু লিখি, সবই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়। আল্লাহ যেন তা আমাকে দান করেন এবং কাল কিয়ামতে এরই অসীলায় আমাকে, আমার শ্রদ্ধেয় পিতা-মাতা ও ওস্তাযগণকে, আর এ বই-এর উদ্যোক্তা, প্রকাশক ও সকল আমলকারী পাঠককে তাঁর মেহ্‌মান-খানা বেহেশ্তে স্থান দেন। আমীন।

বইঃ মুখতাসার যাদুল মা‘আদ - ফ্রি ডাউনলোড

বইঃ মুখতাসার যাদুল মা‘আদ - ফ্রি ডাউনলোড


বই: মুখতাসার যাদুল মা‘আদ
মুল রচনা: ইবনুল কায়্যিম আল জাওযিয়্যাহ (রহ)
সংক্ষেপায়নে: মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহাব (রহ)
অনুবাদ: আবদুল্লাহ শাহেদ আল মাদানী
প্রকাশনায়: ওয়াহীদিয়া ইসলামীয়া লাইব্রেরী

শুক্রবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৮

বদ নজর লাগা ও বদ নজরের কুপ্রভাব

বদ নজর লাগা ও বদ নজরের কুপ্রভাব



বদ নজর লাগা ও বদ নজরের কুপ্রভাব

• কুরআন থেকে (বদ নজরের) দলীলঃ

আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেনঃ
وَقَالَ يَا بَنِيَّ لَا تَدْخُلُوا مِنْ بَابٍ وَاحِدٍ وَادْخُلُوا مِنْ أَبْوَابٍ مُتَفَرِّقَةٍ وَمَا أُغْنِي عَنْكُمْ مِنَ اللَّهِ مِنْ شَيْءٍ إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَعَلَيْهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُتَوَكِّلُونَ، وَلَمَّا دَخَلُوا مِنْ حَيْثُ أَمَرَهُمْ أَبُوهُمْ مَا كَانَ يُغْنِي عَنْهُمْ مِنَ اللَّهِ مِنْ شَيْءٍ إِلَّا حَاجَةً فِي نَفْسِ يَعْقُوبَ قَضَاهَا وَإِنَّهُ لَذُو عِلْمٍ لِمَا عَلَّمْنَاهُ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
অর্থঃ এবং (ইয়াকুব আলাইহিস সালাম) বললেন হে আমার প্রিয় সন্তানগণ! তোমরা সবাই (শহরে) কোন এক প্রবেশ পথে প্রবেশ করো না বরং বিভিন্ন প্রবেশদ্বার দিয়ে প্রবেশ করিও । আমি তোমাদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা কোন বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারব না। কেননা প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী কেবল আল্লাহ। তার উপর আমার আস্থা রয়েছে। ভরসাকারীকে ভরসা করলে তার প্রতিই করতে হবে। আর যখন তারা দিয়েছিলেন অথচ আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত কোন কিছু থেকে কেউ রক্ষা করতে পারে না। তবুও ইয়াকুবের (আলাইহিস সালাম) অন্তরে একটি আশা ছিল যে, তিনি তা পূর্ণ করেছেন। নিশ্চয় তিনি ইলমে (নবুওয়াতের) বাহক ছিলেন। অথচ অনেক লোক তা জানে না। (সূরা ইউসুফঃ ৬৭-৬৮)