ছহীহ্ সুন্নাহ্র আলোকে বিতর নামায
ছহীহ্ সুন্নাহ্র আলোকে বিতর নামায
সূচীপত্র
বিষয়:
ভূমিকা
বিতর নামাযের গুরুত্ব ও ফযীলত
বিতর নামায কি ওয়াজিব না সুন্নাত?
বিতর নামায ওয়াজিব নয় তার দলীল
বিতর নামাযকে ওয়াজিব বলার পক্ষে দলীল এবং তার জবাব।
বিতর নামাযের সময়
বিতর নামাযের রাকাত সংখ্যা ও তার পদ্ধতি
ক) এক রাকাত বিতর
খ) তিন রাকাত বিতর
মাগরিবের মত তিন রাকাত বিতর পড়া
গ) পাঁচ রাকাত বিতর
ঘ) সাত রাকাত বিতর
ঙ) নয় রাকাত বিতর
চ) এগার রাকাত বিতর
ছ) তের রাকাত বিতর
বিতরে কোন সূরা পাঠ করবে
দুআ ক্বনূতের বিবরণ
দুআ ক্বনূত রুকূর আগে না পরে?
ফরয নামাযে ক্বনূত
ক্বনূত পাঠ করার সময় কোন দুআ পড়বে?
দুআ কুনুতের সময় তাকবীর দেয়া ও তাকবীরে তাহরীমার মত দু’হাত উত্তোলন
দু’হাত তুলে দুআ ক্বনূত পড়া
দুআ ক্বনূত না জানলে
বিতর নামায শেষ করলে
বিতরের পর নামায পড়া
বিতর নামাযের কাযা
একরাতে দু’বার বিতর পড়া
পরিশেষে
তথ্যসূত্র
ভূমিকা
الْحَمْدُ
لِلَّهِ نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِينُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ وَنَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ
شُرُورِ أَنْفُسِنَا وَمِنْ سَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا مَنْ يَهْدِهِ اللَّهُ فَلا مُضِلَّ
لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْ فَلا هَادِيَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ
وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
(يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ
حَقَّ تُقَاتِهِ وَلا تَمُوتُنَّ إِلا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ )
(يَاأَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمْ الَّذِي
خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا
رِجَالا كَثِيرًا وَنِسَاءً وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي تَسَاءَلُونَ بِهِ
وَالأَرْحَامَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا )
(يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوااتَّقُوا اللَّهَ وَقُولُوا
قَوْلا سَدِيدًا يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ
وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيمًا )
ভারত
উপমহাদেশের মুসলিম ভায়েরা রুটি-রুজির সন্ধানে যখন সঊদী আরব আগমণ করেন, তখন এখানে তারা ইবাদত-বন্দেগীর বিভিন্ন
ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত নিয়মের অনেক ব্যতিক্রম লক্ষ্য করেন। তম্মধ্যে বিতর নামায অন্যতম।
এ নামায আমাদের দেশে সাধারণতঃ যে নিয়মে পড়া হয় তার সম্পূর্ণ বিপরীত নিয়ম তারা এদেশে
দেখতে পান। বিশেষ করে রামাযান মাসে যখন জামাতের সাথে বিতর নামায পড়তে হয়। তখন তারা
পেরেশান ও হয়রান হয়ে নিজ দেশের ইমাম ও মুফতী সাহেবানকে পত্র মারফত বা ফোন করে জিজ্ঞেস
করেন যে, আমাদের করণীয় কি? তারাও নিজেদের মতাদর্শ অনুযায়ী জবাব পাঠিয়ে
দেন। ওদের সাথে বিতর পড়বে না, তোমরা আলাদা বিতর পড়ে নিবে। এজন্য দেখা যায়- বিতর শুরু হওয়ার সময় বিরাট
একটি দল, জামাত থেকে বের হয়ে কেউ মসজিদে
কেউ নিজ ঘরে গিয়ে বিতর নামায আদায় করে থাকেন।
সঊদী
আরবের জুবাইল দা’ওয়া সেন্টারে দাঈ ও শিক্ষক হিসেবে আগমণ করার পর থেকে এমন কোন উপলক্ষ্য নেই যে, আমাকে উক্ত বিষয়ে প্রশ্নের সম্মুখিন হতে
হয়নি। আমার জ্ঞান অনুযায়ী আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর ছহীহ সুন্নাহর অনুসরণে তার জবাব দেয়ার চেষ্টা করেছি এবং
করে যাচ্ছি। ফলে সত্যানুসন্ধানী ও নবী প্রেমী লোকেরা সত্য গ্রহণ করেন এবং সে অনুযায়ী
নিজেদের আমলকে শুধরে নেন। আমার জানা মতে এরকম লোকের সংখ্যা অগণিত যারা এক্ষেত্রে নিজেদের
আমলকে ছহীহ সুন্নাত মোতাবেক বিশুদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন। (আল্লাহ
তাদেরকে আরো তাওফীক দিন।)
উপরোক্ত
কারণে এবং সত্যানুসন্ধানী ভাইদের বার বার অনুরোধ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে এবিষয়ে দলীল
ভিত্তিক একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ প্রণয়ন করতে। তাছাড়া ছহীহ সুন্নাতের প্রচার-প্রসার ও
তার খেদমতের একটি দুর্বার আগ্রহ তো নিজের মধ্যে রয়েছেই। তাই পুঁজি অল্প হলেও সে পথে
পা বাড়াতে দুঃসাহস করেছি। দুআ করছি হে আল্লাহ তুমি আমাকে সত্য উদ্ঘাটনে তাওফীক দিও। তোমার প্রিয় হাবীব নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নাতের খেদমতে অংশ নিয়ে রোজ ক্বিয়ামতে
তাঁর শাফায়াত নসীব করো।
এই পুস্তকটি
পড়ার পূর্বে সম্মানিত পাঠক-পাঠিকার নিকট আমার নিবেদন, আমাদের সকলের উচিত হচ্ছে সার্বক্ষণিক নিম্ন
লিখিত আয়াত ও হাদীছটি মানস্পটে রাখা।
মহান
আল্লাহ বলেন,
]وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلا
مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُونَ لَهُمْ
الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ
ضَلالا مُبِينًا[
আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল কোন আদেশ করলে কোন ঈমানদার
পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করার কোন অধিকার নেই। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য
করবে, সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হবে।[1]
আবু হুরায়রা
(রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
]كُلُّ أُمَّتِي يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ
إِلا مَنْ أَبَى قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَنْ يَأْبَى قَالَ مَنْ
أَطَاعَنِي دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ أَبَى
আমার উম্মতের প্রত্যেক ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে, কিন্তু ঐ ব্যক্তি
নয় যে জান্নাতে যেতে A¯^xKi
করে। তাঁরা বললেন, কে এমন আছে জান্নাতে যেতে A¯^xKi করে? তিনি বললেন, যে আমার আনুগত্য করবে সে জান্নাতে যাবে। আর যে আমার অবাধ্য হবে সেই জান্নাতে যেতে
A¯^xKi করবে।[2]
উপরোক্ত
আয়াত ও হাদীছটি যে ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত জীবনের চলমান পথে স্মরণ রাখবে তার জন্য ইসলামের
যাবতীয় বিধি-বিধান মান্য করা সহজসাধ্য হবে।
এ জন্যই
আমাদের পূর্বসূরী মহামান্য ইমামগণ হাদীছ সম্পর্কে যে অমূল্য বাণী পেশ করে গেছেন-তা
ক্বিয়ামত পর্যন্ত নবী প্রেমীদের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। যেমনঃ ইমাম আবু হানীফা
(রহঃ) [মৃত্যু ১৫০ হিঃ] বলেন, হাদীছ বিশুদ্ধ সাব্যস্ত হলে ওটাই আমার মাযহাব। ইমাম মালেক (রহঃ) [মৃত্যু ১৭৯ হিঃ] বলেন, প্রত্যেক ব্যক্তির কথা গ্রহণযোগ্য ও প্রত্যাখ্যানযোগ্য
কিন্তু শুধুমাত্র রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সবকিছুই গ্রহণযোগ্য। ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) [মৃত্যু ২০৪হিঃ] বলেন, আমি যা কিছু বলেছি তার বিরুদ্ধে নবী (সাল্লালাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ছহীহ সূত্রে কোন হাদীছ এসে গেলে নবী
(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাদীছই হবে অগ্রগণ্য, অতএব তোমরা আমার অন্ধানুকরণ করো না। ইমাম আহমাদ বিন n¤^j (রহঃ) [মৃত্যু ২৪১ হিঃ] বলেন, তুমি আমার তাক্বলীদ (অন্ধানুসরন) করো না, মালেক, শাফেয়ী, আওযায়ী, ছওরী এদের কারো অন্ধানুকরণ করো না; বরং তাঁরা যেখান থেকে (সমাধান) গ্রহণ করেছেন
তুমিও সেখান থেকেই গ্রহণ কর।
সম্মানিত
পাঠক-পাঠিকাদের প্রতি আমার অনুরোধ, মাযহাবী গোঁড়ামী পরিহার করে আসুন আমরা একনিষ্ঠভাবে কুরআন-সুন্নাহ্ ও সালাফে সালেহীনের
নীতির অনুসরণ করি। পাস্পারিক ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে কুরআন-সুন্নাহ্র ছায়াতলে সমবেত হই।
গড়ে তুলি ঐক্য সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের অনন্য দৃষ্টান্ত।
বইটি
প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি হাদীছের রেফারেন্স উল্লেখ করে তার b¤^i দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন ছাপায় বিভিন্ন
b¤^i থাকতে পারে, ফলে পাঠক তাতে বিভ্রান্ত হতে পারেন, তাই প্রতিটি হাদীছের অধ্যায় ও অনুচ্ছেদ
উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে যাতে করে মিলিয়ে নেয়া সহজ হয়। আর সাধ্যানুযায়ী সবগুলো হাদীছ
ছহীহ-বিশুদ্ধই নির্বাচন করা হয়েছে। মাযহাবী গোঁড়ামী মুক্ত হয়ে নিরপেক্ষ, নির্ভরযোগ্য ও মুহাক্কেক আলেমদের উক্তি
উল্লেখ করা হয়েছে।
এই জন্য
সহৃদয় পাঠক-পাঠিকাদের প্রতি আবারো সনির্বন্ধ নিবেদন, আপনাদের দৃষ্টিতে কোন ভুল-ত্রুটি পরিলক্ষিত
হলে তা ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন এবং প্রমাণ-পঞ্জি ও রেফারেন্সসহ সংশোধনের পরামর্শ দিবেন, উহা ধন্যবাদসহ সাদরে গ্রহণ করা হবে। (ইনশাআল্লাহ্)
বইটিকে সুসজ্জিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধনী ও পরামর্শ দান করেছেন, জুবাইল দা’ওয়া সেন্টারের
সুযোগ্য দাঈ শায়খ আবদুল্লাহ্ বিন শাহেদ এবং দাম্মাম ইসলামী কাল্চারাল সেন্টারের সনামধণ্য
দাঈ শায়খ মুতিউর রহমান সালাফী। হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে তাদেরকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।
হে আল্লাহ্ এই বইয়ের লেখক, সম্পাদক, পাঠক-পাঠিকা ও ছাপানোর কাছে
সহযোগিতা দানকারী সকলকে সর্বোত্তম পুরস্কারে ভূষিত করো। ক্বিয়ামতের মাঠে নবী (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর পবিত্র হাত থেকে হাওযে কাউছারের পানি পান ও তাঁর শাফায়াত লাভে
ধন্য করো। আমীন॥
নিবেদক,
মুহাঃ আবদুল্লাহ্ আল কাফী
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
দাঈ, জুবাইল দাওয়া এন্ড গাইডেন্স সেন্টার
পো: বক্স নং ১৫৮০, ফোনঃ ০৩-৩৬২৫৫০০
সঊদী আরব।
بسم الله الرحمن الرحيم
বিতর
নামাযের গুরুত্ব ও ফযীলত
দৈনন্দিন
জীবনে একজন মুসলমানের উপর ইসলামের দ্বিতীয় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুকন নামায শুধুমাত্র
পাঁচ ওয়াক্তই ফরয; এর অতিরিক্ত নয়। এই পাঁচ ওয়াক্তে
মোট ১৭ (সতের) রাকাত নামায ছাড়া আর যত নামায আদায় করার
হাদীছ
পাওয়া যায় তা সবই নফলের অন্তর্ভূক্ত। ঐ সমস্ত নামাযের মধ্যে কোনটার চাইতে কোনটার গুরুত্ব
বেশী হওয়ার কারণে উলামায়ে দ্বীন কোনটার নাম দিয়েছেন সুন্নাতে মুআক্কাদা, কোনটা সুন্নাতে যায়েদা এবং কোনটা সাধারণ
নফল নামায।
যে সমস্ত
নামায আদায় করার ব্যাপারে অধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এবং তাতে অফুরন্ত ছওয়াবের উল্লেখ
হয়েছে তাকে বলা হয় সুন্নাতে মুআক্কাদা নামায। তম্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ পাঁচ ওয়াক্ত
ফরয নামাযের সাথে সংশ্লিষ্ট ১২ রাকাত নামায, তাহাজ্জুদ নামায, বিতর
নামায, চাশতের নামায, তওয়াফ শেষ করে দু’রাকাত
নামায, ঈদের নামায ইত্যাদি।
এগুলোর
মধ্যে বিতর একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ নামায। এর গুরুত্বের প্রতি লক্ষ্য করলে
দেখা যায় তা ওয়াজিবের কাছাকাছি। ওয়াজিবের অর্থ বহণ করে এরকম কিছু হাদীছও পাওয়া যায়
তার পক্ষে। কিন্তু এ সম্পর্কে সমস্ত হাদীছ একত্রিত করলে বুঝা যায় তা ওয়াজিব নয়; বরং উহা সুন্নাতে মুআক্কাদা।
বিতর
নামাযের গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে অনেকগুলো হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। তম্মধ্যে কয়েকটি নিম্নরূপঃ
]عَنْ خَارِجَةَ بْنِ حُذَافَةَ الْعَدَوِيُّ
خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ أَمَدَّكُمْ بِصَلاةٍ وَهِيَ
خَيْرٌ لَكُمْ مِنْ حُمْرِ النَّعَمِ وَهِيَ الْوِتْرُ فَجَعَلَهَا لَكُمْ فِيمَا
بَيْنَ الْعِشَاءِ إِلَى طُلُوعِ الْفَجْرِ[
১) খারেজাহ্ ইবনে হুযাফাহ্ (রাঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
একদা আমাদের নিকট এসে বললেন: নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে
একটি নামায দিয়ে অনুগ্রহ করেছেন। উহা তোমাদের জন্য লাল উটের চাইতে উত্তম। তা হচ্ছে বিতর নামায। এ নামায আদায় করার জন্য তিনি সময় নির্ধারণ করেছেন, এশার নামাযের পর থেকে ফজর উদিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত।[3]
]عَنْ عَلِيٍّ رَضِي اللَّه عَنْه قَالَ أَوْتَرَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ قَالَ يَا أَهْلَ الْقُرْآنِ أَوْتِرُوا فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ
وَجَلَّ وِتْرٌ يُحِبُّ الْوِتْرَ[
২) আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিতর নামায পড়েছেন এবং বলেছেন, হে কুরআনের অনুসারীগণ তোমরা
বিতর নামায পড়। কেননা আল্লাহ তা’আলা একক, তিনি বিতর নামায পছন্দ করেন।[4]
৩) রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ নামায গুরুত্ব সহকারে আদায়
করতেন। এমনকি সফরে গেলেও এ নামায পড়া ছাড়তেন না।
]عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى
اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي فِي السَّفَرِ عَلَى رَاحِلَتِهِ حَيْثُ
تَوَجَّهَتْ بِهِ يُومِئُ إِيمَاءً صَلاةَ اللَّيْلِ إِلاَّ الْفَرَائِضَ
وَيُوتِرُ عَلَى رَاحِلَتِهِ[
ইবনু
উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সফর অবস্থায় ফরয নামায ব্যতীত রাতের নফল নামায ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ বাহনের
উপর বসে- বাহন যে দিকে যায় সে দিকেই- পড়তেন। তিনি বিতর নামায আরোহীর উপর পড়তেন।[5]
কিন্তু
ফরয নামাযের সময় হলে তিনি তা বাহনের উপর পড়তেন না।
]عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِاللَّهِ قَالَ كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي عَلَى رَاحِلَتِهِ
حَيْثُ تَوَجَّهَتْ فَإِذَا أَرَادَ الْفَرِيضَةَ نَزَلَ فَاسْتَقْبَلَ
الْقِبْلَةَ[
জাবের
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আরোহী যে দিকেই যাক না কেন রাসূলুল্লাহ্
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে দিকেই মুখ করে তার উপর বসে নফল নামায আদায় করতেন।
কিন্তু ফরয নামায আদায়ের ইচ্ছা করলে অবতরণ করতেন এবং কিবলামুখী হয়ে নামায আদায় করতেন।[6]
বিতর
নামায কি ওয়াজিব না সুন্নাত?
