শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৩

পেশাব করার পর মনে হয় কয়েক ফোটা বের হয়েছে

পেশাব করার পর মনে হয় কয়েক ফোটা বের হয়েছে

   


পেশাব করার পর মনে হয় কয়েক ফোটা বের হয়েছে

প্রশ্ন : জনৈক ব্যক্তি পেশাব শেষ করে পেশাবের স্থান ধৌত করে নেয়। কিন্তু যখনই সে নড়াচড়া করে ও দাঁড়ায়, তখন অনুভব হয় যে, কয়েক ফোটা পেশাব বের হয়েছে। এ জন্য সে দীর্ঘ সময় পেশাবের স্থানে বসে থাকে আর বলে : কি করব ? সে কি তার এ অনুভূতি ও ধারণা ত্যাগ করে অযূ পূর্ণ করে নেবে ? না, পরিপূর্ণ পেশাব বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে ? আশা করি উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন। আল্লাহ আপনাদের কল্যাণ করুন।

উত্তর :
আল-হামদুলিল্লাহ

এ বিষয়টি ওয়াসওয়াসা ও সন্দেহ থেকে সৃষ্টি হয়। আর এগুলো তৈরি হয় শয়তানের পক্ষ থেকে। তবে কারো কারো ব্যাপারে প্রকৃত পক্ষেই এমন ঘটে। আর প্রকৃত হলে, সে তাড়াহুড়ো করবে না, বরং পেশাব বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে, অতঃপর পানি দ্বারা পেশাবের স্থান ধৌত করবে। এরপর যদি কোন কিছুর আশঙ্কা থাকে, তাহলে লজ্জাস্থানের আশপাশে লুঙ্গি বা পায়জামায় পানি ছিটিয়ে দেবে। অতঃপর অযূ শেষ করার পর যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়, সে দিকে সে ভ্রুক্ষেপ করবে না। ওয়াসওয়াসা ত্যাগ করার জন্য এ পদ্ধতি তার জন্য সহায়ক হবে।

আর যদি শুধুই সন্দেহ ও ওয়াসওয়াসা হয়, যার কোন বাস্তবতা নেই, তবে তার প্রতি মোটেই ভ্রক্ষেপ করবে না। মুমিনদের জন্য এ সমস্ত জিনিসে দৃষ্টি না দেয়া উচিত। কারণ, এগুলো শয়তানের ওয়াসওয়াসা। শয়তান চায় মানব জাতির সালাত-ইবাদত নষ্ট করতে। অতএব, তার ষড়যন্ত্র ও ওয়াসওয়াসা থেকে সতর্ক থাকা জরুরি। আল্লাহকে আকড়ে থাকা এবং তার উপর ভরসা করা। আর এসব যা কিছু সৃষ্টি হয়, তা শয়তানের পক্ষ থেকে মনে করা, যাতে অযূ এবং তার পরবর্তী সালাতে এর প্রতি কোন ভ্রুক্ষেপ সৃষ্টি না হয়। আর নিশ্চিতভাবে কিছু বের হলে, পুনরায় পবিত্র হবে ও অযূ করবে।

আর ধারণার কোনই গ্রহণ যোগ্যতা নেই। যদিও ৯৯% ভাগ ধারণা হয়, তার প্রতিও কোন ভ্রুক্ষেপ করা যাবে না। এগুলো শয়তানের প্ররোচনা। যতক্ষণ পর্যন্ত দৃঢ় বিশ্বাস না হবে, সে তার অযূ, সালাত ও অন্যান্য কাজ করে যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করা হয়েছিল : 
হে আল্লাহর রাসূল, কোন ব্যক্তির ধারণা হয় যে, তার সালাতে কিছু বের হয়েছে। উত্তরে তিনি বলেন : 
(لَا يَنْصَرِفْ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا
সালাত ত্যাগ করবে না, যতক্ষণ না সে আওয়াজ শোনে, অথবা গন্ধ পায়। 
এখানে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, আওয়াজ বা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত, কেবল ধারণার উপর নির্ভর করে সালাত ত্যাগ করবে না। তদ্রূপ মানুষ যখন অযূ থেকে ফারেগ হয়, অতঃপর কোন কিছু অনুভূত হলে, সে দিকে ভ্রুক্ষেপ করবে না, এবং তার প্রতি ফিরে যাবে না। বরং, সে তার পবিত্রতা, সালাত ও আমল করে যাবে, যতক্ষণ না ১০০% ভাগ ধারণা হয় যে, কিছু বের হয়েছে। কারণ, কিছু বের না হওয়াই নিয়ম। আরো স্মরণ রাখবে যে, শয়তানের ওয়াসওয়াসা, তার প্ররোচনা ও তার সৃষ্ট সন্দেহ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, মুমিনকে ক্লান্ত করা ও তাকে কল্যাণকর এসব কাজ থেকে বিরত রাখা। আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা চাচ্ছি।  
শায়খ আব্দুল আযীয বিন বায - রাহিমাহুল্লাহ- "فتاوى نور على الدرب" (2/577) 


মুফতী : শায়খ আব্দুল আযীয ইবন আবদুল্লাহ ইবন বায রাহিমাহুল্লাহ
অনুবাদক : সানাউল্লাহ নজির আহমদ
সূত্র : www.islamqa.info



“প্রশ্নোত্তর” বিষয়ের উপর আরও পড়তে এইখানে ক্লিক করুন।
“ফতোওয়া” বিষয়ের উপর আরও পড়তে এইখানে ক্লিক করুন।

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।

৩টি মন্তব্য:

  1. আসসালামুয়ালাইকুম. ...

    আমি একজন প্রবাসী,আমি যে জায়গাতে থাকি সেখানে ১০/১২লোকের ইমামতি আমাকে করতে হয়..এখন আমার প্রশ্ন হোলো যখন আমি অযু করে ইমামতি করতে দাড়াই সেজদায় যাওয়ার সময় আমার এক ফোঁটা প্রস্রাব বের হয়ে গেছে,তখন আমার কি করা উচিৎ?কারণ আমার মুসুল্লিরা কেউ ওই নামাজ কে কন্টিনিউ করতে আগ্রহী নয়...তারা ইমামতি করতে ভয় পায়।

    উত্তরমুছুন
  2. জনাব,
    আসসালামু আলাইকুম
    আমার প্রসাব করার পর সাদা তরল জাতীয় ধাতু বেড় হয় এবং এটি প্রসাব করার পর প্রায় ১৫-৩০মিনিট পর্যন্ত বেড় হতে থাকে ধাতুর পরিমান খুব কম এবং অনেক সময় জামার সাথে ঘর্যন লাগলেও ধাত বেড় হচ্ছে এমতা বস্থায় পাক-পবিত্র থাকা আমার পক্ষে কষ্ট সাধ্য হয়ে যাচ্ছে।সে ক্ষেত্রে আমার নামাজের বিধানটি একটু বলুন।আমার বয়স ১৯বছর।

    উত্তরমুছুন
  3. আমি প্রস্রাব করার পরে দু থেকে তিন মিনিট ডিলা কুলুপ হাঁটাহাঁটির পড়ে পানি ব্যবহার করে দুয়ে পরিস্কার করে নেই। তার কিছুক্ষণ পরে দু এক ফোঁটা বাহির হয়,দেখা যায় অজু করে নামাজে দাড়াব এমন সময় এ রকম হয়, এখন কি আমার নামাজ পড়া সহি হবে নাকি আমি অপবিত্র হয়ে যাব?মেহেরবানী করে সহি ফয়সালা দিলে উপকৃত হব।

    উত্তরমুছুন