ইমাম
আবু হানিফা (রঃ)এর মতে বিতর নামায ওয়াজিব। ইমাম মালেক, শাফেয়ী ও আহমদ ইবনে n¤^j (রঃ)সহ অধিকাংশ ইমাম, মুহাদ্দিছ ও আলেমের মতে বিতর নামায ওয়াজিব
নয় বরং তা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্।
ইমাম
আবু হানীফা যে সকল হাদীসের আলোকে বিতর নামাযকে ওয়াজিব বলেন, তা অধিকাংশ যঈফ বা দূর্বল অথবা তা দিয়ে
এ নামাযকে ওয়াজিব সাব্যস্ত করা যায় না। তাই তাঁর প্রসিদ্ধ দু’ছাত্র
ইমাম ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান (রহঃ) ¯^xq ইমামের সাথে একমত না হয়ে অধিকাংশ
ইমামের ন্যায় এ নামাযকে সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্ হিসেবে আখ্যা দেন।
এ জন্য
ইবনুল মুনযির বলেন, এক্ষেত্রে ইমাম আবু হানীফার
মতের সমর্থন করেছেন এরকম কারো নাম আমি জানি না।[7]
ইমাম
ইবনু তায়মিয়া (রহঃ) বলেন, বিতর
নামায সুন্নাতে মুআক্কাদা। এব্যাপারে মুসলমানগণ ঐকমত্য। কোন মানুষ যদি বিতর নামায পরিত্যাগ
করার ব্যাপারে দৃঢ় থাকে বা অবিরাম বিতর নামায না পড়ে, তবে তার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে না।[8]
বিতর
নামায যে ওয়াজিব নয় তার পক্ষে সপষ্ট দলীলঃ
১) আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ
]الْوِتْرُ لَيْسَ بِحَتْمٍ كَصَلاتِكُمُ
الْمَكْتُوبَةِ وَلَكِنْ سَنَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَقَالَ إِنَّ اللَّهَ وِتْرٌ يُحِبُّ الْوِتْرَ فَأَوْتِرُوا يَا أَهْلَ
الْقُرْآنِ[
বিতর নামায ফরজ নামাযের মত লাযেম ও আবশ্যক নয়; বরং সে নামায রাসূলুল্লাহ্
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুন্নত করেছেন। তিনি (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা বেজোড় বা একক, তাঁর কোন শরীক নেই, তিনি বিতর তথা বেজোড় নামায পছন্দ করেন এবং তাতে প্রচুর ছওয়াব
দিয়ে থাকেন। সুতরাং হে কুরআনের অনুসারীগণ তোমরা বিতরের নামায পড়।[9]
এই হাদীছটি
দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বিতর
নামায সুন্নাত। কারণ সেই সময় আলী (রাঃ)এর উল্লেখিত কথার কোন প্রতিবাদ কোন ছাহাবী থেকে
পাওয়া যায় না। আর তিনি কথাটি তাঁদের উপস্থিতিতেই বলেছেন। সুতরাং বলা যায়, ইহা ছাহাবায়ে কেরামের ‘এজমা
সুকূতী’ বা নীরব ঐকমত্য।[10]
হাদীছ শাস্ত্রে একথা সকলের জানা যে, কোন ছাহাবী যদি বলেন, সুন্নাত
হচ্ছে এই রকম ... তবে উহা
মারফূ[11]
হাদীছ হিসেবে গণ্য।
২) কেনানা গোত্রের মুখদাজী নামক এক ব্যক্তি শামে বসবাসকারী আবু মুহাম্মাদ নামে পরিচিত
জনৈক ব্যক্তির নিকট থেকে শুনলেন, তিনি বলছেন যে, বিতর নামায ওয়াজিব। মুখদাজী
বলেন, কথাটি শুনে আমি ছাহাবী উবাদা
বিন ছামেতের (রাঃ) নিকট গেলাম। তিনি তখন মসজিদে যাচ্ছিলেন। আমি তাঁকে আবু মুহাম্মাদের
কথাটি বললাম। তিনি বললেন, আবু মুহাম্মাদ
ভুল কথা বলেছে। কেননা আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেন,
আল্লাহ
তায়ালা পাঁচ ওয়াক্ত নামায বান্দাদের উপর লিখে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি এই নামাযগুলোকে হালকা
মনে করে তার অধিকার ক্ষুন্ন করবে না, তার জন্য আল্লাহর কাছে রয়েছে অঙ্গিকার। তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর যে
ব্যক্তি এই নামাযগুলো আদায় করবে না তার জন্যে আল্লাহর কাছে কোন অঙ্গিকার নাই। আল্লাহ
চাইলে তাকে শাস্তি দিবেন, চাইলে
তাকে ক্ষমা করবেন।[12]
৩) ত্বলহা ইবনে উবাউদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
]جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ
صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ أَهْلِ نَجْدٍ ثَائِرُ الرَّأْسِ نَسْمَعُ
دَوِيَّ صَوْتِهِ وَلا نَفْقَهُ مَا يَقُولُ حَتَّى دَنَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ
صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِذَا هُوَ يَسْأَلُ عَنِ الإِسْلامِ فَقَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَمْسُ صَلَوَاتٍ فِي الْيَوْمِ
وَاللَّيْلَةِ فَقَالَ هَلْ عَلَيَّ غَيْرُهُنَّ قَالَ لا إِلا أَنْ تَطَّوَّعَ
وَصِيَامُ شَهْرِ رَمَضَانَ فَقَالَ هَلْ عَلَيَّ غَيْرُهُ فَقَالَ لا إِلا أَنْ
تَطَّوَّعَ وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
الزَّكَاةَ فَقَالَ هَلْ عَلَيَّ غَيْرُهَا قَالَ لا إِلا أَنْ تَطَّوَّعَ قَالَ
فَأَدْبَرَ الرَّجُلُ وَهُوَ يَقُولُ وَاللَّهِ لا أَزِيدُ عَلَى هَذَا وَلا
أَنْقُصُ مِنْهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
أَفْلَحَ إِنْ صَدَقَ[
একদা নজদের অধিবাসী এক বেদুঈন (ছাহাবী রাঃ) মাথার চুল উস্কু-খুস্কু অবস্থায় গুনগুন
করে দুর্বধ্য কিছু কথা বলতে বলতে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর
দরবারে এলো। নবীজীর নিকটবর্তী হয়ে ইসলাম সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করল। তিনি (ছাঃ) বললেনঃ
রাত ও দিনে পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায আদায় করতে হবে। সে বলল: এ পাঁচ নামায ছাড়া আমার উপর
অন্য কোন নামায আবশ্যক আছে কি? তিনি বললেন না, তবে তুমি যদি অতিরিক্ত
কোন নামায পড়তে চাও তো পড়তে পারবে। রামাযান মাসে ছিয়াম পালন করতে হবে। সে বলল, এ ছাড়া অন্য কি ছিয়াম আমার উপর আবশ্যক কি? তিনি বললেন, না, তবে তুমি যদি নফল আদায় করে থাক। এভাবে রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট যাকাতের কথা উল্লেখ করলেন। সে বলল, এ ছাড়া অন্য কিছু আমার উপর আবশ্যক কি? তিনি বললেন, না, তবে তুমি যদি নফল আদায় করে থাক। তখন লোকটি সেখান থেকে উঠে গেল
এবং বলতে লাগল, আল্লাহর শপথ আমার উপর যা ফরয করা হয়েছে আমি তার চাইতে বেশী কিছু
করবনা এবং এর থেকে কমও কিছু করব না। লোকটি যখন চলে গেল তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ লোক তার কথায় যদি সত্যবাদী হয় তবে সে
মুক্তি পেয়ে যাবে। অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে, সে যদি সত্যবাদী হয়, তবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।[13]
এ হাদীসে
স্পষ্ট হয়ে গেল যে, বিতর নামায ওয়াজিব নয়। কেননা
যদি ওয়াজিব হত তবে লোকটি যখন প্রশ্ন করল যে, এছাড়া আমার উপর আর কোন নামায আছে কি না তখন নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ‘না’ বলতেন না; বরং তাকে বিতর নামাযও আবশ্যক এ কথা বলতেন।
তাছাড়া বিতর নামায যদি ওয়াজিব হয় তাহলে উহা না পড়লে নিঃসন্দেহে গুনাহগার হওয়ার কথা।
কিন্তু
এ হাদীছে দেখা যায় লোকটি যখন আল্লাহর কসম করে বলল আমি আমার উপর ফরযের অতিরিক্ত কিছু
করব না, তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে মুক্তির গ্যারান্টি দিয়ে বললেন, ‘বাস্তবিকই লোকটি যদি সত্যবাদী হয়, ফরয ইবাদত সঠিকভাবে আদায় করে তবে সে মুক্তি
পেয়ে যাবে’। কিভাবে একজন মানুষ ওয়াজিব কাজ পরিত্যাগ করে মুক্তি পেয়ে যায়? তাহলে এ হাদীছ থেকে স্পষ্টভাবে একথা কি
প্রমাণিত হয় না যে, বিতর নামায ওয়াজিব নয় বরং সুন্নাত
বা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ?
৪) ইবনু আব্বাস (রাঃ)এর হাদীছে বর্ণিত হয়েছে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
যখন মুআ’য বিন জাবাল (রাঃ)কে (গভর্ণর করে) ইয়ামান প্রেরণ করেন তখন বলেন,
]فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللَّهَ قَدِ
افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ[
... তাদেরকে জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ তা’আলা তাদের উপর ফরয করেছেন দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামায।
এ হাদীছেও
প্রমাণিত হয় যে, বিতর নামায যদি ফরযের মত অতি
আবশ্যক হত, তবে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) উহা জানানোর জন্য মুআ’য (রাঃ)কে অবশ্যই নির্দেশ দিতেন। ইবনু
হিব্বান বলেন, মুআ’যের ইয়ামান
গমণ রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর জীবনের শেষ লগ্নে মৃত্যুর অল্প
কিছু দিন পূর্বে ছিল।[14]
যারা
বিতর নামাযকে ওয়াজিব বলেন, তাদের দলীলগুলো তো অবশ্যই যঈফ- যেমন এর বিস্তারিত বিবরণ অচিরেই উল্লেখ করা হবে-
যদি ছহীহ ধরেও নেয়া হয়, তবে তার
জবাবে বলা যায় যে, উহার বিধান ছিল পূর্বে। মুআ’যের (রাঃ)
এই হাদীছ দ্বারা তা রহিত হয়ে যায়। (আল্লাহই অধিক জ্ঞাত)
এই জন্য
একটি যঈফ হাদীছে বলা হয়েছেঃ তিনটি বিষয় আমার জন্য ফরয কিন্তু তোমাদের জন্য নফল। তম্মধ্যে
একটি হচ্ছেঃ বিতর নামায।[15]
অন্য
আরেকটি হাদীছে ইবনু আব্বাসের (রাঃ) বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
أُمِرْتُ بِالأُضْحِيَّةِ وَالْوَتْرِ وَلَمْ تُكْتَبْ
আমাকে
কুরবানী এবং বিতর নামাযের আদেশ করা হয়েছে। কিন্তু উহা ফরয হিসেবে লিখে দেয়া হয়নি।[16] কিন্তু হাদীছটির সনদে ‘জাবের’ নামক বর্ণনাকারী যঈফ।
এই যঈফ
হাদীছ দু’টি বাদ দিলেও যে দলীল সমূহ পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, তা দ্বারা একথা প্রমাণ হওয়া যথেষ্ট যে, বিতর নামায ওয়াজিব নয়; বরং উহা সুন্নাত।
তাছাড়া
পূর্বে উল্লেখিত ইবনে ওমর ও জাবের (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ দু’টি দ্বারা
প্রমাণিত হয় যে বিতর নামায ফরযের মত নয় বরং উহা সুন্নাত। ইবনু ওমর (রাঃ) বর্ণিত হাদীছে
বলা হয়েছেঃ
৫) নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সফর অবস্থায় ফরয নামায ব্যতীত রাতের নফল নামায ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ বাহনের উপর বসে-
বাহন যে দিকে যায় সেদিকেই- পড়তেন। তিনি বিতর নামায আরোহীর উপর পড়তেন।[17]
আর জাবের
(রাঃ) বর্ণিত হাদীছে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আরোহী যে দিকেই যাক না কেন রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে
দিকেই মুখ করে তার উপর বসে নফল নামায আদায় করতেন। কিন্তু ফরয নামায আদায়ের ইচ্ছা করলে
অবতরণ করতেন এবং কিবলা মুখী হয়ে নামায আদায় করতেন।[18]
সুতরাং
বিতর নামায যদি ফরয বা ওয়াজিব হত তবে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনই তা আরোহীর উপর বসে পড়তেন না।
৬) অনুরূপভাবে কোন ফরয বা ওয়াজিব নামাযের রাকাত সংখ্যায় মুছল্লীকে এমন কোন ¯^axbZ দেয়া
হয়নি যে, মনে চাইলে এত রাকাত পড়বে বা
পড়বে না। কিন্তু সুন্নাত-নফল নামাযের রাকাতের ক্ষেত্রে এই ¯^axbZ দেয়া হয়েছে। যেমন বিতর নামাযের
ব্যাপারে বলা হয়েছেঃ
]عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الأَنْصَارِيِّ قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْوِتْرُ
حَقٌّ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ فَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِخَمْسٍ فَلْيَفْعَلْ
وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِثَلاثٍ فَلْيَفْعَلْ وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ
بِوَاحِدَةٍ فَلْيَفْعَلْ[
আবু আইয়্যুব
আনছারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রত্যেক মুসলামনের উপর হক হচ্ছে বিতর নামায আদায় করা। অতএব
যে পাঁচ রাকাত বিতর পড়তে চায় সে পাঁচ, যে তিন রাকাত পড়তে চায় সে তিন এবং এক রাকাত
বিতর পড়তে চায় সে এক রাকাত পড়তে পারে।[19]
এই হাদীছ
থেকে বুঝা যায়, যদি বিতর নামায ফরযের মত অবশ্যই
পড়তে হবে এমন নামায হত, তবে নির্দিষ্ট
করে তার রাকাত সংখ্যা বেঁধে দেয়া হত এবং কখনই তা মুছল্লীর BQ-¯^axbতাi উপর ছেড়ে দেয়া হত না।
অবশ্য
বিতর নামায ওয়াজিব না হলেও তা বিনা কারণে ছেড়ে দেয়া ঠিক নয়। এতে ব্যক্তি বিপুল পরিমাণ
কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়। সুতরাং এ ব্যাপারে অলসতা করা কোন মুমিন ব্যক্তির উচিত নয়। কেননা
উহা একটি লাল উট তথা মূল্যবান সম্পদের চাইতে বেশী উত্তম।
বিতর
নামাযকে ওয়াজিব বলার পক্ষে দলীল এবং তার জবাব
নিম্নে
ওয়াজিবের অর্থ বহণ করে এমন দলীল সমূহ উল্লেখ করে তার জবাব প্রদান করা হচ্ছেঃ
১) আমর বিন আস (রাঃ) একদা জুমআর খুতবা প্রদান কালে বলেন, আবু বাছরা (রাঃ) আমার কাছে হাদীছ বর্ণনা
করেছেন যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন,
]إِنَّ اللَّهَ زَادَكُمْ صَلاةً وَهِيَ
الْوِتْرُ فَصَلُّوهَا فِيمَا بَيْنَ صَلاةِ الْعِشَاءِ إِلَى صَلاةِ الْفَجْرِ[
নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের জন্য একটি নামায বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। উহা হচ্ছে বিতর নামায।
তোমরা উহা ফজর ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে আদায় কর।[20]
বর্তমান
যুগের শ্রেষ্ট মুহাদ্দিছ ও আলেম আল্লামা শায়খ আলবানী তাঁর বিখ্যাত হাদীছের সংকলন ‘সিলসিলা
ছহীহা’ (১/২২২) গ্রন্থে এই হাদীছটি উল্লেখ করে
বলেন,
‘এই হাদীছের
বাহ্যিক অর্থ অনুযায়ী বিতর নামায ওয়াজিব প্রমাণিত হয়। হানাফী আলেমগণ একথাই বলেন। কিন্তু
ইহা জমহূর তথা অধিকাংশ বিদ্বানের বিপরীত মত। অকাট্য দলীল প্রমাণ দ্বারা যদি একথা প্রমাণিত
না হত যে, দিন-রাতে শুধুমাত্র পাঁচ ওয়াক্ত
নামাযই ফরয এর বেশী নয়, তবে হানাফী
ভাইদের কথা অধিক বিশুদ্ধ প্রমাণিত হত।’ তিনি আরো বলেন, ‘হানাফী বিদ্বানগণ তাদের দাবীর পক্ষে যুক্তি
দিতে গিয়ে বলেন, বিতর নামায হুবহু পাঁচ ওয়াক্ত
নামাযের মত ফরয নয়। উহা ফরয ও সুন্নাতের মধ্যবর্তী স্থানে একটি আবশ্যকীয় আমল। এই আমলটি
প্রমাণের দিক থেকে ফরযের চাইতে নিম্নে কিন্তু তাগিদের দিক থেকে সুন্নাতের চাইতে অধিক
শক্তিশালী।
জেনে
রাখা আবশ্যক যে, হানাফী মাযহাবের এই পরিভাষাটি
তাদের নিজস্ব এবং সম্পূর্ণ নতুন। ছাহাবায়ে কেরাম বা পূর্ববর্তী বিদ্বানগণ তার সাথে
পরিচিত ছিলেন না। এই পরিভাষা মতে ওয়াজিব বিষয় মর্যাদা, গুরুত্ব ও প্রতিদানের ক্ষেত্রে ফরযের চাইতে
কম।
তাদের
এই কথানুযায়ী এর অর্থ দাঁড়ায়: ক্বিয়ামত দিবসে বিতর নামায পরিত্যাগকারীর শাস্তি হবে
ফরয নামায পরিত্যাগকারীর চাইতে কম। এই সময় তাদেরকে আমরা বলবঃ যে লোক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের
অতিরিক্ত কোন নামায আদায় না করার ব্যাপারে দৃঢ় কথা বলে, কিভাবে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তার সম্পর্কে বলতে পারেন, লোকটি
মুক্তি পেয়ে যাবে।?[21]
কিভাবে
শাস্তির সাথে মুক্তি একত্রিত হতে পারে? কোন সন্দেহ নেই যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর উক্ত বাণীই এটা প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট যে, বিতর নামায ওয়াজিব নয়। আর এ জন্যই অধিকাংশ
উলামায়ে কেরাম ঐকমত্য হয়েছেন যে, বিতর নামায সুন্নাত; উহা ওয়াজিব
নয়। আর এটাই হক ও ধ্রুব সত্য।’[22]
২) আমর বিন শুআইব থেকে বর্ণিত। তিনি তাঁর পিতা থেকে তিনি তাঁর
দাদা আবদুল্লাহ্ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেনঃ
]أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ اللَّهَ زَادَكُمْ صَلاةً
فَحَافِظُوا عَلَيْهَا وَهِيَ الْوَتْرُ[
রাসূলুল্লাহ্
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের জন্য একটি নামায বৃদ্ধি করেছেন। তোমরা
উহার সংরক্ষণ কর। উহা হচ্ছে বিতর নামায।[23]
এই হাদীছ
দ্বারা বিতর নামায ওয়াজিব একথা সাব্যস্ত হয় না। এখানে বৃদ্ধি করার অর্থ ইহসান ও অনুগ্রহের
দিক থেকে- তথা আল্লাহ্ আমাদের প্রতি একটি অনুগ্রহ বৃদ্ধি করেছেন। অথবা অর্থ হবে গুরুত্ব
ও ফযীলতের দিক থেকে- তথা একটি ফযীলতপূর্ণ আমল আল্লাহ আমাদের জন্য বৃদ্ধি করেছেন।
এই জন্য
মুনাবী বলেন, বৃদ্ধিকৃত নামায যে মূল (ফরয)
নামাযের মধ্যেই শামিল হতে হবে এটা আবশ্যক নয়। একথার পক্ষে দলীল হচ্ছে, মারফূ’ সূত্রে আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ, তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন, নিশ্চয় তোমাদের নামাযের সাথে
আরেকটি নামায আল্লাহ্ বৃদ্ধি করেছেন। উহা তোমাদের জন্য একটি লাল উটের চাইতে উত্তম।
আর তা হচ্ছে ফজর নামাযের পূর্বে দু’রাকাত নামায।[24]
তানক্বীহুত্
তাহক্কীক গ্রন্থের
লিখক বলেন, ‘হাদীছটি বাইহাক্বী ছহীহ সনদে বর্ণনা করেন।’ ইমাম যায়লাঈ বলেন, হাদীছটি ইমাম হাকেম মুস্তাদরাকে ¯^xq সনদে বর্ণনা করে বলেন, হাদীছটি ছহীহ। অতঃপর তিনি ইবনু খুযায়মা
থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, যদি এই হাদীছের জন্য সফর করা আমার জন্য
সম্ভব হত, তবে আমি সফর করতাম।[25]
৩) আবদুল্লাহ্ বিন বুরায়দা থেকে বর্ণিত। তিনি তাঁর পিতা থেকে
বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]الْوِتْرُ حَقٌّ فَمَنْ لَمْ يُوتِرْ
فَلَيْسَ مِنَّا الْوِتْرُ حَقٌّ فَمَنْ لَمْ يُوتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا الْوِتْرُ
حَقٌّ فَمَنْ لَمْ يُوتِرْ فَلَيْسَ مِنَّا.[
বিতর নামায হক বা আবশ্যক। যে বিতর পড়বে না সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়। বিতর নামায
হক বা আবশ্যক। যে বিতর পড়বে না সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়। বিতর নামায হক বা আবশ্যক।
যে বিতর পড়বে না সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়।[26]
এই হাদীছটি
যঈফ। কেননা এর সনদে উবাইদুল্লাহ্ বিন আবদুল্লাহ্ আল আতাক্বী আল মারওয়াযী যঈফ।[27]
এই কারণে এই হাদীছ দলীল হওয়ার উপযুক্ত নয়।
৪) আবদুল্লাহ্ বিন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন,
الوِتْرُ واَجِبٌ
عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ
এর সনদে
জাবের জুফী নামক জনৈক বর্ণনাকারী আছে, অধিকাংশ মুহাদ্দেছীনের মতে সে যঈফ বা দুর্বল।[29]
অতএব এই হাদীছ দ্বারাও দলীল গ্রহণ করা সঠিক হবে না।
৫) মুআ’য বিন জাবাল (রাঃ) একদা শাম গমণ করে দেখেন
সেখানকার লোকেরা বিতর নামায পড়েনা। তিনি মুআ’বিয়া
(রাঃ)কে বললেন, কি ব্যাপার এদেশের লোকেরা দেখছি
বিতর নামায পড়ে না? মুআ’বিয়া
বললেন, এ নামায কি ওয়াজিব নাকি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমার পালনকর্তা আমার জন্য একটি নামায বৃদ্ধি করেছেন। উহা হচ্ছে বিতর নামায। এর
সময় হচ্ছে এশা থেকে নিয়ে ফজর উদিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত।[30]
এই হাদীছটি
যঈফ। কেননা উহা যঈফ হওয়ার পিছনে তিনটি কারণ ক্রিয়াশীল রয়েছে। ১) হাদীছের বর্ণনাকারী
‘উবাইদুল্লাহ্
বিন যাহার’ সম্পর্কে ইবনুল জাওযী বলেন, ইবনু মাঈন বলেছেন: সে কিছুই নয়। ইবনু হিব্বান
তার সম্পর্কে বলেন, সে নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের
বরাত দিয়ে জাল হাদীছ বর্ণনা করত। ২) আরেক বর্ণনাকারী আবদুর রহমান বিন রাফে’ তানূখী যঈফ। ইমাম বুখারী তার সম্পর্কে
বলেন, তার হাদীছে অনেক মুনকার বা অগ্রহণযোগ্য
বিষয় রয়েছে। ৩) হাদীছটি মুনকাত্বা[31] কেননা আবদুর রহমান বিন রাফে আযের
(রাঃ) সাক্ষাত পাননি।[32]
বিতর
নামাযের সময়
এ নামাযের
সময় হল, এশার নামাযের পর থেকে নিয়ে ফজর
উদিত হওয়ার আগ পর্যন্ত। উক্ত সময়ের মধ্যবর্তী সময়ে এ নামায আদায় করবে; যেমন ইতিপূর্বে খারেজা ইবনে হুযাফা (রাঃ)
বর্ণিত হাদীছে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে শেষ
রাত্রে অর্থাৎ ফজরের পূর্বে আদায় করা উত্তম। ছহীহ হাদীছে প্রমাণিত হয়েছে যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কখনো রাতের প্রথম ভাগে কখনো দ্বিতীয় ভাগে এবং অধিকাংশ সময় শেষ ভাগে বিতর নামায পড়েছেন।
]عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ مِنْ
كُلِّ اللَّيْلِ قَدْ أَوْتَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
مِنْ أَوَّلِ اللَّيْلِ وَأَوْسَطِهِ وَآخِرِهِ فَانْتَهَى وِتْرُهُ إِلَى
السَّحَرِ[
আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাতের প্রত্যেকভাগে রাসূলুল্লাহ্
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিতর নামায পড়েছেন। রাতের প্রথমভাগে, রাতের মধ্যভাগে অতঃপর রাতের শেষভাগে বিতর পড়া তাঁর অভ্যাসে পরিণত হয়।[33]
জাবের
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন,
]مَنْ خَافَ أَنْ لا يَقُومَ مِنْ آخِرِ
اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ أَوَّلَهُ وَمَنْ طَمِعَ أَنْ يَقُومَ آخِرَهُ فَلْيُوتِرْ
آخِرَ اللَّيْلِ فَإِنَّ صَلاةَ آخِرِ اللَّيْلِ مَشْهُودَةٌ وَذَلِكَ أَفْضَلُ[
যে ব্যক্তি এই আশংকা করে যে, শেষ রাতে নফল নামায পড়ার জন্য উঠতে পারবে
না, তবে সে যেন রাতের প্রথমভাগেই বিতর নামায পড়ে নেয়। আর যে ব্যক্তি
শেষ রাতে ক্বিয়াম করার আগ্রহ রাখে সে যেন শেষ রাতেই বিতর নামায পড়ে। কেননা শেষ রাতের
নামাযে ফেরেশতাগণ উপস্থিত হন। আর এটাই উত্তম।[34]
]عَنْ عَبْدِاللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِي اللَّه
عَنْهمَا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اجْعَلُوا آخِرَ صَلاتِكُمْ بِاللَّيْلِ وِتْرًا[
আবদুল্লাহ্
বিন ওমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা তোমাদের রাতের নামাযের
সর্বশেষে বিতর নামায আদায় করবে।[35]
রাতের
শেষভাগে বিতর নামায পড়া মর্যাদা সম্পন্ন ও উত্তম হওয়ার জন্য নিম্ন লিখিত হাদীছটিতেও
ইঙ্গিত পাওয়া যায়ঃ
]عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا مَضَى
شَطْرُ اللَّيْلِ أَوْ ثُلُثَاهُ يَنْزِلُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى إِلَى
السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ هَلْ مِنْ سَائِلٍ يُعْطَى هَلْ مِنْ دَاعٍ
يُسْتَجَابُ لَهُ هَلْ مِنْ مُسْتَغْفِرٍ يُغْفَرُ لَهُ حَتَّى يَنْفَجِرَ
الصُّبْحُ[
আবু হুরায়রা
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, রাতের অর্ধেক অথবা দুই তৃতীয়াংশ
সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা’আলা দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন অতঃপর বলেন, আছে কি কোন প্রার্থনাকারী তাকে প্রদান করা হবে, আছে কি কোন আহবানকারী
তার দুআ কবূল করা হবে, আছে কি কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী তাকে ক্ষমা করা হবে। এভাবে ফজর
পর্যন্ত ডাকতে থাকেন।[36]
কিন্তু
কোন লোক শেষ রাতে জাগতে পারবে না যদি এরকম আশংকা রাখে তবে তার জন্য রাতের প্রথমাংশেই
বিতর পড়ে নেয়া উত্তম।
]عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِي اللَّه عَنْه قَالَ أَوْصَانِي خَلِيلِي بِثَلاثٍ لا أَدَعُهُنَّ حَتَّى أَمُوتَ
صَوْمِ ثَلاثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَصَلاةِ الضُّحَى وَنَوْمٍ عَلَى
وِتْرٍ[
আবু হুরায়রা
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার প্রাণপ্রিয় বন্ধু আমাকে
তিনটি বিষয়ে উপদেশ দিয়েছেন, মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত আমি উহা পরিত্যাগ
করব না। ১) প্রত্যেক মাসে তিনটি নফল রোযা (প্রত্যেক আরবী মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) ২) চাশতের নামায (ছালাতুয্ যুহা), ৩) নিদ্রা যাওয়ার
পূর্বে বিতর নামায পড়া।[37]
হাফেয
ইবনু হাজার বলেন, এ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয়
যে, নিদ্রা যাওয়ার পূর্বে বিতর পড়া
মুস্তাহাব। এটা ঐ ব্যক্তির জন্য যে নিদ্রা থেকে জাগ্রত হয়ে বিতর পড়ার ব্যাপারে নিশ্চিত
থাকবে না।
নবী (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিতরের শেষ সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
]عَنْ أَبِي سَعِيدٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى
اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَوْتِرُوا قَبْلَ أَنْ
تُصْبِحُوا[
আবু সাঈদ
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন, ফজর হওয়ার পূর্বে
তোমরা বিতর নামায আদায় করে নাও।[38]
অন্য
বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
]عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى
اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ بَادِرُوا الصُّبْحَ
بِالْوِتْرِ[
ইবনু
উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সকাল হওয়ার আগেই তোমরা দ্রুত
বিতর পড়ে নাও।[39]
কেননা
ফজর উদিত হয়ে গেলে রাতের নামাযের আর সময় অবশিষ্ট থাকে না।
]عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّه
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ فَقَدْ
ذَهَبَ كُلُّ صَلاةِ اللَّيْلِ وَالْوِتْرُ فَأَوْتِرُوا قَبْلَ طُلُوعِ الْفَجْرِ[
ইবনু
উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ফজর উদিত হয়ে গেলে রাতের সকল
নামায এবং বিতর নামাযের সময় শেষ হয়ে যায়। অতএব তোমরা ফজরের পূর্বেই বিতর নামায আদায়
করে নাও।[40]
বিতর
নামাযের রাকাত সংখ্যা ও তার পদ্ধতি
বিতর
নামায মূলতঃ তাহাজ্জুদ নামাযের অংশ। তাই রাত্রের পূরা কিয়ামুল্লায়লকেও বিভিন্ন হাদীছে
বিতর বলা হয়েছে।[41]
এই জন্যই পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিতর নামাযের উত্তম সময় হচ্ছে শেষ রাত- যখন তাহাজ্জুদ নামায পড়া হয়। কিন্তু সঙ্গত
কারণ থাকলে তা এশার নামাযের সাথে পড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে- এই নামাযের প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ
করার জন্য।
বিতর
নামাযের রাকাত সংখ্যা নির্দিষ্ট একটি সংখ্যায় সীমাবদ্ধ নয় এ নামায ১, ৩, ৫, ৭, ৯, ১১ ও ১৩ রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়।
ক) এক রাকাত বিতর:
এক রাকাত
বিতর পড়ার নিয়ম হল, নিয়ত বেঁধে ছানা, সূরা ফাতিহা এবং অন্য একটি সূরা পড়ে রুকূ
করবে। রুকূ থেকে উঠে দুআ কুনূত পড়বে। তারপর দু’টি সিজদা
করে তাশাহুদ, দরূদ ও দুআ পড়ে সালাম ফিরাবে।
আবদুল্লাহ
ইবনে উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
]كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى وَيُوتِرُ بِرَكْعَةٍ[
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের নফল নামায দু’দু রাকাত করে পড়তেন এবং এক রাকাত বিতর পড়তেন।[42]
আবদুল্লাহ
ইবনে উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে আরো বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেন,
]الْوِتْرُ رَكْعَةٌ مِنْ آخِرِ
اللَّيْلِ[
]عَنْ أَبِي مِجْلَزٍ قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ
عَبَّاسٍ عَنِ الْوِتْرِ فَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ يَقُولُ رَكْعَةٌ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ وَسَأَلْتُ
ابْنَ عُمَرَ فَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
يَقُولُ رَكْعَةٌ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ[
আবু মিজলায
হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)কে বিতর নামায সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বিতর হচ্ছে শেষ রাতে এক রাকাত
নামায। তিনি
বলেন, ইবনু ওমরকেও এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস
করেছি। তিনিও বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বিতর হচ্ছে শেষ রাতে এক রাকাত নামায।[44]
ইমাম
নবুবী বলেন, এসকল হাদীছ থেকে দলীল পাওয়া
যায় যে, বিতর নামায এক রাকাত পড়া বিশুদ্ধ
এবং তা শেষ রাতে আদায় করা মুস্তাহাব।[45]
আবু আইয়্যুব
আনছারী (রাঃ) বর্ণিত হাদীছেও এক রাকাতের কথা প্রমাণিত হয়েছে। সেই হাদীছে নবী (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ... যে এক রাকাত বিতর পড়তে চায় সে
এক রাকাত পড়তে পারে।[46]
সাহাবীদের
মধ্যে আবু বকর, ওমর, ওছমান, আলী, সা’দ ইবনে
আবী অক্কাস, মুআয বিন জাবাল, উবাই বিন কা’ব, আবু মূসা আশআরী, আবু দারদা, হুযায়ফা, ইবনে মাসঊদ, ইবনে ওমর, ইবনে আব্বাস, আবু হুরায়রা, মুআবিয়া, তামীম দারী, আবু আইয়্যুব আনসারী (রাযিআল্লাহু আনহুম)
প্রমুখ এবং তাবেঈদের মধ্যে ইমাম যুহরী, হাসান বাছরী, মুহাম্মাদ বিন সীরীন, সাঈদ বিন যুবাইর (রহঃ) প্রমুখ আর প্রচলিত
চার মাযহাবের তিন ইমাম ইমাম মালেক, শাফেয়ী, আহমাদ (রহঃ) প্রমুখও এক রাকাত
বিতর পড়ার পক্ষপাতি ছিলেন।[47]
সা’দ বিন
আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর মসজিদে এশা নামায আদায়
করতেন, অতঃপর এক রাকাত বিতর পড়তেন, এর বেশী নয়। তাঁকে বলা হত, আবু ইসহাক্ব? আপনি এক রাকাতের বেশী বিতর আদায় করেন না? তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি বিতর না পড়ে নিদ্রা যায় না সে দৃঢ়তা সম্পন্ন লোক।[48]
শায়খ
আলবানী বলেন, হানাফী মাযহাবের কোন কোন আলেম
বলেন, তিন রাকাতের নীচে কোন নামায
নেই। তথা তিন রাকাত বিতর পড়ার ব্যাপারে এজমা (সকলের ঐক্যমত) হয়ে গেছে। কিন্তু তাদের
এই দাবী দলীল বিহীন। কেননা আমরা দেখেছি ছাহাবীদের মধ্যে অনেকেই এক রাকাত বিতর পড়েছেন।[49]
অতএব
যারা বলেন, এক রাকাত কোন নামাযই নেই, তাদের জন্য উল্লেখিত আলোচনায় শিক্ষণীয়
বিষয় আছে। কেননা ¯^qs নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক রাকাত বিতর নামায আদায় করতেন। ছাহাবায়ে
কেরামের মধ্যেও অনেকে এক্ষেত্রে তাঁর অনুসরণ করেছেন।
ইমাম
শাফেয়ী বলেন, মুসলমানগণ একথার উপর ঐকমত্য
হয়েছে যে, কারো নিকট যদি রাসূলুল্লাহ্
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সুন্নাত সুষ্পষ্টরূপে প্রমাণিত হয়, তবে কারো কথা মত উহা পরিত্যাগ করা বৈধ
নয়।
মহান
আল্লাহ্ বলেন,
]فَلْيَحْذَرْ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ
عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ[
যারা তাঁর (রাসূলের) নির্দেশের বিপরীত চলে, তারা সতর্ক হয়ে যাক
যে, তারা ফেতনায় পড়ে যাবে অথবা কঠিন শাস্তি তাদেরকে স্পর্শ করবে।[50]
খ) তিন
রাকাত বিতরঃ
এ নামায পড়ার বিশুদ্ধ পদ্ধতি
হচ্ছে দু’টি।
প্রথম
পদ্ধতিঃ দু’রাকাত পড়ে সালাম ফেরানো। অতঃপর এক রাকাত
পড়া। এ পদ্ধতির দলীল হলো- আবদুল্লাহ্ ইবনে উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
]أَنَّ رَجُلا سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ صَلاةِ اللَّيْلِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ عَلَيْهِ
السَّلَام صَلاةُ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى فَإِذَا
خَشِيَ أَحَدُكُمُ الصُّبْحَ صَلَّى رَكْعَةً وَاحِدَةً تُوتِرُ لَهُ مَا قَدْ
صَلَّى [
জনৈক
ছাহাবী রাতের নামায সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে জিজ্ঞেস
করল। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, রাতের নামায দু’দু রাকাত করে, যখন ফজর হওয়ার আশংকা করবে তখন এক রাকাত
বিতর পড়ে নিবে।[51]
এ পদ্ধতি
অনুযায়ী বিতর মূলত এক রাকাতই। দু’রাকাত পড়ে সালাম ফিরানো অতঃপর এক রাকাত
পড়া। যেমন ইবনে ওমর (রাঃ)কে জিজ্ঞেস করা হল দু’দু রাকাত
মানে কি? তিনি বললেন: প্রত্যেক দু’রাকাত
পর পর সালাম ফিরাবে।[52]
ইবনে ওমর (রাঃ), ইমাম মালেক, শাফেয়ী, আহমাদ, ইসহাক, প্রমুখ এভাবেই বিতর পড়তেন।[53]
ইবনে
উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে আরো বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বিতর নামায সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, দু’রাকাত
এবং এক রাকাতের মাঝে সালাম ফিরে পার্থক্য করে নিবে।[54]
আয়েশা
(রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন:
]عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي فِي الْحُجْرَةِ
وَأَنَا فِي الْبَيْتِ فَيَفْصِلُ بَيْنَ الشَّفْعِ وَالْوَتْرِ بِتَسْلِيمٍ
يُسْمِعُنَاهُ[
আমি বাড়ীতে থাকাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কক্ষের মধ্যে
নামায পড়তেন। তিনি দু’রাকাত এবং এক রাকাতের মাঝে পৃথক
করতেন, এসময় তিনি আমাদেরকে শুনিয়ে জোরে সালাম দিতেন।[55]
হযরত
আয়েশা (রাঃ) আরো বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এক রাকাত বিতর পড়তেন। তিনি দু’রাকাত
এবং এক রাকাতের মাঝে কথা বলতেন।[56]
]عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَاللَّهِ بْنَ عُمَرَ
كَانَ يُسَلِّمُ بَيْنَ الرَّكْعَةِ وَالرَّكْعَتَيْنِ فِي الْوِتْرِ حَتَّى
يَأْمُرَ بِبَعْضِ حَاجَتِهِ[
নাফে’ বলেন, আবদুল্লাহ্ বিন ওমর (রাঃ) বিতরের দু’রাকাত
এবং এক রাকাতের মাঝে সালাম ফিরাতেন এবং কোন দরকারী বিষয় থাকলে তার নির্দেশ দিতেন।[57]
দ্বিতীয়
পদ্ধতিঃ দু’রাকাত পড়ে তাশাহুদের জন্য না বসে সালাম
না ফিরিয়ে একাধারে তিন রাকাত পড়ে সালাম ফেরানো। এ কথার দলীল, হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তিনি রাকাত বিতর নামায পড়তেন। এর মধ্যে তাশাহুদের জন্যে বসতেন না, একাধারে তিন রাকাত পড়ে শেষ রাকাতে বসতেন
ও তাশাহুদ পড়তেন। এভাবেই বিতর পড়তেন আমীরুল মু’মেনীন
হযরত ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ)।[58]
একাধারে
তিন রাকাত বিতর পড়ার ইঙ্গিতে আরেকটি হাদীছ পাওয়া যায়। উবাই বিন কা’ব (রাঃ)
বলেন,
]كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الْوِتْرِ (بِسَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى)
وَفِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ (بِقُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ) وَفِي
الثَّالِثَةِ (بِقُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ) وَلا يُسَلِّمُ إِلاَّ فِي آخِرِهِنَّ[
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিতর নামাযে প্রথম রাকাতে ‘সাব্বেহিসমা রাব্বিকাল আ’লা’, দ্বিতীয় রাকাতে ‘কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফেরূন’ এবং তৃতীয় রাকাতে ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ পড়তেন। আর সবগুলো
রাকাত শেষ করেই সালাম ফেরাতেন।[59]
মাগরিবের
মত তিন রাকাত বিতর পড়া
তিন রাকাত
বিতরের ক্ষেত্রে উল্লেখিত দু’টি পদ্ধতি ছাড়া আরো একটি পদ্ধতি আছে তা
হলো বিতর নামাযকে মাগরিবের নামাযের মত করে পড়া। অর্থাৎ- দু’রাকাত
পড়ে তাশাহুদ পড়ে সালাম না ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে পড়া ও এক রাকাত পড়া। যেমন আমাদের সমাজে সচরাচর
হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিটির পক্ষে দলীল হলো-
আবদুল্লাহ
ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]وتر الليل ثلاث ركعات كوتر النهار[
এ হাদীছটি
ইমাম দারাকুতনী বর্ণনা করে বলেন, হাদীছটি ছহীহ নয়; উহা যঈফ।
ইমাম
বাইহাক্বী বলেন, হাদীছটি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত হলেও তা মূলতঃ ইবনে মাসউদের নিজস্ব কথা হিসেবে প্রমাণিত।[61]
বিতর
নামায মাগরিবের মত আদায় করার ব্যাপারে আরেকটি যুক্তি পেশ করা হয়। তা হচ্ছেঃ ছহীহ হাদীছে
বর্ণিত হয়েছে,
]المغرب وتر النهار فأوتروا صلاة الليل[
ব্যাখ্যাঃ
এ হাদীছ থেকে বুঝা যায়, রাতের
বিতর মাগরিবের মত করেই আদায় করতে হবে।
কিন্তু
এই ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা এখানে রাকাতের সংখ্যার দিক থেকে যেমন মাগরিব নামায
বিতর তথা বেজোড় করা হয়, অনুরূপ
রাতেও বিতর তথা বেজোড় নামায আদায় করবে- উক্ত নামায আদায় করার জন্য মাগরিবের মত দু’ই তাশাহুদে
পড়তে হবে একথা বলা হয়নি। এখানে রাকাতের সংখ্যার দিক থেকে বিতরকে মাগরিবের মত বলা হয়েছে-
পদ্ধতির দিক থেকে নয়। এই কারণেই অন্য হাদীছে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বিতর নামাযকে মাগরিবের সাথে সাদৃশ্য করে পড়তে নিষেধ করেছেন।
আবু হুরায়রাহ্
(রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]لاَ تُوترُوا بِِثَلاَثٍ تَشَبَّهُوا
بِصَلاَةِ المَغْرِبِ، ولكِنْ أوْتِرُوا بِخَمْسٍ أو بسبعٍ أو بِتِسْعٍ أوْ بِِاحدَى
عَشَرَة[
তোমরা মাগরিবের নামাযের সাথে সাদৃশ্য করে তিন রাকাত বিতর পড়না; বরং পাঁচ রাকাত দ্বারা বা সাত রাকাত দ্বারা বা নয় রাকাত দ্বারা কিংবা এগার রাকাত
দ্বারা বিতর পড়।[63]
শায়খ
আলবানী বলেন, ‘তিন রাকাত বিতর দু’তাশাহুদে
পড়লেই তা মাগরিবের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়। আর হাদীছে এটাকেই নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু
যদি একেবারে শেষ রাকাতে বসে তবে কোন সাদৃশ্য হবে না। হাফেয ইবনু হাজার ফাতহুল বারীতে[64]
একথাই উল্লেখ করেছেন এবং ছানআনী সুবুলস্ সালামে[65]
এই পদ্ধতিকে উত্তম বলেছেন।’[66]
সুতরাং
প্রমাণিত হলো যে, বিতর নামাযকে মাগরিবের মত করে
আদায় করা তথা দু’তাশাহুদে অর্থাৎ- দু’রাকাতের পর তাশাহুদ পড়ে সালাম না ফিরিয়ে এক রাকাত পড়া সুন্নাতের
পরিপন্থী যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
অনেকে
বলতে পারেন, আমরা ক্বনূত, ক্বিরাত ও বর্ধিত তাকবীরের মাধ্যমে মাগরিব
থেকে পার্থক্য করে নেই। কিন্তু একথা গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা বিতর নামাযে ক্বনূত পাঠ করা
ঐচ্ছিক বা মুস্তাহাব বিষয়।[67]
তাছাড়া নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাগরিবের নামাযেও ক্বনূত পড়েছেন।[68]
আর ছহীহ্ হাদীছের ভিত্তিতে ফরয ছালাতের সমস্ত রাকাতে সূরা মিলানো যায়।[69]
বিতর নামাযে বর্ধিত তাকবীরের তো কোন ভিত্তিই নেই।[70]
সুতরাং প্রচলিত নিয়মে বিতর পড়লে তথা দু’রাকাত পড়ে তাশাহুদে বসে সালাম
না ফিরিয়েই আরেক রাকাত পড়লে তা মাগরিবের সাথে মিলে যায় এবং হাদীছের নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত
হয়। অতএব এই নিয়মে বিতর পড়া উচিত নয়।
শায়খ
আলবানী বলেন, মাগরিবের মত করে দু’তাশাহুদে
বিতর নামায সুস্পষ্ট ছহীহ্ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয়। এই কারণে আমরা বলব, তিন রাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে মধ্যখানে তাশাহুদের
জন্য বসবে না। আর বসলে সালাম ফিরিয়ে দিবে। তারপর এক রাকাত পড়বে। আর তিন রাকাতের ক্ষেত্রে
এটাই উত্তম পদ্ধতি।[71]
গ) পাঁচ
রাকাত বিতর:
]عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الأَنْصَارِيِّ قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْوِتْرُ
حَقٌّ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ فَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِخَمْسٍ فَلْيَفْعَلْ
وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِثَلاثٍ فَلْيَفْعَلْ وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ
بِوَاحِدَةٍ فَلْيَفْعَلْ[
আবু আইয়্যুব
আনছারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রত্যেক মুসলমানের উপর হক হচ্ছে বিতর নামায আদায় করা। অতএব
যে পাঁচ রাকাত বিতর পড়তে চায় সে পাঁচ, যে তিন রাকাত পড়তে চায় সে তিন এবং এক রাকাত
বিতর পড়তে চায় সে এক রাকাত পড়তে পারে।[72]
]عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ
النَّبِيَّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُوتِرُ بِخَمْسٍ وَلا
يَجْلِسُ إِلَّا فِي آخِرِهِنَّ[
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঁচ রাকাত বিতর পড়তেন। এর মধ্যে কোথাও বসতেন না একেবারে শেষ রাকাতে
বসতেন।[73]
ঘ) সাত
রাকাত বিতরঃ
আয়েশা (রাঃ) বলেন,
আয়েশা (রাঃ) বলেন,
]فَلَمَّا سَنَّ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى
اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَخَذَهُ اللَّحْمُ أَوْتَرَ بِسَبْعٍ[
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বয়স্ক হয়ে যাওয়ার কারণে শরীর ভারি হয়ে গেলে
সাত রাকাত বিতর পড়েছেন।[74]
এই সাত
রাকাত পড়ার ক্ষেত্রে দু’রকম নিয়ম পাওয়া যায়। (১) সাত রাকাত একাধারে পড়বে। মধ্যখানে
বসবে না তাশাহুদ পড়বে না। (২) ছয় রাকাত একাধারে পড়ে তাশাহুদ পড়বে। অতঃপর সালাম না ফিরিয়েই
সপ্তম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে পড়বে এবং তাশাহুদ পড়ে সালাম ফিরাবে।
প্রথম নিয়মের পক্ষে দলীল হচ্ছেঃ
]عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ لَمَّا
أَسَنَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَخَذَ اللَّحْمَ
صَلَّى سَبْعَ رَكَعَاتٍ لا يَقْعُدُ إِلا فِي آخِرِهِنَّ [
আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বয়স্ক হয়ে গেলে এবং তাঁর শরীর ভারী হয়ে গেলে তিনি সাত রাকাত বিতর
পড়েছেন, একেবারে শেষ রাকাতে তাশাহুদে বসেছেন।[75]
উম্মে সালামা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
]كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُوتِرُ بِخَمْسٍ وَبِسَبْعٍ لا يَفْصِلُ بَيْنَهَا بِسَلامٍ
وَلا بِكَلامٍ[
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঁচ রাকাত এবং সাত রাকাত বিতর
পড়তেন। এ পাঁচ বা সাত রাকাতের মাঝে তিনি সালাম ফেরাতেন না বা কোন কথাও বলতেন না। অর্থাৎ
একাধারে পাঁচ বা সাত রাকাত নামায পড়তেন।[76]
দ্বিতীয়
পদ্ধতির দলীল হচ্ছেঃ
]عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ فَلَمَّا
كَبِرَ وَضَعُفَ أَوْتَرَ بِسَبْعِ رَكَعَاتٍ لا يَقْعُدُ إِلا فِي السَّادِسَةِ ثُمَّ
يَنْهَضُ وَلا يُسَلِّمُ فَيُصَلِّي السَّابِعَةَ ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمَةً[
আশেয়া (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বয়বৃদ্ধ হয়ে গেলে এবং দুর্বল হয়ে পড়লে সাত রাকাত বিতর পড়েছেন।
একাধারে ছয় রাকাত পড়ে তাশাহুদে বসেছেন। তারপর সালাম না ফিরিয়েই দাঁড়িয়ে পড়েছেন এবং
সপ্তম রাকাত পড়েছেন তারপর সালাম ফিরিয়েছেন।[77]
ঙ) নয়
রাকাত বিতর:
এ নামায পড়ার পদ্ধতি হচ্ছে একাধারে আট রাকাত পড়ে বসে তাশাহুদ পড়বে। তারপর দাঁড়িয়ে নবম রাকাত পড়বে এবং তাশাহুদ পড়ে সালাম ফেরাবে।
এ নামায পড়ার পদ্ধতি হচ্ছে একাধারে আট রাকাত পড়ে বসে তাশাহুদ পড়বে। তারপর দাঁড়িয়ে নবম রাকাত পড়বে এবং তাশাহুদ পড়ে সালাম ফেরাবে।
]يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ
وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ كُنَّا
نُعِدُّ لَهُ سِوَاكَهُ وَطَهُورَهُ فَيَبْعَثُهُ اللَّهُ مَا شَاءَ أَنْ
يَبْعَثَهُ مِنَ اللَّيْلِ فَيَتَسَوَّكُ وَيَتَوَضَّأُ وَيُصَلِّي تِسْعَ
رَكَعَاتٍ لا يَجْلِسُ فِيهَا إِلا فِي الثَّامِنَةِ فَيَذْكُرُ اللَّهَ
وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ ثُمَّ يَنْهَضُ وَلَا يُسَلِّمُ ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّ
التَّاسِعَةَ ثُمَّ يَقْعُدُ فَيَذْكُرُ اللَّهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ ثُمَّ
يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا يُسْمِعُنَا[
সা’দ বিন হিশাম (রঃ) বলেন, আমি উম্মুল মুমেনীন আয়েশা (রাঃ)কে প্রশ্ন করলাম, আপনি রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)এর বিতর নামায সম্পর্কে আমাকে বলুন? তিনি বললেন, আমরা তাঁর জন্য মেসওয়াক এবং ওযুর পানি
প্রস্তুত করে রাখতাম। আল্লাহর ইচ্ছায় যখন তিনি জাগ্রত হতেন তখন মেসওয়াক করতেন এবং ওযু
করতেন অতঃপর নয় রাকাত নামায আদায় করতেন। এ সময় মধ্যখানে না বসে অষ্টম রাকাতে বসতেন।
বসে আল্লাহর যিকির করতেন, তাঁর
প্রশংসা করতেন ও দুআ করতেন। অতঃপর সালাম না ফিরিয়েই দাঁড়িয়ে পড়তেন এবং নবম রাকাত আদায়
করতেন। এরপর তাশাহুদে বসে আল্লাহর যিকির করতেন, তাঁর প্রশংসা করতেন ও দুআ করতেন। অতঃপর
আমাদেরকে শুনিয়ে জোরে সালাম ফিরাতেন।[78]
উম্মু
সালামা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তের রাকাত বিতর পড়তেন। যখন বৃদ্ধ ও দুর্বল হয়ে গেছেন তখন নয় রাকাত
বিতর পড়েছেন।[79]
চ) এগার
রাকাত বিতর:
হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে এগার রাকাত নামায পড়তেন, তম্মধ্যে এক রাকাত দ্বারা বিতর পড়তেন। অপর বর্ণনায় বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এশা নামায থেকে ফারেগ হয়ে ফজর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এগার রাকাত নামায পড়তেন। প্রতি দু’রাকাত পড়ে সালাম ফিরাতেন এবং এক রাকাতে বিতর পড়তেন।[80]
হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে এগার রাকাত নামায পড়তেন, তম্মধ্যে এক রাকাত দ্বারা বিতর পড়তেন। অপর বর্ণনায় বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এশা নামায থেকে ফারেগ হয়ে ফজর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এগার রাকাত নামায পড়তেন। প্রতি দু’রাকাত পড়ে সালাম ফিরাতেন এবং এক রাকাতে বিতর পড়তেন।[80]
ছ) তের
রাকাত বিতরঃ
এর দু’টি পদ্ধতিঃ (১) প্রতি দু’রাকাত পড়ে সালাম ফেরাবে এবং শেষে এক রাকাত বিতর পড়বে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামাযের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন,
এর দু’টি পদ্ধতিঃ (১) প্রতি দু’রাকাত পড়ে সালাম ফেরাবে এবং শেষে এক রাকাত বিতর পড়বে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামাযের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন,
]... فَقُمْتُ
إِلَى جَنْبهِ فَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى رَأْسِي وَأَخَذَ بِأُذُنِي
يَفْتِلُهَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ
ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَوْتَرَ ثُمَّ
اضْطَجَعَ حَتَّى جَاءَهُ الْمُؤَذِّنُ فَقَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ
خَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ[
আমি নামাযে গিয়ে তাঁর বাম পার্শ্বে দন্ডায়মান হলাম। তখন তিনি তাঁর ডান হাত আমার
মাথায় দিয়ে ডান কানটি ঘুরিয়ে দিলেন অতঃপর আমাকে ধরে তাঁর ডান দিকে দাঁড় করালেন। তারপর
তিনি দু’রাকাত নামায আদায় করলেন, আবার দু’রাকাত আদায় করলেন, আবার দু’রাকাত আদায় করলেন, আবার দু’রাকাত আদায় করলেন, আবার দু’রাকাত আদায় করলেন, আবার দু’রাকাত আদায় করলেন, তারপর বিতর পড়লেন।
অতঃপর একটু শুয়ে পড়লেন। যখন মুআয্যিন এল, তখন দাঁড়ালেন এবং
হালকা করে দু’রাকাত নামায আদায় করলেন। এরপর ঘর থেকে
বের হয়ে ফজরের নামায আদায় করলেন।[81]
(২) তের রাকাত নামায দু’দু রাকাত
করে পড়বে এবং শেষে একাধারে পাঁচ রাকাতের মাধ্যমে বিতর পড়বে। আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
]كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ثَلاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً يُوتِرُ
مِنْ ذَلِكَ بِخَمْسٍ لا يَجْلِسُ فِي شَيْءٍ إِلا فِي آخِرِهَا[
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে তের রাকাত নামায পড়তেন।
(সর্বশেষে) এর মধ্যে পাঁচ রাকাত দ্বারা বিতর পড়তেন। এই পাঁচ রাকাতের মাঝে বসতেন না
একেবারে শেষে বসতেন।[82]
বিতরে কোন সূরা পাঠ করবে
তিন রাকাত
বিতর নামাযে সূরা ফাতিহার পর সুন্নাতী ক্বেরাত হচ্ছেঃ প্রথম রাকাতে সূরা আলা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফেরূন এবং তৃতীয়
রাকাতে সূরা ইখলাছ পাঠ করা।
]عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ
يُوتِرُ بِثَلاثِ رَكَعَاتٍ كَانَ يَقْرَأُ فِي الأُولَى بِسَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ
الأَعْلَى وَفِي الثَّانِيَةِ بِقُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ وَفِي
الثَّالِثَةِ بِقُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ[
উবাই
বিন কাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিন রাকাত বিতর পড়তেন। তখন তিনি প্রথম রাকাতে পাঠ করতেন সাব্বেহিস্মা
রাব্বিকাল্ আ’লা, দ্বিতীয় রাকাতে পাঠ
করতেন ক্বুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফেরূন এবং তৃতীয় রাকাতে পাঠ করতেন ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ।[83]
বিতর
নামাযের শেষ রাকাতে সূরা ইখলাছের সাথে সূরা ফালাক ও নাস পড়ারও প্রমাণ পাওয়া যায়।
আবদুল
আযীয বিন জুরাইজ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আয়েশা (রাঃ)কে জিজ্ঞেস করলাম রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বিতর নামাযে কি পাঠ করতেন? তিনি বললেন,
]كَانَ يَقْرَأُ فِي الْأُولَى
بِسَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى وَفِي الثَّانِيَةِ بِقُلْ يَا أَيُّهَا
الْكَافِرُونَ وَفِي الثَّالِثَةِ بِقُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ
وَالْمُعَوِّذَتَيْنِ[
তিনি প্রথম রাকাতে (সব্বেহিসমা রাব্বিকাল আ‘লা) পাঠ করতেন, দ্বিতীয় রাকাতে পাঠ করতেন (কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফেরূন) এবং তৃতীয়
রাকাতে পাঠ করতেন, (কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ) এবং মুআব্বেযাতাইন।[84]
***
দুআ ক্বনূতের[85]
বিবরণ
যেহেতু
ইতোপূর্বে প্রমাণিত হয়েছে যে, বিতর নামায ওয়াজিব নয়; বরং তা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। তাই বিতরের মাঝে ক্বনূতও ওয়াজিব নয়; বরং দুআ ক্বনূত বিতর নামাযের জন্য মুস্তাহাব।
শায়খ
আলবানী বলেন, কখনো কখনো নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিতর তথা
বেজোড় রাকাত বিশিষ্ট ছালাতে ক্বনূত করতেন।
তিনি
বলেন, আমরা এজন্য ‘কখনো
কখনো করতেন
বলেছি যে, যে সমস্ত ছাহাবী বিতর সম্পর্কিত
হাদীছ সমূহ বর্ণনা করেছেন, তাঁরা এর মধ্যে কুনূতের কথা উল্লেখ করেননি। যদি সর্বদা তিনি বিতরে ক্বনূত পড়তেন
তবে ছাহাবীগণ তা উল্লেখ করতেন। তবে হ্যাঁ, বিতরে ক্বনূত পড়ার কথা শুধুমাত্র উবাই বিন কা’ব (রাঃ)
কর্তৃক নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। এথেকেই প্রমাণ হয়
যে, তিনি কখনো কখনো উহা করতেন।
তিনি
আরো বলেন, এ থেকে আরো প্রমাণিত হয় যে, বিতরে ক্বনূত পড়া ওয়াজিব নয়। এজন্য হানাফী
মাযহাবের গবেষক আলেম ইবনুল হুমাম ফাতহুল ক্বাদীর গ্রন্থে [১/৩০৬, ৩৫৯, ৩৬০ পৃঃ] ¯^xKi করে বলেছেন, বিতরে ক্বনূত করা ওয়াজিব বলে যে মতটি রয়েছে
তা অত্যন্ত দুর্বল যার পক্ষে কোন (ছহীহ) দলীল সাব্যস্ত হয়নি। নিঃসন্দেহে এ ¯^xK…wZ তাঁর
ন্যায়পরায়নতা ও গোঁড়ামী বর্জনের বড় দলীল। কেননা যে কথাকে তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন তা
হচ্ছে তাঁর মাযহাবের বিপরীত।[86]
এ জন্য
দুআ ক্বনূত সারা বছর পড়তে পারে আবার কখনো পড়বে কখনো ছাড়বে- সবগুলোই জায়েয আছে। কেননা
কোন কোন ছাহাবী ও তাবেঈ থেকে বিতরে ক্বনূত পরিত্যাগ প্রমাণিত হয়েছে। আবার কেউ কেউ শুধুমাত্র
রামাযানের শেষ অর্ধেক ছাড়া সারা বছর আর কখনো ক্বনূত পড়েননি। আবার এটাও প্রমাণিত হয়েছে
যে, অনেকে সারা বছরই ক্বনূত পড়েছেন।[87]
ইমাম
ইবনু তাইমিয়া (রঃ) বলেন, ‘এজন্য
ইমাম মালেক ক্বনূত না পড়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। ইমাম শাফেয়ী শুধুমাত্র রামাযানের শেষ
অর্ধেকে ক্বনূতের পক্ষপাতি ছিলেন। আর ইমাম আবু হানীফা ও আহমাদ সারাবছর ক্বনূত পড়ার
ব্যাপারে মত দিয়েছেন। সবগুল মতই জায়েয। যে কোন একটির উপর আমল করলে তাতে কোন দোষ নেই।’[88]
দুআ ক্বনূত
রুকূর আগে না পরে?
বিতর
নামাযের শেষ রাকাতে ক্বেরাত পড়ার পর রুকূর পূর্বে অথবা রুকূ থেকে উঠার পর- উভয় অবস্থায়
দুআ ক্বনূত পড়া জায়েয।
রুকূর
পূর্বে ক্বনূত পড়ার দলীলঃ উবাই বিন কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
]أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُوتِرُ فَيَقْنُتُ قَبْلَ الرُّكُوعِ[
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিতর নামায পড়তেন, তখন রুকূর পূর্বে ক্বনূত পড়তেন।[89]
আলক্বমা
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘ইবনে
মাসঊদ (রাঃ) ও নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর ছাহাবীগণ বিতর নামাযে রুকূর
পূর্বে ক্বনূত পড়তেন।’[90]
রুকূর পর ক্বনূত পড়ার দলীলঃ আবদুর
রহামান বিন আবদুল আলক্বারী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) যখন
লোকদেরকে এক ইমামের পিছনে একত্রিত করলেন, তখন লোকেরা বিতরের ক্বনূতে কাফেরদের প্রতি লা’নত করতেন, অতঃপর দুআ শেষ করে তাকবীর দিয়ে সিজদা করতেন।’[91]
নবী (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরয নামাযে ক্বনূত পড়ার সময় কখনো রুকূর আগে কখনো রুকূর পরে করেছেন।
আনাস
বিন মালেক (রাঃ) বলেন,
]قَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَهْرًا بَعْدَ الرُّكُوعِ يَدْعُو عَلَى أَحْيَاءٍ مِنَ
الْعَرَبِ[
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একমাস রুকূর পর ক্বনূত পাঠ করেছেন, তাতে তিনি আরবের কয়েকটি গোত্রের উপর বদদুআ করছেন।[92]
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ফজর নামাযের ক্বেরাত পাঠ শেষে তাকবীর দিয়ে রুকূ করতেন। রুকূ থেকে উঠে ‘সামিয়্যাল্লাহুলিমান
হামিদাহ্ রাব্বানা লাকাল্ হামদ্’ বলে- দাঁড়ানো অবস্থাতেই তিনি দুআ পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা
আন্জেল্ ওয়ালিদ বিন ওয়ালিদ ....।[93]
ইবনে
আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীছে বলা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঁচ ওয়াক্ত নামায যোহর, আছর, মাগরিব, এশা ও ফজরের নামাযে লাগাতার একমাস ক্বনূত
পাঠ করেছেন। প্রত্যেক নামাযের শেষ রাকাতে ‘সাম্যিাল্লাহুলিমান হামিদাহ্’ বলার পর তিনি দুআ করতেন। সে সময় তিনি বানী
সুলাইম গোত্রের কয়েকটি গোষ্ঠি- রি’ল, যাকওয়ান ও ঊছাই-এর উপর বদদুআ করতেন। আর
পিছনের মুছল্লীগণ তাঁর দুআয় আমীন বলতেন।[94]
আনাস
বিন মালেক (রাঃ) ফজরের নামাযে ক্বনূত পাঠ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে তিনি বলেন, ‘আমরা রুকূর আগে ও পরে ক্বনূত পাঠ করতাম।’[95]
শায়খ
আলবানী বলেন, ‘হাসান সনদে প্রমাণিত হয়েছে যে, আবু বকর, ওমর ও উছমান (রাঃ) রুকূর পর
ক্বনূত পাঠ করতেন।’[96]
সারকথা, দুআ ক্বনূত রুকূর আগে বা পরে যে কোন সময়
পাঠ করা যায়। এতে কোন দোষ নেই। যখন যেভাবে ইচ্ছা পাঠ করতে পারবে।
ফরয নামাযে
ক্বনূত
পর্বেল্লেখিত
হাদীছ সমূহের ভিত্তিতে কাফেরদের পক্ষ থেকে যদি মুসলমানদের উপর বিশেষ কোন বিপদ উপস্থিত
হয়, তখন ক্বনূত পাঠ করা মুস্তাহাব।
যে কোন ফরয নামাযে তা পাঠ করতে পারে। এটাকে বলা হয় ‘ক্বনূতে
নাযেলা’। কাফেরদের উপর বদদুআ অথবা দুর্বল মুসলমানদের উদ্ধারের জন্য দুআ করতে এই ক্বনূত
পাঠ করবে। কারণ দূরীভূত হলে ক্বনূত পড়া পরিত্যাগ করবে। সর্বদা ইহা পাঠ করা উচিত নয়।
কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একমাস কাফেরদের উপর বদদুআ করেছেন। অনুরূপভাবে
খোলাফায়ে রাশাদাও ক্বনূত পাঠ করতেন। কিন্তু তারা উহা সর্বদাই পাঠ করতেন না।[97]
ক্বনূত
পাঠ করার সময় কোন দুআ পড়বে?
১) হাসান
বিন আলী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বিতর নামাযে পাঠ করার জন্য নিম্ন লিখিত দুআটি
শিখিয়েছেনঃ
]اللَّهُمَّ اهْدِنِي فِيمَنْ هَدَيْتَ
وَعَافِنِي فِيمَنْ عَافَيْتَ وَتَوَلَّنِي فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ وَبَارِكْ لِي
فِيمَا أَعْطَيْتَ وَقِنِي شَرَّ مَا قَضَيْتَ فَإِنَّكَ تَقْضِي وَلَا يُقْضَى
عَلَيْكَ وَإِنَّهُ لَا يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ وَلَا يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ
تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ[
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাহ্দিনি ফীমান হাদায়তা ওয়া আফেনী ফীমান আফায়তা, ওয়া তাওয়াল্লানী ফীমান তাওয়াল্লায়তা ওয়া
বারেক লী ফীমা আ’ত্বায়তা, ওয়া ক্বেনী শার্রা মা ক্বাযায়তা, ফা ইন্নাকা তাক্বযী ওয়ালা য়্যুক্বযা আলাইকা, ওয়া ইন্নাহু লা য়্যাযিল্লু মান ওয়ালায়তা, ওয়ালা ইয়েয্যু মান আদায়তা, তাবারাকতা রাব্বানা ওয়া তাআলায়তা।
অর্থঃ হে আল্লাহ্! আমাকে সঠিক পথ দেখিয়ে তাদের অন্তর্ভূক্ত কর যাদের তুমি হেদায়াত করেছ, আমাকে নিরাপদে রেখে তাদের মধ্যে শামিল
কর, যাদের তুমি নিরাপদ রেখেছ। তুমি
আমার অভিভাবকত্ব গ্রহণ করে তাদের মধ্যে শামিল কর যাদের তুমি অভিভাবক হয়েছ। তুমি আমাকে
যা দান করেছ তাতে বরকত দাও। তুমি আমাকে সেই অনিষ্ট থেকে রক্ষা কর যা তুমি নির্ধারণ
করেছ, কারণ তুমি ফায়সালাকারী এবং তোমার
উপর কারো ফায়সালা কার্যকর হয় না। তুমি যার সাথে মিত্রতা পোষণ কর তাকে কেউ লাঞ্ছিত করতে
পারে না। আর যার সাথে শত্রুতা পোষণ কর, সে কখনো সম্মানিত হতে পারে না। হে আমাদের রব! তুমি খুবই বরকতময়, সুউচ্চ ও সুমহান।[98]
২) দুআ
ক্বনূত হিসেবে নীচের দুআটিও পড়া যায়ঃ
]اللهُمَّ إناَّ نَسْتَعِيْنُكَ،
وَنَسْتَغْفِرُكَ، ولاَ نكفُرُكَ، ونُؤْمِنُ بِكَ ونَخْلَعُ مَنْ يَكْفُرُكَ،
اللهُمَّ إيّاَكَ نَعْبُدُ، ولَكَ نُصَلِّيْ ونَسْجُدُ، وإلَيْكَ نَسْعىَ
ونَحْفِدُ، نَرْجُوا رَحْمَتَكَ ونَخْشى عَذاَبَكَ، إنَّ عَذاَبَكَ الْجِدَّ
بِالْكُفاَّرِ مُلْحِقٌ، اللهُمَّ عَذِّبْ الْكَفَرَةَ الذِّيْنَ يَصُدُّوْنَ عَنْ
سَبِيْلِكَ[
অর্থঃ হে আল্লাহ্! নিশ্চয় আমরা
আপনার নিকট সাহায্য চাই, আপনার
নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি, আপনার সাথে কুফরী করি না। আপনার প্রতি ঈমান রাখি। আপনার সাথে যে কুফরী করে তার
সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করি। হে আল্লাহ্ শুধুমাত্র আপনারই ইবাদত করি। আপনার জন্যই নামায
আদায় করি ও সিজদা করি। আপনার প্রতি অগ্রসর হই ও তৎপর থাকি। আপনার করুণা কামনা করি ও
শাস্তিকে ভয় করি। নিশ্চয় আপনার কঠিন শাস্তি কাফেরদেরকে স্পর্শ করবে। হে আল্লাহ্ যে
সমস্ত কাফের আপনার পথ থেকে বাধা দেয় তাদেরকে শাস্তি দিন। [99]
৩) আলী
বিন আবী তালেব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বিতরের শেষ রাকাতে এই দুআটি পড়তেন।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِرِضَاكَ
مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لا
أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ[
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নী আঊযু বিরিযাকা মিন সাখাতিকা ওয়া বি মুআফাতিকা
মিন ঊকূবাতিকা ওয়া আঊযুবিকা মিনকা লা উহ্ছী ছানাআন্ আলাইকা, আন্তা কামা আছনায়তা আলা নাফসিকা।
অর্থঃ
হে আল্লাহ্ নিশ্চয় আমি আপনার সন্তুষ্টির মাধ্যমে আপনার অসন্তুষ্টি থেকে আশ্রয় কামনা
করছি। আপনার নিরাপত্তার মাধ্যমে আপনার শাস্তি থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। আপনার মাধ্যমে আপনার
ক্রোধ থেকে আশ্রয় কামনা করছি। আমি আপনার গুণগাণ করে শেষ করতে পারব না। আপনি নিজের প্রশংসা
যেভাবে করেছেন আপনি সেরূপই।[100]
দুআ শেষ
করার সময় পাঠ করবে,
]صلى الله وسلم على نبينا محمد وآله وصحبه ومن
تبعهم بإحسان إلى يوم الدين[
ছাল্লাল্লাহু
ওয়া সাল্লামা আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ ওয়া আলিহি ওয়া ছাহবিহি, ওয়া মান তাবিআহুম বি ইহসানিন্ ইলা ইউমিদ্দীন।[101]
দুআ কুনুতের
সময় তাকবীর দেয়া ও তাকবীরে তাহরীমার মত দু’হাত উত্তোলন
সাধারন
মানুষ এটাকে উল্টা তাকবীর বলে থাকে। হেদায়ার গ্রন্থকার লিখেছেন, দুআ ক্বনূত পড়ার সময় তাকবীর দিবে এবং দু’হাত উত্তোলন
করবে। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সাতটি স্থান ব্যতীত অন্য কোথাও হাত উত্তোলন
করা যাবে না। সে সাতটি স্থানের মধ্যে একটি হলো কুনুতের সময়।
ইমাম
যায়লাঈ আল্ হানাফী ¯^xq গ্রন্থে বলেন: এ হাদীছটি হেদায়ার লেখক উল্লেখ করেছেন, কিন্তু হাদীসের মূল এবারতে (বাক্যে) ক্বনূত
শব্দটির উল্লেখ কোথাও নেই।[102]
সুতরাং
ক্বনূতের সময় তাকবীর দিয়ে হাত উত্তোলনের কথাটি নিছক হেদায়ার লেখকের কথা, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর
কথা তো নয়ই, এমন কি কোন সাহাবী বা তাবেঈর
কথা নয়। তাছাড়া (সাত স্থান ব্যতীত অন্য কোথাও হাত উত্তোলন করা যাবে না) হাদীছটি মারফূ’ ও মাওকূফ কোন সূত্রেই ছহীহ নয় তথা রাসূলুল্লাহ
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বা কোন ছাহাবী থেকে প্রমাণিত নয়।
অবশ্য
মুহাম্মদ বিন নসর আল মারওয়াযী ¯^xq
‘ক্বিয়ামুল
লাইল’ নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন
যে, কতিপয় ছাহাবী ক্বনূতের সময় তাকবীর
দিতেন। কিন্তু আল্লামা মোবারকপুরী বলেন, যে সকল ছাহাবী ক্বনূতের সময় তাকবীর দিতেন বলে দাবী করা হয়, তার পক্ষে কোন সনদ খুজে পাওয়া যায় না।[103]
হাদীছ
শাস্ত্রের কষ্টি পাথরে যাচাই করে প্রমাণিত হলো দুআ ক্বনূতের জন্য তাকবীর দেয়া এবং (কাঁধ
বা কান বরাবর) উভয় হাত উত্তোলন করা কোন হাদীছের কথা নয়, বরং কুরআন-সুন্নাহর অনুসরনকারীর জন্য উচিত
হল আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছাড়া অন্য কারো কথার
প্রতি কর্ণপাত না করা, একমাত্র
তাঁরই আনুগত্য করা।
দু’হাত তুলে দুআ ক্বনূত
পড়াঃ
এ সময়
দু’হাত তুলে দুআ ক্বনূত পড়তে পারবে। কেননা সাধারণ ভাবে দুআ করার সময় দু’হাত উত্তোলন
করা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
সালমান
ফারেসী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]إِنَّ رَبَّكُمْ تَبَارَكَ وَتَعَالَى
حَيِيٌّ كَرِيمٌ يَسْتَحْيِي مِنْ عَبْدِهِ إِذَا رَفَعَ يَدَيْهِ إِلَيْهِ أَنْ
يَرُدَّهُمَا صِفْرًا[
নিশ্চয় তোমাদের পালনকর্তা লজ্জাশীল সম্মানিত। কোন বান্দা তাঁর কাছে দু’হাত তুলে প্রার্থনা করলে তিনি উহা খালি ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ
করেন।[104]
ক্বনূত
একটি দুআ, তাই এ অবস্থায় হাত তুলা উচিত।
তাছাড়া হাত তুলে দুআ ক্বনূত পড়ার ব্যপারে সাহাবায়ে কেরাম থেকেও প্রমাণ পাওয়া যায়। ইবনে
মাসউদ, উমর বিন খাত্তাব, ইবনে আব্বাস, আবু হুরায়রা (রাঃ) প্রমূখ সাহাবী দুআ ক্বনূত
পড়ার সময় বুক বরাবর দু’হাত তুলতেন। ইমাম আহমাদ, ইমাম ইসহাকও এরূপ করতেন।[105]
আবু রাফে থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,আমি উমার
বিন খাত্তাব (রাঃ)এর পিছনে নামায পড়েছি। তিনি রুকূর পর ক্বনূত পড়েছেন। তখন হাত উঠিয়েছেন
এবং দুআ জোরে জোরে পড়েছেন। [106]
দুআ শেষে দুহাত মুখে মোছাঃ দুআ শেষ
করার পর হাত দুটিকে মুখে মুছার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোন হাদীছ প্রমাণিত হয়নি। তাই উহা না করাই শ্রেয়।
এ সম্পর্কে
একটি হাদীছ বর্ণিত হয়েছেঃ
]عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِي اللَّه عَنْه
قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ إِذَا رَفَعَ يَدَيْهِ فِي الدُّعَاءِ لَمْ يَحُطَّهُمَا حَتَّى
يَمْسَحَ بِهِمَا وَجْهَهُ[
উমার
বিন খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’হাত উঠিয়ে দুআ করলে, উহা মুখমন্ডলে না মুছে নীচে নামাতেন না।[107]
কিন্তু
এই হাদীছটি যঈফ।
ইমাম
বায়হাক্বী বলেন, উত্তম হচ্ছে এরূপ না করা এবং সালাফে সালেহীন যা করেছেন তাকেই
যথেষ্ট মনে করা। অর্থাৎ- শুধু হাত উঠিয়ে দুআ করা কিন্তু উহা মুখে না মুছা।’[108]
দুআ ক্বনূত না জানলে
আমাদের
দেশের কতিপয় আলেম বলে থাকেন, যার দুআ ক্বনূত মুখস্ত নেই সে তিনবার সূরায়ে এখলাছ অবশ্যই পড়বে। নতুবা বিতর আদায়
হবে না। এ ব্যাপারে আল্লামা আবু মুহাম্মাদ আবদুল ওয়াহহাব সাদরী বলেন, একথাটি বেদলীল ও সনদহীন এবং সম্পূর্ণ মনগড়া
কথা। কুরআন ও প্রিয় নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর হাদীছে যার কোন প্রমাণ
ও সমর্থন নেই।[109]
অতএব
দুআ ক্বনূত না জানলে তা পড়তে হবে না। কেননা আমার পূর্বে উল্লেখ করেছি যে, দুআ ক্বনূত পাঠ করা যেমন ওয়াজিব নয়, তেমনি উহা জানলেও যে সারা বছর পড়তে হবে
তাও আবশ্যক নয়। বরং কখনো পড়বে কখনো ছাড়বে। এটাই সুন্নাত এবং সালাফে সালেহীন তথা ছাহাবায়ে
কেরামের নীতি।
وكل خير في اتباع من سلف
সালাফে সালেহীনের নীতি অনুসরণের
মধ্যেই রয়েছে সকল কল্যাণ।
বিতর
নামায শেষ করলে
বিতর
নামাযের শেষে সালাম ফিরিয়েই অন্যান্য তাসবীহ দুআ ইত্যাদি বলার পূর্বে ‘সুবহানাল
মালিকিল্ কুদ্দুস’ কথাটি তিনবার বলা সুন্নাত। শেষেরবার
একটু টেনে বলতে হয়।
উবাই বিন কা’ব (রাঃ)
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
]فَإِذَا فَرَغَ قَالَ عِنْدَ فَرَاغِهِ
سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْقُدُّوسِ ثَلاثَ مَرَّاتٍ يُطِيلُ فِي آخِرِهِنَّ[
নবী (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিতর নামায শেষ করে তিনবার বলতেন, ‘সুবহানাল মালিকিল
কুদ্দুস’ (আমি মহা পবিত্র বাদশার পবিত্রতা বর্ণনা করছি।) শেষ বার তিনি
এই শব্দগুলো একটু বেশী টেনে D‰Pt¯^‡i বলতেন।[110]
বিতর শেষ করে দু’রাকাত নামায আদায় করাঃ
বিতর শেষে দু’রাকাত নামায আদায় করা যায় এবং এই নামায বসে বসে আদায় করা যায়। রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো এই
নামায আদায় করেছেন।
উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
]أَنَّ
النَّبِيَّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي بَعْدَ الْوِتْرِ
رَكْعَتَيْنِ[
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিতরের পর দু’রাকাত নামায আদায় করতেন।[111]
ইবনে মাজার বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
ইবনে মাজার বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
خَفِيفَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ
হালকা করে বসাবস্থায় উহা আদায় করতেন।[112]
সদা-সর্বদা এ
নামায আদায় করা উচিত নয়। কেননা তাহলে অপর হাদীছ তোমরা তোমাদের রাতের
নামাযের সর্বশেষে বিতর নামায আদায় করবে।[113] এর প্রতি আমল করা হবে না।
বিতর
নামায পড়ার পর ইচ্ছা করলে নফল নামায পড়া যে জায়েয এটা প্রমাণ করার জন্যই নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ নামায আদায় করেছেন। (আল্লাহই অধিক জ্ঞাত)
বিতর নামাযের কাযা
অনিচ্ছাকৃতভাবে
যদি কারো বিতর নামায ছুটে যায়, তবে সে দিনের বেলায় উহা কাযা আদায় করতে পারে।
আবু সাঈদ
খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
]مَنْ نَامَ
عَنْ وِتْرِهِ أَوْ نَسِيَهُ فَلْيُصَلِّهِ إِذَا ذَكَرَهُ[
যে ব্যক্তি বিতর নামায না
পড়ে ঘুমিয়ে থাকবে অথবা উহা পড়তে ভুলে যাবে, সে যেন স্মরণ হলেই উহা আদায় করে নেয়।[114]
বিতর
নামায কাযা আদায় করার ব্যাপারে আরেকটি নিয়ম পাওয়া যায়। তা হচ্ছেঃ দিনের বেলায় ১২ রাকাত
নামায আদায় করা। আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যদি কখনো নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে নিদ্রা জনিত
কারণে বা অসুস্থতার কারণে রাতে ক্বিয়ামুল্লায়ল করতে অপরাগ হতেন, তবে দিনের বেলায় ১২ রাকাত নামায আদায় করতেন।[115]
একরাতে
দু’বার বিতর পড়া
একরাতে
দু’বার বিতর পড়া বিধিসম্মত নয়।
]عَنْ قَيْسِ بْنِ طَلْقٍ قَالَ زَارَنَا طَلْقُ
بْنُ عَلِيٍّ فِي يَوْمٍ مِنْ رَمَضَانَ وَأَمْسَى عِنْدَنَا وَأَفْطَرَ ثُمَّ
قَامَ بِنَا اللَّيْلَةَ وَأَوْتَرَ بِنَا ثُمَّ انْحَدَرَ إِلَى مَسْجِدِهِ
فَصَلَّى بِأَصْحَابِهِ حَتَّى إِذَا بَقِيَ الْوِتْرُ قَدَّمَ رَجُلا فَقَالَ
أَوْتِرْ بِأَصْحَابِكَ فَإِنِّي سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ يَقُولُ لا وِتْرَانِ فِي لَيْلَةٍ[
ক্বায়স
বিন ত্বল্ক্ব বলেন, একদা
রামাযানে আমার পিতা ত্বল্ক্ব বিন আলী (রাঃ) আমাদের নিকট আগমণ করেন, সন্ধ্যা হয়ে গেলে তিনি আমাদের নিকটেই ইফতার
করেন। অতঃপর আমাদের নিয়ে তারাবীর নামায পড়েন এবং বিতর পড়েন। তারপর তাঁর নিজের মসজিদে
গিয়ে লোকদের নিয়ে ক্বিয়ামুল্লায়ল করেন। যখন বিতর নামায বাকী ছিল তখন তিনি একজন লোককে
আগে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, লোকদের
নিয়ে বিতর পড়ে নাও। কেননা আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, একরাতে দু’বার বিতর নেই।[116]
অতএব
কোন মুসলমান যদি প্রথম রাতে বিতর আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে। অতঃপর জাগ্রত হয়ে শেষ রাতে তাহাজ্জুদ
আদায় করার জন্য আল্লাহ তাকে সুযোগ দান করেন, তবে সে দু’দু’রাকাত করে নামায আদায় করবে। শেষে আর বিতর পড়বে না।
বিদ্বানদের
মধ্যে একদল মত পোষণ করেছেন যে, বিতর আদায় করার পর যদি কেউ নফল নামায বা তাহাজ্জুদ পড়তে চায়, তবে সে এক রাকাত নামায পড়ে বিতরকে ভেঙ্গে
দিবে (আগের এক রাকাত এবং এই রাকাত জোড়া হয়ে যাবে)। অতঃপর তাহাজ্জুদ শেষ করে বিতর আদায়
করবে। ইমাম তিরমিযী বলেন, ছাহাবীদের
মধ্যে কেউ কেউ এবং ইমাম ইসহাক এই মত পোষণ করেছেন।[117]
কিন্তু
অধিকাংশ বিদ্বানের মতে প্রথম নিয়মটিই অধিক গ্রহণযোগ্য। কেননা ইতোপূর্বে উল্লেখ হয়েছে
যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো বিতরের
পরও নামায আদায় করেছেন।[118]
একটি
প্রশ্ন ও তার উত্তরঃ কোন লোক যদি প্রথম রাতে বিতর নামায আদায় করে নেয়। অতঃপর শেষ রাতে
জামাতের সাথে তাহাজ্জুদ নামায পড়ে সে কি ইমামের সাথে বিতর পড়বে না? যদি না পড়ে তবে হাদীছে বর্ণিত ফযীলত থেকে
বঞ্ছিত হবে। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি ইমামের সাথে ক্বিয়ামুল্লায়ল করবে, অতঃপর ইমামের সাথেই সে ফিরে যাবে, তবে তার জন্য সারা রাত্রি নফল নামায পড়ার
ছওয়াব লিখা হবে।[119]
এর জবাব
হচ্ছেঃ এই ব্যক্তি ইমামের এক রাকাত পড়ার সময় দু’রাকাত
পড়ার নিয়ত করে দাঁড়াবে। ইমাম এক রাকাত শেষ করে যখন সালাম ফেরাবে, সে উঠে দাঁড়াবে এবং দ্বিতীয় রাকাত নামায
পূর্ণ করে নিবে। আর এভাবেই সে ইমামের সাথে নামায শেষ করতে পারবে এবং এক রাতে দু’বারও
বিতর পড়া হবে না।[120]
পরিশেষে:
সারকথা হলো,
1) বিতর একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফযীলতপূর্ণ নামায।
2) বিতর নামায ওয়াজিব নয়, সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্। তা পরিত্যাগ করা কোন মুমিনের জন্য উচিত নয়।
3) বিতর নামাযের সর্বনিম্ন রাকাত সংখ্যা হচ্ছে ১।
4) তিন রাকাত বিতর নামায মাগরিবের মত করে আদায় করা বিধিসম্মত নয়।
5) প্রমাণিত যে কোন দুআ ক্বনূত রুকুর আগে বা পরে পড়তে পারবে।
6) দুআ ক্বনূত না জানলে কোন অসুবিধা নেই।
7) বিতর নামায অনিচ্ছাকৃতভাবে ছুটে গেলে ক্বাযা আদায় করতে পারবে।
8) বিতর শেষে ইচ্ছা করলে কখনো কখনো দু’রাকাত নামায আদায় করা যায়। কিন্তু
সর্বদা করা উচিত নয়।
আমরা
এখানে যে আলোচনা উল্লেখ করলাম তা নিতান্তই হাদীছগ্রন্থ সমূহ ও আমাদের পূর্বসূরী উলামাদের
কিতাব থেকে গবেষণার ফল। আমাদের এ আলোচনার উপর যদি কারো কোন মন্তব্য বা প্রতিবাদ থাকে, লিখিতভাবে বা সরাসরি আমাদের নিকট তা উপস্থাপন
করতে অনুরোধ রইল। আলোচনা ছহীহ হাদীছ মোতাবেক নিরপেক্ষ হলে গ্রহণ করতে প্রস্তুত থাকব।
আল্লাহ্
আমাদের সবাইকে হক পথে পরিচালিত করুন, এবং ছহীহ সুন্নাহ থেকে প্রামণিত যে কোন বিষয় দ্বিধাহীন চিত্তে গ্রহণ ও আমল করার
মানসিকতা দান করুন। আমীন॥
-ঃ সমাপ্ত ঃ-
সকল প্রশংসা সেই আল্লাহ্র জন্য
যার অশেষ মেহেরবানীতে নেক কর্ম সমূহ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়।
সংকলন ও গ্রন্থনা:
মুহাঃ আবদুল্লাহ্ আল কাফী
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
দাঈ, জুবাইল দা‘ওয়া এন্ড গাইডেন্স সেন্টার
(শাওয়াল, ১৪২৭হি: = b‡f¤^i ২০০৬ইং)
তথ্যসূত্রঃ
1) ছালাতুল মু’মেন- সাঈদ ক্বাহতানী।
2) বুগইয়াতুল মুতাতওয়্যে’ ফী ছালাতিত্ তাত্বাওউ- মুহাম্মাদ ওমর বাযমূল।
3) ছহীহ তারগীব ওয়া তারহীব- শায়খ নাসেরুদ্দীন আলবানী, প্রকাশনাঃ মাকতাবাতুল মাআরেফ, রিয়াদ, ১৪২১ হিঃ।
4) ফিক্বহুস্ সুন্নাহ্, সাইয়েদ সাবেক।
5) আল মাউসূআ আল ফেক্বহিয়্যাহ্- হুসাইন আওদাহ্ আল আওয়াইশা, প্রকাশনাঃ দারুস্ ছিদ্দীক, জুবাইল। দ্বিতীয় প্রকাশঃ ১৪২৩ হিঃ।
6) নায়লুল আওতার- শাওকানী।
7) নাসবুর রায়া- ইমাম যায়লাঈ হানাফী।
8) মুন্তক্বাল আযকার- ডঃ খালেদ আল জুরাইসী, প্রকাশনাঃ আল জুরাইসী ইষ্টঃ। দ্বিতীয় প্রকাশঃ ১৪২৭ হিঃ।
9) ছালাতু তারাবীহ্- শায়খ নাসেরুদ্দীন আলবানী।
10) নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি- শায়খ নাসেরুদ্দীন আলবানী, অনুবাদঃ আকরামুজ্জামান, প্রকাশনাঃ ইসলামী ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংস্থা, বাংলাদেশ। ২০০২ ইং।
11) মিশকাতুল মাসাবীহ, শায়খ
নাসেরুদ্দীন আলবানী, প্রকাশনাঃ
আল মাকতাবুল ইসলামী, বইরুত, ১৪০৫ হিঃ।
[১] . সূরা আহযাব- ৩৬
[২] . বুখারী, অধ্যায়ঃ কুরআন-সুন্নাহ্ আঁকড়ে ধরা, অনুচ্ছেদঃ রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সুন্নাতের অনুসরণ, হা/৬৭৩৭।
[৩] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায মুস্তাহাব, হা/১২০৮। তিরমিযি, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামাযের ফযীলত, হা/৪১৪। ইবনে মাযাহ, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামাযের বর্ণনা, হা/১১৫৮।
[৪] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায মুস্তাহাব হা/১৪১৬। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ কিয়ামুল্লায়ল, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায পড়ার নির্দেশ, হা/১৬৭৬। ইবনু মাজাহ্, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠিত করা, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায সম্পর্কে আলোচনা। সহীহ তারগীব হাদীছ নং ৫৯৪। ছহীহ ইবনু মাজাহ্- আলবানী হা/১/১৯৩।
[৫] . বুখারী, অধ্যায়ঃ জুমআর নামায, অনুচ্ছেদঃ সফরে বিতর পড়া, হা/৯৪৫।
[৬] . বুখারী, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ যেখানেই থাক ক্বিবলার দিক মুখ ফেরাবে। হা/৩৮৫।
[৭] . ফিকহুস্ সুন্নাহ, বিতর নামাযের আলোচনা ১/১৮১।
[৮] . মাজমূ ফাতাওয়া ২৩/৮৮ বুগ্ইয়াতুল মুতাত্বওয়ে' ফী ছালাতিল মুতাত্বওয়ে' ৪৮ পৃঃ।
[৯] . তিরমিযী, অধ্যায়: ছালাত হা/৪১৫। ইবনে মাজাহ্, অধ্যায় নামায কায়েম করা ও তার মধ্যে সুন্নত, হা/১১৫৯। শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটি ছহীহ দ্রঃ ছহীহ তারগীব তারহীব হা/৫৯২।
[১০] . বুগ্ইয়াতুল মুতাত্বাওয়ে' পৃঃ ৫০।
[১১] . যে হাদীছকে রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর দিকে সম্বধিত করা হয়েছে তাকে মারফূ হাদীছ বলা হয়।
[১২] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত হা/ ১২১০। মুসনাদে আহমাদ, হা/ ২১৬৩৫। হাদীছটি ছহীহ (দ্রঃ ছহীহ তারগীব তারহীব আলবানী হা/৩৭০।
[১৩] . বুখারী, অধ্যায়ঃ ঈমান, অনুচ্ছেদঃ যাকাতের ইসলামের অন্তর্ভূক্ত, হা/৪৪। মুসলিম, অধ্যায়ঃ ঈমান, অনুচ্ছেদঃ নামায সমূহ ইসলামের অন্যতম রুকন, হা/১২।
[১৪] . বিস্তারিত দেখুন নসবুর রায়া- ইমাম যায়লাঈ ২/১১৩পৃঃ।
[১৫] . ইবনু আব্বাস (রাঃ)এর বরাতে মুসনাদে আহমাদ হা/১৯৪৬। ত্ববরানী, দারাকুতনী, বায়হাকী ও হাকেম। এর সনদে 'আবু জনাব আল কালবী' নামক জনৈক বর্ণনাকারী আছে, মুহাদ্দীছগণ যাকে যঈফ বলেছেন। এই জন্য এই হাদীছ দলীল হিসেবে প্রযোজ্য নয়।
[১৬] . মুসনাদে আহমাদ হা/১৯৭৭।
[১৭] . বুখারী, অধ্যায়ঃ জুমআর নামায, অনুচ্ছেদঃ সফরে বিতর পড়া, হা/৯৪৫।
[১৮] . বুখারী, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ যেখানেই থাক ক্বিবলার দিক মুখ ফেরাবে। হা/৩৮৫।
[১৯] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতর কত রাকাত, হা/১২১২, ইবনু মাজাহ, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায তিন, পাঁচ, সাত ও নয় রাকাতের বর্ণনা হা/১১৮০।
[২০] . মুসনাদে আহমাদ হা/২২৭৩১, শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেন, (দ্রঃ সিলসিলা ছহীহা হা/১০৮, ইরউয়া গালীল হা/ ৪২৩, ছহীহ ইবনু মাজাহ্ হা/৯৫৮।)
[২১] . এই হাদীছটি পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্রঃ পৃঃ ১৭-১৮।
[২২] . আল মাওসূআ আল ফেক্বহিয়্যাহ্, ২/১১৪-১১৫পৃঃ।
[২৩] . মুসনাদে আহমাদ হা/ ৬৬২৫। (শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ তারতীব ছহীহুল জামে' হা/১৪৪৪।)
[২৪] . হাদীছটি বর্ণনা করেন বায়হাক্বী সুনানে কুবরায়
[২৫] . দেখুন নাসর্বু রায়া- ইমাম যায়লাঈ হানাফী ২/ ১১১ পৃঃ।
[২৬] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ যে বিতর পড়ে না তার বিধান, হা/১২০৯।
[২৭] . দ্রঃ মেশকাত- আলবানী ১/৩৯৯ পৃঃ হা/ ১২৭৮।
[২৮] . হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বায্যার। মাজমাউয্ যাওয়ায়েদ ২/২৪০পৃঃ।
[২৯] . নায়লুল আওতার, শাওকানী, ৩/৩২।
[৩০] . মুসনাদে আহমাদ হা/২১০৮১।
[৩১] . যে হাদীছের সনদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে- তথা সনদের কোন এক স্থানে এক বা একাধিক বর্ণনাকারীর নাম বাদ পড়েছে তাকে মুনকাতা হাদীছ বলে। আর মুনকাতা' হাদীছ যঈফ হাদীছের অন্তর্ভূক্ত।
[৩২] . বিস্তারিত দেখুন নসবুর রায়া- ইমাম যায়লাঈ ২/১১২পৃঃ।
[৩৩] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায হা/১২৩১। বুখারী, অধ্যায়ঃ জুমআ হা/৯৪১।
[৩৪] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায হা/১২৫৫। তিরমিযী, ইবনু মাজাহ্।
[৩৫] . বুখারী, অধ্যায়ঃ জুমআর নামায, অনুচ্ছেদঃ সর্বশেষে বিতর নামায পড়া, হা/৯৪৩। ও মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায দু'দু রাকাত এবং শেষ রাতে বিতর এক রাকাত, হা/১২৪৫।
[৩৬] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায হা/১২৬৩।
[৩৭] . বুখারী, অধ্যায়ঃ ছিয়াম, অনুচ্ছেদঃ আইয়্যামে বীযের ছিয়াম পালন করা। হা/১১০৭ মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ চাশতের নামায মুস্তাহাব হা/ ১১৮২।
[৩৮] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায দু'দু' রাকাত করে এবং শেষ রাতে এক রাকাত বিতর। হা/১২৫৩।
[৩৯] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায হা/ ১২৪৩।
[৪০] . তিরমিযী, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ ফজর হওয়ার আগেই দ্রুত বিতর পড়ে নেয়া হা/৪৬৯। ছহীহ তিরমিযী- আলবানী হা/ ১/১৪৬। ইরউয়াউল গালীল ২/১৫৪।
[৪১] . ইমাম তিরমিযী বলেন, ইসহাক বিন রাহওয়াই বলেন, যে সমস্ত বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তের রাকাত বিতর পড়তেন- তা দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, তিনি রাতে বিতরসহ তের রাকাতের মাধ্যমে ক্বিয়ামুল্লায়ল নামায পড়তেন। এই জন্য রাতের নামাযকে বিতরের দিকে সম্বধিত করা হয়েছে। অন্য হাদীছে যে বলা হয়েছেঃ তোমরা বিতর নামায পড় হে কুরআনের অনুসারীগণ! এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে 'কুরআনের অনুসারীগণ ক্বিয়ামুল্লায় নামায আদায় করবে। তম্মধ্যে বিতরও ক্বিয়ামুল্লায়লের অন্তর্ভূক্ত। (দ্রঃ তিরমিযী, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায সাত রাকাতের বর্ণনা, হা/ ৪২০)
[৪২] . দ্র: বুখারী (বাংলা) হাদীস নং ৯৩৬, ৯৩২, ৯৩৪, মুসলিম হা/১২৫১।
[৪৩] . মুসলিম, অ্যধায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায দু'দুরাকাত করে এবং বিতর শেষ রাতে এক রাকাত হা/ ১২৪৭।
[৪৪] . মুসলিম, অ্যধায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায দু'দুরাকাত করে এবং বিতর শেষ রাতে এক রাকাত হা/ ১২৪৯।
[৪৫] . শরহে নবুবী ছহীহ মুসলিম, ৬/২৭৭।
[৪৬] . আবু দাউদ হা/১২১২, ইবনু মাজাহ হা/১১৮০।
[৪৭] . নায়লুল আওতার থেকে আইনী তোহফা ১/২২২পৃ:।
[৪৮] . মুসনাদে আহমাদ হা/১৩৮২।
[৪৯] . ছালাতু তারাবীহ্ পৃঃ ৮৫। বিস্তারিত দেখুনঃ ফাতহুল বারী ২/৩৮৫, নাসবুর রায়া ২/১২২।
[৫০] . সূরা নূরঃ আয়াত নং- ৬৩।
[৫১] . ছহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরের বর্ণনা। হা/৯৩২ (বাংলা বুখারী)। মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, হা/১২৩৯।
[৫২] . মুসলিম- হা/১২৫২।
[৫৩] . আল মুগনী ২/৫৮৮।
[৫৪] . আসরাম স্বীয় সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেন। দ্রঃ আল মুগনী ২/৫৮৯।
[৫৫] . আহমাদ হা/২৩৩৯৮। এক্ষেত্রে ইবনু উমার থেকে আরেকটি বর্ণনা পাওয়া যায়ঃ আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বিতরের দু'রাকাত এবং এক রাকাতের মধ্যে সালাম ফিরিয়ে পৃথক করতেন এবং তিনি বলেছেন যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করতেন। (ছহীহ্ ইবনু হিব্বান হা/২৪৩৩। হাফেয ইবনু হাজার বলেন, হাদীছটির সনদ শক্তিশালী, দ্রঃ ফাতহুল বারী ২/৪৮২।
[৫৬] . মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটির সনদ শায়খায়ন (বুখারী মুসলিমের) শর্তানুযায়ী ছহীহ। দ্রঃ ইরওয়াউল গালীল হা/ ৪২০।
[৫৭] . ছহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরের বর্ণনা। হা/৯৩২ (বাংলা বুখারী)। শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন, এ হাদীছটি মাওকূফ হলেও তা মারফূ হাদীছকে শক্তিশালী করছে। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তিন রাকাত বিতর পড়তে চায়, তার জন্যে এ পদ্ধতিই সবচেয়ে উত্তম। (দ্রঃ ছালাতুল মু'মেন- সাঈদ কাহতানী পৃঃ ৩২৫।)
[৫৮] . হাদীছটি বর্ণনা করেন ইমাম হাকেম, তিনি হাদীটিকে ছহীহ বলেন।
[৫৯] . নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, অধ্যায়ঃ বিতরের ক্ষেত্রে উবাই বিন কা'বের হাদীছ বর্ণনায় বর্ণনাকারীদের বাক্যের মধ্যে বিভিন্নতা। হা/১৬৮১।
[৬০] . দারাকুতনী, ২/২৭,২৮। ও বায়হাকী হা/৪৮১২।
[৬১] . নাসবুর রায়া ২/১১৬।
[৬২] . হাদীছটি ইবনু ওমরের বরাতে ত্ববরানী বর্ণনা করেন। (দ্রঃ ছহীহুল জামে- আলবানী অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায, হা/১৪৫৬।
[৬৩] . তাহাভী, দারাকুতনী, ইবনু হিব্বান ও হাকিম হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। হাকিম হাদীছটিকে বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুযায়ী ছহীহ আখ্যা দিয়েছেন এবং ইমাম যাহাবী সমর্থন করেছেন। ইবনু হাজার ও শাওকানীও ছহীহ্ বলেছেন। (দ্রঃ ফাতহুল বারী, ২/৫৫৮, নায়লুল আউতার ৩/৪২-৪৩। শায়খ আলবানীও ছহীহ আখ্যা দিয়েছেন (দ্রঃ ছালাতু তারাবীহ্- ৮৪ ও ৯৭ পৃঃ)
[৬৪] . ফাতহুলবারী, ৪/৩০১।
[৬৫] . সুবুলুস্ সালাম, ১/১২২।
[৬৬] . ছালাতুত্ তারাবীহ্- আলবানী, পৃঃ ৯৭।
[৬৭] . এর বিস্তারিত বিবরণ সামনে আসবে। ইনশাআল্লাহ
[৬৮] . ছহীহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ মসজিদ ও সিজদার স্থান, হা/১০৯৩, ১০৯৪।
[৬৯] . দেখুন মুসলিম শরীফ নবভীর ভাষ্যসহ। ৪/১৭২, ১৭৪।
[৭০] . এর বিস্তারিত বিবরণ সামনে আসবে। ইনশাআল্লাহ
[৭১] . ছালাতুত্ তারাবীহ্- শায়খ আলবানী, পৃঃ ৯৮।
[৭২] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায কত রাকাত। হা/১২১২, ইবনু মাজাহ, অধ্যায়ঃ ছালাত প্রতিষ্ঠা করা, অনুচ্ছেদঃ বিতরের বর্ণনা তিন রাকাত, পাঁচ, সাত ও নয় রাকাত, হা/১১৮০।
[৭৩] . মুসনাদে আহমাদ হা/২৪৫২০। সুনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ কিভাবে পাঁচ রাকাত বিতর পড়বে, হা/১৬৯৮।
[৭৪] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায। হা/১২৩৩।
[৭৫] . সুনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ কিভাবে সাত রাকাত বিতর পড়বে, হা/১৬৯৯।
[৭৬] . নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ কিভাবে সাত রাকাত বিতর পড়বে, হা/১৬৯৫। ছহীহ্ নাসাঈ- আলবানী হা/১/৩৭৫। ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা, অনুচ্ছেদঃ বিতরের বর্ণনা তিন রাকাত, পাঁচ, সাত ও নয় রাকাত, হা/১১৮২। ছহীহ্ ইবনু মাজাহ্- আলবানী হা/১/১৯৭।
[৭৭] . সুনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায় ও নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ কিভাবে সাত রাকাত বিতর পড়বে, হা/১৭০০।
[৭৮] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায। হা/১২৩৩।
[৭৯] . নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, হা/ ১৬৮৯।
[৮০] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায, হা/১২১৬।
[৮১] . বুখারী, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, হা/৯৩৬। মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায। অনুচ্ছেদঃ রাতে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামায ও দু'আ, হা/১২৭৪।
[৮২] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায। অনুচ্ছেদঃ রাতে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামায ও দু'আ, হা/১২১৭।
[৮৩] . নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায় ও নফল নামায, অধ্যায়ঃ বিতরের ক্ষেত্রে উবাই বিন কা'বের হাদীছ বর্ণনায় বর্ণনাকারীদের বাক্যের মধ্যে বিভিন্নতা। হা/১৬৮১। আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতরে কি পাঠ করবে, হা/১২১৩। হাদীছটি ছহীহ (দ্রঃ মেশকাত- আলবানী ১/ ৩৯৮পৃঃ হা/ ১২৭৪, ১২৭৫)
[৮৪] . [ছহীহ] তিরমিযী, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামাযে কি পাঠ করবে। হা/ ৪২৫। আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামাযে যা পাঠ করবে। হা/ ১২১৩। ইবনু মাজাহ্ অধ্যায়ঃ নামায কায়েম করা এবং তার মধ্যে সুন্নাত। অনুচ্ছেদঃ বিতর নামাযে যা পাঠ করবে। হা/ ৪৬৩। শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ ছহীহ্ তিরমিযী হা/৪৬৩।
[৮৫] . কুনূত বলতে উদ্দেশ্য হচ্ছে, নামাযে নির্দিষ্টভাবে দাঁড়ানো অবস্থায় দু'আ করা।
[৮৬] . আল মাওসূআ আল ফেক্বহিয়্যাহ্ ১২৭-১২৮ পৃঃ। [দ্রঃ শায়খ আলবানী প্রণীত নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামায ১৭৯ পৃঃ]
[৮৭] . বুগইয়াতুল মুতাত্বওয়ে' ৭০ পৃঃ। [দ্রঃ মুছান্নাফ- ইবনু আবী শায়বা ২/৩০৫-৩০৬, মুখতাছার ক্বিয়ামুল্লায়ল লিল মারওয়াযী ১৩৫-১৩৬ পৃঃ, মাজমু' ফাতাওয়া ২২/২৭১]
[৮৮] . ছালাতুল মু'মেন ৩৩০, মাজমু' ফাতাওয়া ২৩/৯৯, নায়লুল আওতার- শাওকানী ২/২২৬।
[৮৯] . ইবনে মাজাহ্, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা ও তাতে সুন্নাত, অনুচ্ছেদঃ রুকূর পূর্বে বা পরে ক্বনূতের বর্ণনা। হা/১১৮২। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, অধ্যায়ঃ বিতরের ক্ষেত্রে উবাই বিন কা'বের হাদীছ বর্ণনায় বর্ণনাকারীদের বাক্যের মধ্যে বিভিন্নতা। হা/১৬৮১। হাদীছটি ছহীহ, দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল হা/৪২৬।
[৯০] . মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা ২/৩০২। বর্ণনাটি ছহীহ দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল ২/১৬৬।
[৯১] . হাদীছটির প্রথমাংশ ছহীহ বুখারীতে রয়েছে, অধ্যায়ঃ তারাবীহ্ নামায, অনুচ্ছেদঃ রামাযানে ক্বিয়াম করার ফযীলত হা/২০১০। শেষাংশ রয়েছে ছহীহ ইবনু খুযায়মাতে ২/১৫৫-১৫৬ শায়খ আলবানী এর সনদকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ ছালাতু তারাবীহ্ ৪১-৪২ পৃঃ
[৯২] . বুখারী, অধ্যায়ঃ বিতর, অনুচ্ছেদঃ রুকুর আগে ও পরে ক্বনূত পাঠ করা। হা/ ১০০২। মুসলিম, অধ্যায়ঃ মসজিদ ও নামাযের স্থান, অনুচ্ছেদঃ মুসলমানদের উপর কোন বিপদ আপতিত হলে সকল নামাযে ক্বনূত পাঠ করা মুস্তাহাব, হা/৬৭৭।
[৯৩] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মসজিদ ও নামাযের স্থান, অনুচ্ছেদঃ মুসলমানদের উপর কোন বিপদ আপতিত হলে সকল নামাযে ক্বনূত পাঠ করা মুস্তাহাব, হা/১০৮২।
[৯৪] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ বিতর, অনুচ্ছেদঃ নামাযে ক্বনূত পাঠ করা, হা/১২৩১। শায়খ আলবানী হাদীছটির সনদকে হাসান বলেন, দ্রঃ ছহীহ আবু দাউদ, ১/২৭০।
[৯৫] . ইবনু মাজাহ্, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা, অনুচ্ছেদঃ রুকুর আগে-পরে ক্বনূতের বিবরণ হা/ ১১৭৩। শায়খ আলবানী হাদীছটির সনদকে হাসান বলেন, দ্রঃ ছহীহ ইবনু মাজাহ্ ১/১৯৫। ইরউয়াউল গালীল ২/১৬০।
[৯৬] . ইরউয়াউল গালীল ২/১৬৪।
[৯৭] . ইমাম ইবনে তায়মিয়া বলেন, ফরয নামাযে ক্বনূত পাঠের ব্যাপারে আলেমগণ তিনভাগে বিভক্ত হয়েছেনঃ
১) ফরয নামাযে ক্বনূত পাঠ করা মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে। সুতরাং উহা বিদআত। কেননা নবী ব উহা একমাস পড়ার পর ছেড়ে দিয়েছেন। তার এই ছেড়ে দেয়ায় প্রমাণ করে যে, উহা রহিত।
২) ক্বনূত পাঠ করা সর্বদাই বিধিসম্মত ও সুন্নাত। বিশেষ তরে ফজরের নামাযে।
৩) প্রয়োজনের সময় উহা সুন্নাত। অন্য সময় নয়। যেমনটি রাসূলুল্লাহ্ ব এবং তাঁর পর খোলাফায়ে রাশেদা করেছিলেন। এটাই বিশুদ্ধ কথা। তাঁরা বিপদ দূর হলে= =ক্বনূত পড়া ছেড়ে দিয়েছেন। যদি উহা মানসূখ হত, তবে খোলাফায়ে রাশেদা পড়তেন না। (বিস্তারিত দ্রঃ মাজমু ফাতাওয়া ২৩/ ৯৯, ১০৫-১০৮)
[৯৮] . তিরমিযী, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরে কুনূতের বিবরণ হা/৪২৬। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ কিয়ামুল্লায়ল ও দিনের নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরের দু'আ হা/১৭২৫। আবু দাঊদ, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরে কুনূতের বিবরণ, হা/১২১৪। ইবনু মাজাহ, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা ও তাতে সুন্নাত, অনুচ্ছেদঃ বিতরে কুনূতের বিবরণ, হা/১১৬৮। শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন, দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল, হা/৪৪৯। মেশকাত- আলবানী ১/৩৯৮পৃঃ হা/ ১২৭৩।
[৯৯] . ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/ ১১০০। বায়হাকী সুনানে কুবরা ২/২১১। শায়খ আলবানী এর সনদকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল, ২/১৭০।
[১০০] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ বিতর, অনুচ্ছেদঃ বিতরে কুনূত পাঠ করা, হা/১২১৫। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ কিয়ামুল্লায়ল ও দিনের নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরের দু'আ হা/১৭২৭। শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন, (দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল, হা/৪৩০। মেশকাত-আলবানী ১/৩৯৯পৃঃ হা/ ১২৭৬।)
[১০১] . কুনূতের শেষে নবীজীর উপর দরূদ পাঠ করা ছাহাবায়ে কেরামের কর্ম থেকে ছহীহ সূত্রে প্রমাণিত। যেমনটি উল্লেখ করেছেন শায়খ আলবানী। দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল, ২/১৭৭।
[১০২] . বিস্তারিত দেখুন ইমাম যায়লাঈ হানাফী (রহঃ) প্রণীত নসবুর রয়া ১ম খন্ড ছালাত অধ্যায়ঃ হাদীস নং ৩৮এর আলোচনা। (১/৪৬৯-৪৭১পৃঃ।) এ হাদীছটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। যেমন ত্ববরানী মু'জাম কাবীর গ্রন্থে কয়েকটি সূত্রে ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। কোন বর্ণনাই বিশুদ্ধ নয়। ইমাম বুখারী (রফউল ইয়াদায়ন) গ্রন্থে ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন অতঃপর উহাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। অনুরূপভাবে বায্যার স্বীয় সনদে ইবনে আব্বাস ও ইবনে ওমার থেকে হাদীছটি বর্ণনা করেন এবং মত প্রকাশ করেন যে হাদীছটি বিশুদ্ধ নয়। এমনিভাবে হাকেম (মুস্তাদরাক) গ্রন্থে ইবনে আব্বাস ও ইবনে ওমার থেকে হাদীছটি বর্ণনা করেন।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এই ইবনে ওমার ও ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে একাধিক ছহীহ সূত্রে প্রমাণিত হয়েছে যে, উক্ত সাতটি স্থানের বাইরেও দু'হাত উঠানো যায়। যেমন নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকূর পূর্বে ও পরে হাত উঠিয়েছেন, ইস্তেস্কার নামাযে হাত তুলেছেন।
[১০৩] . দেখুন তোহফাতুল আহওয়াযী ৪৬৪ নং হাদীসের আলোচনা।
[১০৪] . আবু দাঊদ, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ দু'আ হা/১২৭৩। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ দু'আ, অনুচ্ছেদঃ হাদ্দাছানা মুহাম্মাদ বিন বাশ্শার হা/৩৪৭৯। শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ ছহীহ সুন্নাত তিরমিযী, ৩/১৬৯।
[১০৫] . বিস্তারিত দেখুন আল মুগনী ২/৫৮৪, তোহফাতুল আহওয়াযী ৪৬৪ নং হাদীসের আলোচনা দ্রষ্টব্য।
[১০৬] . বায়হাক্বী, ২/২১২। বাইহাকী বলেন, এই বর্ণনার সূত্র ছহীহ। বায়হাক্বী আরো কতিপয় ছাহাবীর নাম উল্লেখ করেছেন, যারা কুনূতের সময় হাত উঠিয়ে দু'আ করেছেন। (দ্রঃ মুগনী ২/৫৮৪, শারহ মুমতে' ৪/২৬, ছহীহ মুসলিম শরহে নবভী ৫/৮৩।
[১০৭] . তিরমিযী, অধ্যায়ঃ দু'আ, অনুচ্ছেদঃ দু'আয় দু'হাত উত্তোলন করা হা/৩৩০৮।
[১০৮] . ফিক্বহুস্ সুন্নাহ্- সাইয়্যেদ সাবেক ১/১৮৫।
[১০৯] . হেদায়াতুন্ন নবী থেকে আইনী তোহফা ১/২২৭।
[১১০] . নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায় ও নফল নামায, অধ্যায়ঃ বিতরের ক্ষেত্রে উবাই বিন কা'বের হাদীছ বর্ণনায় বর্ণনাকারীদের বাক্যের মধ্যে বিভিন্নতা। হা/১৬৮১। হাদীছটি ছহীহ (দ্রঃ মেশকাত- আলবানী ১/ ৩৯৮পৃঃ হা/ ১২৭৪, ১২৭৫)
[১১১] . তিরমিযী, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদ, একরাতে দু'বার বিতর নেই, হা/৪৩৩।
[১১২]. ইবনু মাজাহ্ অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা ও তার মধ্যে সুন্নাত হা/১১৮৫। শায়খ আলবানী হাদীছটিকে হাসান বলেন, (দ্রঃ মেশকাত আলবানী ১/৪০০- ৪০১ পৃঃ হা/১২৮৪, ১২৮৭।)
[১১৩] . বুখারী, অধ্যায়ঃ জুমআর নামায হা/৯৪৩। ও মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায হা/১২৪৫।
[১১৪] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতরের পর দু'আর বর্ণনা হা/১২১৯। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ কোন মানুষ যদি বিতর না পড়ে ঘুমিয়ে থাকে বা ভুলে যায় তখন কি করবে, হা/৪২৮। হাদীছটি ছহীহ্।
[১১৫] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের যাবতীয় নামায এবং যে ব্যক্তি নামায না পড়ে ঘুমিয়ে থাকবে বা অসুস্থ হয়ে যাবে। (এটি দীর্ঘ একটি হাদীছের অংশ বিশেষ) হা/১২৩৩।
[১১৬] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ বিতর, অনুচ্ছেদঃ বিতর ভেঙ্গে দেয়া হা/১২২৭। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ বিতর, অনুচ্ছেদঃ রাতে দু'বার বিতর নেই হা/৪৩২। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও দিনের নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ এক রাতে দু'বার বিতরের ব্যাপারে নবী বএর নিষেধাজ্ঞা, হা/১৬৬১। শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ ছহীহ তিরমিযী, ১/১৪৬।
[১১৭] . তিরমিযী, অধ্যায়ঃ বিতর, অনুচ্ছেদঃ রাতে দু'বার বিতর নেই হা/৪৩২।
[১১৮] . দেখুন ৭০-৭১ নং পৃষ্ঠা।
[১১৯] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ রামাযানে ক্বিয়াম করা হা/১১৬৭। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ ছিয়াম, অনুচ্ছেদঃ রামাযানে ক্বিয়াম করা হা/৭৩৪। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ সাহু সিজদা, অনুচ্ছেদঃ ইমামের সাথে যে ক্বিয়ামুল্লায়ল শেষ করে তার ছওয়াব, হা/১৪৪৭।
[১২০] . বুগইয়াতুল মুতাত্বওয়ে' ৮০ পৃঃ।
[২] . বুখারী, অধ্যায়ঃ কুরআন-সুন্নাহ্ আঁকড়ে ধরা, অনুচ্ছেদঃ রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সুন্নাতের অনুসরণ, হা/৬৭৩৭।
[৩] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায মুস্তাহাব, হা/১২০৮। তিরমিযি, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামাযের ফযীলত, হা/৪১৪। ইবনে মাযাহ, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামাযের বর্ণনা, হা/১১৫৮।
[৪] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায মুস্তাহাব হা/১৪১৬। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ কিয়ামুল্লায়ল, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায পড়ার নির্দেশ, হা/১৬৭৬। ইবনু মাজাহ্, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠিত করা, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায সম্পর্কে আলোচনা। সহীহ তারগীব হাদীছ নং ৫৯৪। ছহীহ ইবনু মাজাহ্- আলবানী হা/১/১৯৩।
[৫] . বুখারী, অধ্যায়ঃ জুমআর নামায, অনুচ্ছেদঃ সফরে বিতর পড়া, হা/৯৪৫।
[৬] . বুখারী, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ যেখানেই থাক ক্বিবলার দিক মুখ ফেরাবে। হা/৩৮৫।
[৭] . ফিকহুস্ সুন্নাহ, বিতর নামাযের আলোচনা ১/১৮১।
[৮] . মাজমূ ফাতাওয়া ২৩/৮৮ বুগ্ইয়াতুল মুতাত্বওয়ে' ফী ছালাতিল মুতাত্বওয়ে' ৪৮ পৃঃ।
[৯] . তিরমিযী, অধ্যায়: ছালাত হা/৪১৫। ইবনে মাজাহ্, অধ্যায় নামায কায়েম করা ও তার মধ্যে সুন্নত, হা/১১৫৯। শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটি ছহীহ দ্রঃ ছহীহ তারগীব তারহীব হা/৫৯২।
[১০] . বুগ্ইয়াতুল মুতাত্বাওয়ে' পৃঃ ৫০।
[১১] . যে হাদীছকে রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর দিকে সম্বধিত করা হয়েছে তাকে মারফূ হাদীছ বলা হয়।
[১২] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত হা/ ১২১০। মুসনাদে আহমাদ, হা/ ২১৬৩৫। হাদীছটি ছহীহ (দ্রঃ ছহীহ তারগীব তারহীব আলবানী হা/৩৭০।
[১৩] . বুখারী, অধ্যায়ঃ ঈমান, অনুচ্ছেদঃ যাকাতের ইসলামের অন্তর্ভূক্ত, হা/৪৪। মুসলিম, অধ্যায়ঃ ঈমান, অনুচ্ছেদঃ নামায সমূহ ইসলামের অন্যতম রুকন, হা/১২।
[১৪] . বিস্তারিত দেখুন নসবুর রায়া- ইমাম যায়লাঈ ২/১১৩পৃঃ।
[১৫] . ইবনু আব্বাস (রাঃ)এর বরাতে মুসনাদে আহমাদ হা/১৯৪৬। ত্ববরানী, দারাকুতনী, বায়হাকী ও হাকেম। এর সনদে 'আবু জনাব আল কালবী' নামক জনৈক বর্ণনাকারী আছে, মুহাদ্দীছগণ যাকে যঈফ বলেছেন। এই জন্য এই হাদীছ দলীল হিসেবে প্রযোজ্য নয়।
[১৬] . মুসনাদে আহমাদ হা/১৯৭৭।
[১৭] . বুখারী, অধ্যায়ঃ জুমআর নামায, অনুচ্ছেদঃ সফরে বিতর পড়া, হা/৯৪৫।
[১৮] . বুখারী, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ যেখানেই থাক ক্বিবলার দিক মুখ ফেরাবে। হা/৩৮৫।
[১৯] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতর কত রাকাত, হা/১২১২, ইবনু মাজাহ, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায তিন, পাঁচ, সাত ও নয় রাকাতের বর্ণনা হা/১১৮০।
[২০] . মুসনাদে আহমাদ হা/২২৭৩১, শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেন, (দ্রঃ সিলসিলা ছহীহা হা/১০৮, ইরউয়া গালীল হা/ ৪২৩, ছহীহ ইবনু মাজাহ্ হা/৯৫৮।)
[২১] . এই হাদীছটি পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্রঃ পৃঃ ১৭-১৮।
[২২] . আল মাওসূআ আল ফেক্বহিয়্যাহ্, ২/১১৪-১১৫পৃঃ।
[২৩] . মুসনাদে আহমাদ হা/ ৬৬২৫। (শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ তারতীব ছহীহুল জামে' হা/১৪৪৪।)
[২৪] . হাদীছটি বর্ণনা করেন বায়হাক্বী সুনানে কুবরায়
[২৫] . দেখুন নাসর্বু রায়া- ইমাম যায়লাঈ হানাফী ২/ ১১১ পৃঃ।
[২৬] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ যে বিতর পড়ে না তার বিধান, হা/১২০৯।
[২৭] . দ্রঃ মেশকাত- আলবানী ১/৩৯৯ পৃঃ হা/ ১২৭৮।
[২৮] . হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বায্যার। মাজমাউয্ যাওয়ায়েদ ২/২৪০পৃঃ।
[২৯] . নায়লুল আওতার, শাওকানী, ৩/৩২।
[৩০] . মুসনাদে আহমাদ হা/২১০৮১।
[৩১] . যে হাদীছের সনদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে- তথা সনদের কোন এক স্থানে এক বা একাধিক বর্ণনাকারীর নাম বাদ পড়েছে তাকে মুনকাতা হাদীছ বলে। আর মুনকাতা' হাদীছ যঈফ হাদীছের অন্তর্ভূক্ত।
[৩২] . বিস্তারিত দেখুন নসবুর রায়া- ইমাম যায়লাঈ ২/১১২পৃঃ।
[৩৩] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায হা/১২৩১। বুখারী, অধ্যায়ঃ জুমআ হা/৯৪১।
[৩৪] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায হা/১২৫৫। তিরমিযী, ইবনু মাজাহ্।
[৩৫] . বুখারী, অধ্যায়ঃ জুমআর নামায, অনুচ্ছেদঃ সর্বশেষে বিতর নামায পড়া, হা/৯৪৩। ও মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায দু'দু রাকাত এবং শেষ রাতে বিতর এক রাকাত, হা/১২৪৫।
[৩৬] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায হা/১২৬৩।
[৩৭] . বুখারী, অধ্যায়ঃ ছিয়াম, অনুচ্ছেদঃ আইয়্যামে বীযের ছিয়াম পালন করা। হা/১১০৭ মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ চাশতের নামায মুস্তাহাব হা/ ১১৮২।
[৩৮] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায দু'দু' রাকাত করে এবং শেষ রাতে এক রাকাত বিতর। হা/১২৫৩।
[৩৯] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায হা/ ১২৪৩।
[৪০] . তিরমিযী, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ ফজর হওয়ার আগেই দ্রুত বিতর পড়ে নেয়া হা/৪৬৯। ছহীহ তিরমিযী- আলবানী হা/ ১/১৪৬। ইরউয়াউল গালীল ২/১৫৪।
[৪১] . ইমাম তিরমিযী বলেন, ইসহাক বিন রাহওয়াই বলেন, যে সমস্ত বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তের রাকাত বিতর পড়তেন- তা দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, তিনি রাতে বিতরসহ তের রাকাতের মাধ্যমে ক্বিয়ামুল্লায়ল নামায পড়তেন। এই জন্য রাতের নামাযকে বিতরের দিকে সম্বধিত করা হয়েছে। অন্য হাদীছে যে বলা হয়েছেঃ তোমরা বিতর নামায পড় হে কুরআনের অনুসারীগণ! এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে 'কুরআনের অনুসারীগণ ক্বিয়ামুল্লায় নামায আদায় করবে। তম্মধ্যে বিতরও ক্বিয়ামুল্লায়লের অন্তর্ভূক্ত। (দ্রঃ তিরমিযী, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায সাত রাকাতের বর্ণনা, হা/ ৪২০)
[৪২] . দ্র: বুখারী (বাংলা) হাদীস নং ৯৩৬, ৯৩২, ৯৩৪, মুসলিম হা/১২৫১।
[৪৩] . মুসলিম, অ্যধায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায দু'দুরাকাত করে এবং বিতর শেষ রাতে এক রাকাত হা/ ১২৪৭।
[৪৪] . মুসলিম, অ্যধায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায দু'দুরাকাত করে এবং বিতর শেষ রাতে এক রাকাত হা/ ১২৪৯।
[৪৫] . শরহে নবুবী ছহীহ মুসলিম, ৬/২৭৭।
[৪৬] . আবু দাউদ হা/১২১২, ইবনু মাজাহ হা/১১৮০।
[৪৭] . নায়লুল আওতার থেকে আইনী তোহফা ১/২২২পৃ:।
[৪৮] . মুসনাদে আহমাদ হা/১৩৮২।
[৪৯] . ছালাতু তারাবীহ্ পৃঃ ৮৫। বিস্তারিত দেখুনঃ ফাতহুল বারী ২/৩৮৫, নাসবুর রায়া ২/১২২।
[৫০] . সূরা নূরঃ আয়াত নং- ৬৩।
[৫১] . ছহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরের বর্ণনা। হা/৯৩২ (বাংলা বুখারী)। মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, হা/১২৩৯।
[৫২] . মুসলিম- হা/১২৫২।
[৫৩] . আল মুগনী ২/৫৮৮।
[৫৪] . আসরাম স্বীয় সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেন। দ্রঃ আল মুগনী ২/৫৮৯।
[৫৫] . আহমাদ হা/২৩৩৯৮। এক্ষেত্রে ইবনু উমার থেকে আরেকটি বর্ণনা পাওয়া যায়ঃ আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বিতরের দু'রাকাত এবং এক রাকাতের মধ্যে সালাম ফিরিয়ে পৃথক করতেন এবং তিনি বলেছেন যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করতেন। (ছহীহ্ ইবনু হিব্বান হা/২৪৩৩। হাফেয ইবনু হাজার বলেন, হাদীছটির সনদ শক্তিশালী, দ্রঃ ফাতহুল বারী ২/৪৮২।
[৫৬] . মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটির সনদ শায়খায়ন (বুখারী মুসলিমের) শর্তানুযায়ী ছহীহ। দ্রঃ ইরওয়াউল গালীল হা/ ৪২০।
[৫৭] . ছহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরের বর্ণনা। হা/৯৩২ (বাংলা বুখারী)। শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন, এ হাদীছটি মাওকূফ হলেও তা মারফূ হাদীছকে শক্তিশালী করছে। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তিন রাকাত বিতর পড়তে চায়, তার জন্যে এ পদ্ধতিই সবচেয়ে উত্তম। (দ্রঃ ছালাতুল মু'মেন- সাঈদ কাহতানী পৃঃ ৩২৫।)
[৫৮] . হাদীছটি বর্ণনা করেন ইমাম হাকেম, তিনি হাদীটিকে ছহীহ বলেন।
[৫৯] . নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, অধ্যায়ঃ বিতরের ক্ষেত্রে উবাই বিন কা'বের হাদীছ বর্ণনায় বর্ণনাকারীদের বাক্যের মধ্যে বিভিন্নতা। হা/১৬৮১।
[৬০] . দারাকুতনী, ২/২৭,২৮। ও বায়হাকী হা/৪৮১২।
[৬১] . নাসবুর রায়া ২/১১৬।
[৬২] . হাদীছটি ইবনু ওমরের বরাতে ত্ববরানী বর্ণনা করেন। (দ্রঃ ছহীহুল জামে- আলবানী অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায, হা/১৪৫৬।
[৬৩] . তাহাভী, দারাকুতনী, ইবনু হিব্বান ও হাকিম হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। হাকিম হাদীছটিকে বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুযায়ী ছহীহ আখ্যা দিয়েছেন এবং ইমাম যাহাবী সমর্থন করেছেন। ইবনু হাজার ও শাওকানীও ছহীহ্ বলেছেন। (দ্রঃ ফাতহুল বারী, ২/৫৫৮, নায়লুল আউতার ৩/৪২-৪৩। শায়খ আলবানীও ছহীহ আখ্যা দিয়েছেন (দ্রঃ ছালাতু তারাবীহ্- ৮৪ ও ৯৭ পৃঃ)
[৬৪] . ফাতহুলবারী, ৪/৩০১।
[৬৫] . সুবুলুস্ সালাম, ১/১২২।
[৬৬] . ছালাতুত্ তারাবীহ্- আলবানী, পৃঃ ৯৭।
[৬৭] . এর বিস্তারিত বিবরণ সামনে আসবে। ইনশাআল্লাহ
[৬৮] . ছহীহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ মসজিদ ও সিজদার স্থান, হা/১০৯৩, ১০৯৪।
[৬৯] . দেখুন মুসলিম শরীফ নবভীর ভাষ্যসহ। ৪/১৭২, ১৭৪।
[৭০] . এর বিস্তারিত বিবরণ সামনে আসবে। ইনশাআল্লাহ
[৭১] . ছালাতুত্ তারাবীহ্- শায়খ আলবানী, পৃঃ ৯৮।
[৭২] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায কত রাকাত। হা/১২১২, ইবনু মাজাহ, অধ্যায়ঃ ছালাত প্রতিষ্ঠা করা, অনুচ্ছেদঃ বিতরের বর্ণনা তিন রাকাত, পাঁচ, সাত ও নয় রাকাত, হা/১১৮০।
[৭৩] . মুসনাদে আহমাদ হা/২৪৫২০। সুনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ কিভাবে পাঁচ রাকাত বিতর পড়বে, হা/১৬৯৮।
[৭৪] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায। হা/১২৩৩।
[৭৫] . সুনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ কিভাবে সাত রাকাত বিতর পড়বে, হা/১৬৯৯।
[৭৬] . নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ কিভাবে সাত রাকাত বিতর পড়বে, হা/১৬৯৫। ছহীহ্ নাসাঈ- আলবানী হা/১/৩৭৫। ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা, অনুচ্ছেদঃ বিতরের বর্ণনা তিন রাকাত, পাঁচ, সাত ও নয় রাকাত, হা/১১৮২। ছহীহ্ ইবনু মাজাহ্- আলবানী হা/১/১৯৭।
[৭৭] . সুনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায় ও নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ কিভাবে সাত রাকাত বিতর পড়বে, হা/১৭০০।
[৭৮] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায। হা/১২৩৩।
[৭৯] . নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, হা/ ১৬৮৯।
[৮০] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায, হা/১২১৬।
[৮১] . বুখারী, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, হা/৯৩৬। মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায। অনুচ্ছেদঃ রাতে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামায ও দু'আ, হা/১২৭৪।
[৮২] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায। অনুচ্ছেদঃ রাতে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামায ও দু'আ, হা/১২১৭।
[৮৩] . নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায় ও নফল নামায, অধ্যায়ঃ বিতরের ক্ষেত্রে উবাই বিন কা'বের হাদীছ বর্ণনায় বর্ণনাকারীদের বাক্যের মধ্যে বিভিন্নতা। হা/১৬৮১। আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতরে কি পাঠ করবে, হা/১২১৩। হাদীছটি ছহীহ (দ্রঃ মেশকাত- আলবানী ১/ ৩৯৮পৃঃ হা/ ১২৭৪, ১২৭৫)
[৮৪] . [ছহীহ] তিরমিযী, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামাযে কি পাঠ করবে। হা/ ৪২৫। আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামাযে যা পাঠ করবে। হা/ ১২১৩। ইবনু মাজাহ্ অধ্যায়ঃ নামায কায়েম করা এবং তার মধ্যে সুন্নাত। অনুচ্ছেদঃ বিতর নামাযে যা পাঠ করবে। হা/ ৪৬৩। শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ ছহীহ্ তিরমিযী হা/৪৬৩।
[৮৫] . কুনূত বলতে উদ্দেশ্য হচ্ছে, নামাযে নির্দিষ্টভাবে দাঁড়ানো অবস্থায় দু'আ করা।
[৮৬] . আল মাওসূআ আল ফেক্বহিয়্যাহ্ ১২৭-১২৮ পৃঃ। [দ্রঃ শায়খ আলবানী প্রণীত নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামায ১৭৯ পৃঃ]
[৮৭] . বুগইয়াতুল মুতাত্বওয়ে' ৭০ পৃঃ। [দ্রঃ মুছান্নাফ- ইবনু আবী শায়বা ২/৩০৫-৩০৬, মুখতাছার ক্বিয়ামুল্লায়ল লিল মারওয়াযী ১৩৫-১৩৬ পৃঃ, মাজমু' ফাতাওয়া ২২/২৭১]
[৮৮] . ছালাতুল মু'মেন ৩৩০, মাজমু' ফাতাওয়া ২৩/৯৯, নায়লুল আওতার- শাওকানী ২/২২৬।
[৮৯] . ইবনে মাজাহ্, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা ও তাতে সুন্নাত, অনুচ্ছেদঃ রুকূর পূর্বে বা পরে ক্বনূতের বর্ণনা। হা/১১৮২। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, অধ্যায়ঃ বিতরের ক্ষেত্রে উবাই বিন কা'বের হাদীছ বর্ণনায় বর্ণনাকারীদের বাক্যের মধ্যে বিভিন্নতা। হা/১৬৮১। হাদীছটি ছহীহ, দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল হা/৪২৬।
[৯০] . মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা ২/৩০২। বর্ণনাটি ছহীহ দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল ২/১৬৬।
[৯১] . হাদীছটির প্রথমাংশ ছহীহ বুখারীতে রয়েছে, অধ্যায়ঃ তারাবীহ্ নামায, অনুচ্ছেদঃ রামাযানে ক্বিয়াম করার ফযীলত হা/২০১০। শেষাংশ রয়েছে ছহীহ ইবনু খুযায়মাতে ২/১৫৫-১৫৬ শায়খ আলবানী এর সনদকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ ছালাতু তারাবীহ্ ৪১-৪২ পৃঃ
[৯২] . বুখারী, অধ্যায়ঃ বিতর, অনুচ্ছেদঃ রুকুর আগে ও পরে ক্বনূত পাঠ করা। হা/ ১০০২। মুসলিম, অধ্যায়ঃ মসজিদ ও নামাযের স্থান, অনুচ্ছেদঃ মুসলমানদের উপর কোন বিপদ আপতিত হলে সকল নামাযে ক্বনূত পাঠ করা মুস্তাহাব, হা/৬৭৭।
[৯৩] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মসজিদ ও নামাযের স্থান, অনুচ্ছেদঃ মুসলমানদের উপর কোন বিপদ আপতিত হলে সকল নামাযে ক্বনূত পাঠ করা মুস্তাহাব, হা/১০৮২।
[৯৪] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ বিতর, অনুচ্ছেদঃ নামাযে ক্বনূত পাঠ করা, হা/১২৩১। শায়খ আলবানী হাদীছটির সনদকে হাসান বলেন, দ্রঃ ছহীহ আবু দাউদ, ১/২৭০।
[৯৫] . ইবনু মাজাহ্, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা, অনুচ্ছেদঃ রুকুর আগে-পরে ক্বনূতের বিবরণ হা/ ১১৭৩। শায়খ আলবানী হাদীছটির সনদকে হাসান বলেন, দ্রঃ ছহীহ ইবনু মাজাহ্ ১/১৯৫। ইরউয়াউল গালীল ২/১৬০।
[৯৬] . ইরউয়াউল গালীল ২/১৬৪।
[৯৭] . ইমাম ইবনে তায়মিয়া বলেন, ফরয নামাযে ক্বনূত পাঠের ব্যাপারে আলেমগণ তিনভাগে বিভক্ত হয়েছেনঃ
১) ফরয নামাযে ক্বনূত পাঠ করা মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে। সুতরাং উহা বিদআত। কেননা নবী ব উহা একমাস পড়ার পর ছেড়ে দিয়েছেন। তার এই ছেড়ে দেয়ায় প্রমাণ করে যে, উহা রহিত।
২) ক্বনূত পাঠ করা সর্বদাই বিধিসম্মত ও সুন্নাত। বিশেষ তরে ফজরের নামাযে।
৩) প্রয়োজনের সময় উহা সুন্নাত। অন্য সময় নয়। যেমনটি রাসূলুল্লাহ্ ব এবং তাঁর পর খোলাফায়ে রাশেদা করেছিলেন। এটাই বিশুদ্ধ কথা। তাঁরা বিপদ দূর হলে= =ক্বনূত পড়া ছেড়ে দিয়েছেন। যদি উহা মানসূখ হত, তবে খোলাফায়ে রাশেদা পড়তেন না। (বিস্তারিত দ্রঃ মাজমু ফাতাওয়া ২৩/ ৯৯, ১০৫-১০৮)
[৯৮] . তিরমিযী, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরে কুনূতের বিবরণ হা/৪২৬। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ কিয়ামুল্লায়ল ও দিনের নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরের দু'আ হা/১৭২৫। আবু দাঊদ, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরে কুনূতের বিবরণ, হা/১২১৪। ইবনু মাজাহ, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা ও তাতে সুন্নাত, অনুচ্ছেদঃ বিতরে কুনূতের বিবরণ, হা/১১৬৮। শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন, দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল, হা/৪৪৯। মেশকাত- আলবানী ১/৩৯৮পৃঃ হা/ ১২৭৩।
[৯৯] . ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/ ১১০০। বায়হাকী সুনানে কুবরা ২/২১১। শায়খ আলবানী এর সনদকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল, ২/১৭০।
[১০০] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ বিতর, অনুচ্ছেদঃ বিতরে কুনূত পাঠ করা, হা/১২১৫। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ কিয়ামুল্লায়ল ও দিনের নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরের দু'আ হা/১৭২৭। শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন, (দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল, হা/৪৩০। মেশকাত-আলবানী ১/৩৯৯পৃঃ হা/ ১২৭৬।)
[১০১] . কুনূতের শেষে নবীজীর উপর দরূদ পাঠ করা ছাহাবায়ে কেরামের কর্ম থেকে ছহীহ সূত্রে প্রমাণিত। যেমনটি উল্লেখ করেছেন শায়খ আলবানী। দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল, ২/১৭৭।
[১০২] . বিস্তারিত দেখুন ইমাম যায়লাঈ হানাফী (রহঃ) প্রণীত নসবুর রয়া ১ম খন্ড ছালাত অধ্যায়ঃ হাদীস নং ৩৮এর আলোচনা। (১/৪৬৯-৪৭১পৃঃ।) এ হাদীছটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। যেমন ত্ববরানী মু'জাম কাবীর গ্রন্থে কয়েকটি সূত্রে ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। কোন বর্ণনাই বিশুদ্ধ নয়। ইমাম বুখারী (রফউল ইয়াদায়ন) গ্রন্থে ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন অতঃপর উহাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। অনুরূপভাবে বায্যার স্বীয় সনদে ইবনে আব্বাস ও ইবনে ওমার থেকে হাদীছটি বর্ণনা করেন এবং মত প্রকাশ করেন যে হাদীছটি বিশুদ্ধ নয়। এমনিভাবে হাকেম (মুস্তাদরাক) গ্রন্থে ইবনে আব্বাস ও ইবনে ওমার থেকে হাদীছটি বর্ণনা করেন।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এই ইবনে ওমার ও ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে একাধিক ছহীহ সূত্রে প্রমাণিত হয়েছে যে, উক্ত সাতটি স্থানের বাইরেও দু'হাত উঠানো যায়। যেমন নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকূর পূর্বে ও পরে হাত উঠিয়েছেন, ইস্তেস্কার নামাযে হাত তুলেছেন।
[১০৩] . দেখুন তোহফাতুল আহওয়াযী ৪৬৪ নং হাদীসের আলোচনা।
[১০৪] . আবু দাঊদ, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ দু'আ হা/১২৭৩। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ দু'আ, অনুচ্ছেদঃ হাদ্দাছানা মুহাম্মাদ বিন বাশ্শার হা/৩৪৭৯। শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ ছহীহ সুন্নাত তিরমিযী, ৩/১৬৯।
[১০৫] . বিস্তারিত দেখুন আল মুগনী ২/৫৮৪, তোহফাতুল আহওয়াযী ৪৬৪ নং হাদীসের আলোচনা দ্রষ্টব্য।
[১০৬] . বায়হাক্বী, ২/২১২। বাইহাকী বলেন, এই বর্ণনার সূত্র ছহীহ। বায়হাক্বী আরো কতিপয় ছাহাবীর নাম উল্লেখ করেছেন, যারা কুনূতের সময় হাত উঠিয়ে দু'আ করেছেন। (দ্রঃ মুগনী ২/৫৮৪, শারহ মুমতে' ৪/২৬, ছহীহ মুসলিম শরহে নবভী ৫/৮৩।
[১০৭] . তিরমিযী, অধ্যায়ঃ দু'আ, অনুচ্ছেদঃ দু'আয় দু'হাত উত্তোলন করা হা/৩৩০৮।
[১০৮] . ফিক্বহুস্ সুন্নাহ্- সাইয়্যেদ সাবেক ১/১৮৫।
[১০৯] . হেদায়াতুন্ন নবী থেকে আইনী তোহফা ১/২২৭।
[১১০] . নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায় ও নফল নামায, অধ্যায়ঃ বিতরের ক্ষেত্রে উবাই বিন কা'বের হাদীছ বর্ণনায় বর্ণনাকারীদের বাক্যের মধ্যে বিভিন্নতা। হা/১৬৮১। হাদীছটি ছহীহ (দ্রঃ মেশকাত- আলবানী ১/ ৩৯৮পৃঃ হা/ ১২৭৪, ১২৭৫)
[১১১] . তিরমিযী, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদ, একরাতে দু'বার বিতর নেই, হা/৪৩৩।
[১১২]. ইবনু মাজাহ্ অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা ও তার মধ্যে সুন্নাত হা/১১৮৫। শায়খ আলবানী হাদীছটিকে হাসান বলেন, (দ্রঃ মেশকাত আলবানী ১/৪০০- ৪০১ পৃঃ হা/১২৮৪, ১২৮৭।)
[১১৩] . বুখারী, অধ্যায়ঃ জুমআর নামায হা/৯৪৩। ও মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায হা/১২৪৫।
[১১৪] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতরের পর দু'আর বর্ণনা হা/১২১৯। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ কোন মানুষ যদি বিতর না পড়ে ঘুমিয়ে থাকে বা ভুলে যায় তখন কি করবে, হা/৪২৮। হাদীছটি ছহীহ্।
[১১৫] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের যাবতীয় নামায এবং যে ব্যক্তি নামায না পড়ে ঘুমিয়ে থাকবে বা অসুস্থ হয়ে যাবে। (এটি দীর্ঘ একটি হাদীছের অংশ বিশেষ) হা/১২৩৩।
[১১৬] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ বিতর, অনুচ্ছেদঃ বিতর ভেঙ্গে দেয়া হা/১২২৭। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ বিতর, অনুচ্ছেদঃ রাতে দু'বার বিতর নেই হা/৪৩২। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও দিনের নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ এক রাতে দু'বার বিতরের ব্যাপারে নবী বএর নিষেধাজ্ঞা, হা/১৬৬১। শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেন, দ্রঃ ছহীহ তিরমিযী, ১/১৪৬।
[১১৭] . তিরমিযী, অধ্যায়ঃ বিতর, অনুচ্ছেদঃ রাতে দু'বার বিতর নেই হা/৪৩২।
[১১৮] . দেখুন ৭০-৭১ নং পৃষ্ঠা।
[১১৯] . আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ রামাযানে ক্বিয়াম করা হা/১১৬৭। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ ছিয়াম, অনুচ্ছেদঃ রামাযানে ক্বিয়াম করা হা/৭৩৪। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ সাহু সিজদা, অনুচ্ছেদঃ ইমামের সাথে যে ক্বিয়ামুল্লায়ল শেষ করে তার ছওয়াব, হা/১৪৪৭।
[১২০] . বুগইয়াতুল মুতাত্বওয়ে' ৮০ পৃঃ।
_________________________________________________________________________________
সংকলন ও গ্রন্থনা: প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, মদীনা মুনাওয়ারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লিসান্স প্রাপ্ত, বহু গ্রন্থ প্রণেতা শাইখ মুহা: আব্দুল্লাহ আল কাফী।
প্রকাশনায়: জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদী আরব।
নিবন্ধটি ডাউনলোড করুন (ওয়ার্ড ভার্সন) (মাত্র ৫৫২ কেবি)
নিবন্ধটি ডাউনলোড করুন (পিডিএফ ভার্সন) (মাত্র ৫২১ কেবি)
আরও পড়ুনঃ বিত্র নামায
আরও পড়ুনঃ কসর ও জমা করে সালাত আদায় সম্পর্কে কিছু বিধান
আরও পড়ুনঃ কুরআন ও সুন্নাহ্র আলোকে রাতের সালাত
আরও পড়ুনঃ তারবীহর রাকায়াত সংখ্যা ৮ না ২০?
আরও পড়ুনঃ তারাবীহর নামাযের রাকআত সংখ্যা
আরও পড়ুনঃ তারাবীহ -এর সালাতের রাক্‘আত সংখ্যা
আরও পড়ুনঃ কিয়ামুল লাইলের সমপরিমাণ সওয়াব
আরও পড়ুনঃ জুম‘আর নামায
আরও পড়ুনঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) - ১ম পর্ব
আরও পড়ুনঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) - ২য় পর্ব
আরও পড়ুনঃ সালাত আদায়ের পদ্ধতি
আরও পড়ুনঃ সালাতের আহকাম ও পদ্ধতি
আরও পড়ুনঃ নামায শিক্ষা
আরও পড়ুনঃ জামা‘আতের সাথে নামায আদায়
আরও পড়ুনঃ সালাত পরবর্তী দুয়া ও জিকির সমূহ
ডাউনলোড করুনঃ বইঃ রাসূল (সা)-এর নামায (ফ্রি ডাউনলোড)
ডাউনলোড করুনঃ বইঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) - ফ্রি ডাউনলোড
ডাউনলোড করুনঃ বইঃ সালাতুত তারাবীহ - ফ্রি ডাউনলোড
ডাউনলোড করুনঃ বইঃ তারাবীহ ও ই’তিকাফ - ফ্রি ডাউনলোড
“সালাত” বিষয়ের উপর আরও পড়তে এইখানে ক্লিক করুন।
পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন