বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০১৩

রজব মাস: এ সব বিদ’আত দূর হওয়া আবশ্যক

রজব মাস: এ সব বিদ’আত দূর হওয়া আবশ্যক



রজব মাস: এ সব বিদ’আত দূর হওয়া আবশ্যক

আলোচ্য সূচী:
১) ভূমিকা
২) রজব মাসকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোন ইবাদত করার কথা কি হাদীসে বর্ণিত হয়েছ?
৩) রজব মাস সম্পর্কে কয়েকটি দুর্বল হাদীস।
৪) রজব মাস সম্পর্কে কয়েকটি জাল হাদীস।
৫) রজব মাসকে কেন্দ্র করে নামায, রোযা, ইতিকাফ ইত্যাদি ইবাদত করা।
৬) সালাতুর রাগায়েব এর বিদআত।
৭) শবে মেরাজ পালন করার বিদআত।
তাহলে আসুন, আমরা ধারাবাহিকভাবে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনায় প্রবৃত্ত হই।
——————————————————————-

রজব মাসের বেদআত : শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি

রজব মাসের বেদআত : শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি



রজব মাসের বেদআত : শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি

রজব মাস পালন, তার ফজিলত, তাতে রোজা রাখা-ইত্যাদি বিষয়ে শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি যাচাই, এই সময়ের একটি বহুল উচ্চারিত প্রশ্ন। বিষয়টি খুবই তাৎক্ষণিক, তাই আমি এ মাসের সাথে সম্পর্কিত কিছু আহকাম বিষয়ে সংক্ষেপে আলোকপাত করার প্রয়াস পাব, আল্লাহ আমাকে সাহায্য করুন।

বুধবার, ২৯ মে, ২০১৩

শাবান মাস: সুন্নত উপেক্ষিত বিদ'আত সমাদৃত

শাবান মাস: সুন্নত উপেক্ষিত বিদ'আত সমাদৃত



শাবান মাস: সুন্নত উপেক্ষিত বিদ'আত সমাদৃত

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
প্রাণ প্রিয় ভাই, রামাযানুল মোবারকের প্রস্তুতির মাস শাবান আমাদের মাঝে উপস্থিত। এ মাসে আমাদের জন্য রয়েছে কিছু করণীয়। রয়েছে কিছু বর্জনীয়। এ বিষয়টি নিয়েই আজকের এই পোস্টের অবতারণা। এতে মোট ৭টি বিষয় আলোচিত হয়েছে। যথা:
১) শাবান মাসে নফল রোযা রাখা সম্পর্কে বর্ণিত সহীহ হাদীস সমূহ।
২) শাবান মাসের পনের তারিখের ব্যাপারে একটি হাদীস পর্যালোচনা ও তার শিক্ষা।
৩) শাবান মাস সম্পর্কে কতিপয় প্রচলিত জাল ও যঈফ হাদীস|
৪) কুরআন কোন রাতে অবর্তীণ হয়? শাবান মাসের শবে বরাতে নাকি রামাযান মাসের শবে কদরে?
৫) শবে বরাত উদ্‌যাপন করা বিদআত।
৬) শাবান মাসে প্রচলিত কতিপয় বিদআত।
৭) সারাংশ।

শবে বরাত উপলক্ষে প্রচলিত কতিপয় বিদ'আতের উদাহরণ

শবে বরাত উপলক্ষে প্রচলিত কতিপয় বিদ'আতের উদাহরণ



শবে বরাত উপলক্ষে প্রচলিত কতিপয় বিদ'আতের উদাহরণ

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
প্রিয় ভাই, আর ক’দিন পরই আমাদের সমাজে মহাসমারোহে পালিত হবে শবে বরাত। সে দিন সরকারী ছুটি ঘোষণা করা হবে। হালুয়া-রুটি খাওয়ার ধুম পড়ে যাবে। অনুষ্ঠিত হবে মিলাদ মাহফিল ও জিকিরের মজলিস। সেই সাথে মুর্হুমূহু আতশবাজিতে কেঁপে কেঁপে উঠবে শবে বরাতের রাতের আকাশ। আরও দেখা যাবে মসজিদের আঙ্গিনাতে যাদের পদ যুগল পড়ত না সে রাতে তারাই আতর-সুগন্ধি মেখে টুপি-পাঞ্জাবী পরে মসজিদের প্রথম কাতারে মুসল্লী সেজে অবস্থান করছে আর বিশেষ কিছু এবাদত-বন্দেগী করে মনে করবে জীবনের সব গুনাহ মাফ হয়ে গেছে। তারপর দিন সকাল থেকে লিপ্ত হবে যাবতীয় অন্যায়-অপকর্ম, দুর্নীতি আর আল্লাহর নাফরমানীতে। হয়ত সে দিনকার ফজরের নামায পড়ারও সময় হবে না। আর অপেক্ষায় থাকবে আগামী বছর শবে বরাতের। এভাবে আরও কত কি? আমাদের সমাজের এ অবস্থায় আমরা জানার চেষ্টা করি একাজগুলো কতটুকু ইসলাম সমর্থিত?

যে সকল ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলাম সমর্থন দেয় নি সেটা ইসলামের নামে করাই তো বিদআত। বিদআতের পরিণাম অতি ভয়ানক। এ ব্যাপারে কুরআনও হাদীসে অসংখ্য সতর্কতা উচ্চারিত হয়েছে। তাই আসুন, আমরা নিজেরা বিদআত থেকে বাঁচি সেই সাথে বাঁচানোর চেষ্টা করি আমাদের সমাজকে। আল্লাহ আমাদেরকে তাওফীক দান করুন।

মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০১৩

শবে বরাত ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

শবে বরাত ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা



শবে বরাত ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

শবে বরাত আভিধানিক অর্থ অনুসন্ধান
শব ফারসি শব্দ অর্থ রাত বা রজনী বরাত শব্দটিও মূলে ফারসি অর্থ ভাগ্য দুশব্দের একত্রে অর্থ হবে, ভাগ্য-রজনী
বরাত শব্দটি আরবি ভেবে অনেকেই ভুল করে থাকেন কারণ বরাত বলতে আরবি ভাষায় কোন শব্দ নেই
যদি বরাত শব্দটি আরবি বারাআত শব্দের অপভ্রংশ ধরা হয় তবে তার অর্থ  হবেসম্পর্কচ্ছেদ বা বিমুক্তিকরণ কিন্তু কয়েকটি কারণে অর্থটি এখানে অগ্রাহ্য, মেনে নেয়া যায় না-
. আগের শব্দটি ফারসি হওয়ায় বরাত শব্দটিও ফারসি হবে, এটাই স্বাভাবিক
. শাবানের মধ্যরজনীকে আরবি ভাষার দীর্ঘ পরম্পরায় কেউই বারাআতের রাত্রি হিসাবে আখ্যা দেননি
. রমযান মাসের লাইলাতুল ক্বাদরকে কেউ-কেউ লাইলাতুল বারাআত হিসাবে নামকরণ করেছেন, শাবানের মধ্য রাত্রিকে নয়

সোমবার, ২৭ মে, ২০১৩

তাকওয়ার উপকারিতা

তাকওয়ার উপকারিতা



তাকওয়া এমন এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আল্লাহ তা‘আলা যার অসিয়ত তার পূর্বাপর সকল বান্দাকে করেছেন ও তা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
﴿وَلَقَدۡ وَصَّيۡنَا ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَإِيَّاكُمۡ أَنِ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ وَإِن تَكۡفُرُواْ فَإِنَّ لِلَّهِ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَنِيًّا حَمِيدٗا ١٣١ ﴾ [النساء: ١٣١] 
আর তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমি নির্দেশ দিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আর যদি কুফরী কর তাহলে আসমানসমূহে যা আছে এবং যা আছে জমিনে সব আল্লাহরই। আর আল্লাহ অভাবহীন, প্রশংসিত।[সূরা নিসা: (১৩১)]

অন্তরের আমল: দ্বীনদারি

অন্তরের আমল: দ্বীনদারি



ভূমিকা
الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على نبينا محمد، وعلى آله وصحبه أجمعين.
যাবতীয় প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামীনের যিনি সমগ্র জাহানের প্রতিপালক। আর সালাত ও সালাম নাযিল হোক আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর, যিনি সমস্ত নবীগণের সেরা ও সর্বশ্রেষ্ঠ আরও সালাত ও সালাম নাযিল হোক তার পরিবার, পরিজন ও সাথী-সঙ্গীদের উপর।

অন্তরের আমলসমূহের অন্যতম আমল হল, পরহেজগারি দ্বীনদারি পরহেজগারি দ্বীনদারি হল, দ্বীনের খুঁটিসমূহ তথা ভিত্তিসমূহের একটি অন্যতম ভিত্তি ও খুটিতাকওয়া, পরহেজগারি ও আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর ভয় ছাড়া ঈমানদারি চলে না। মনে রাখতে হবে, দ্বীনদারি মানবাত্মা ও অন্তরকে যাবতীয় নাপাকী-অপবিত্রতা থেকে পবিত্র করে এবং বিভিন্ন ধরনের মানবিক ব্যাধি-হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রিকাতরাতা ইত্যাদি হতে মুক্ত করে। পরহেজগারি দ্বীনদারি হল, ঈমানী বৃক্ষের ফল এবং ঈমানের সৌন্দর্যদ্বীনদারি ছাড়া ঈমান, ফল ছাড়া বৃক্ষের মত। ঈমানের পরিপূর্ণতার জন্য দ্বীনদারি আবশ্যক। তবে দ্বীনদারি কি তা আমাদের অবশ্যই জানা থাকতে হবে। আমরা অনেকেই পরহেজগারি দ্বীনদারি কি তা জানি না। এ জন্য পরহেজগারি দ্বীনদারি সম্পর্কে আলোচনা খুবই জরুরি। যাতে আমরা কোনটি দ্বীনদারি আর কোন গোড়ামি তা জানতে ও বুঝতে পারি।

অন্তর বিধ্বংসী বিষয়সমূহ : অহংকার

অন্তর বিধ্বংসী বিষয়সমূহ : অহংকার



অন্তর বিধ্বংসী বিষয়সমূহ : অহংকার

ভূমিকা
الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على أشرف المرسلين، نبينا محمد، وعلى آله وأصحابه أجمعين.
যাবতীয় প্রশংসা কেবলই আল্লাহ তা‘আলার যিনি সমগ্র জগতের মালিক ও প্রতিপালক। আর সালাত ও সালাম নাযিল হোক আমাদের নবী মুহাম্মদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর উপর, যিনি সমস্ত নবীগণের সরদার ও সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী। আরও নাযিল হোক তার পরিবার, পরিজন ও সমগ্র সাথী সঙ্গীদের উপর।
মনে রাখতে হবে, অহংকার ও বড়াই মানবাত্মার জন্য খুবই ক্ষতিকর ও মারাত্মক ব্যাধি, যা একজন মানুষের নৈতিক চরিত্রকে শুধু কলুষিতই করে না বরং তা একজন মানুষকে হেদায়াত ও সত্যের পথ থেকে দূরে সরিয়ে ভ্রষ্টতা ও গোমরাহির পথের দিকে নিয়ে যায়। যখন কোন মানুষের অন্তরে অহংকার ও বড়াইর অনুপ্রবেশ ঘটে, তখন তা তার জ্ঞান, বুদ্ধি ও ইরাদার উপর প্রাধান্য বিস্তার করে এবং তাকে নানাবিধ প্রলোভন ও প্ররোচনার মাধ্যমে খুব শক্ত হস্তে টেনে নিয়ে যায় ও বাধ্য করে সত্যকে অস্বীকার ও বাস্তবতাকে প্রত্যাখ্যান করতে। আর একজন অংহকারী সবসময় চেষ্টা করে হকের নিদর্শনসমূহকে মিটিয়ে দিতে। অত:পর তার নিকট সজ্জিত ও সৌন্দর্য মণ্ডিত হয়ে ওঠে কিছু বাতিল, ভ্রান্ত, ভ্রষ্টতা ও গোমরাহি যার কোন বাস্তবতা নাই। ফলে সে এ সবেরই অনুকরণ করতে থাকে এবং গোমরাহিতে নিপতিত থাকে। এ সবের সাথে আরও যোগ হবে, মানুষ সে যত বড়ই হোক না কেন, তাকে সে নিকৃষ্ট মনে করবে, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে তাকে অপমান করবে।
এ পুস্তিকায় অহংকার কাকে বলে তা বর্ণনা করা হয়েছে এবং অহংকার ও বড়াইর মধ্যে পার্থক্য কি তা আলোচনা করা হয়েছে। এ ছাড়াও এ পুস্তিকায় থাকছে অহংকারের ক্ষতি, নিদর্শন, কারণ ও মানব জীবনে তার প্রভাব কি তার একটি সার-সংক্ষেপ। সবশেষে অহংকারের চিকিৎসা কি তা আলোচনা করে রিসালাটির সমাপ্তি টানা হয়েছে।
এ পুস্তিকাটি তৈরি করা ও এটিকে একটি সন্তোষজনক অবস্থানে দাঁড় করাতে যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশে আমি কখনোই ভুলবো না।  
আল্লাহ তা‘আলার নিকট প্রার্থনা করি, আল্লাহ তা‘আলা আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের স্থায়ী ও চিরন্তন কল্যাণ দান করুন। আমাদের ক্ষমা করুন। আমীন।
وصلى الله وسلم على نبينا محمد وعلى آله وصحبه أجمعين.
—    মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ

সালাত আদায়ের পদ্ধতি


নিশ্চয় সকল প্রশংসার মালিক আল্লাহ তাআলাআমরা তার প্রশংসা করিতার নিকট সাহায্য চাইতার নিকট ইস্তেগফার করি। আমরা আমাদের প্রবৃত্তির অনিষ্ট ও কুকর্মের বদ আছর থেকে তার নিকট চাই। তিনি যাকে হিদায়াত করেনতাকে কেউ গোমরাহ করতে পারে নাআর যাকে তিনি গোমরাহ করেনতাকে কেউ সুপথ দেখাতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যেআল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেইতিনি এক-তার কোন শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যেমুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ তার উপর এবং তার বংশধর ও সাহাবাদের উপর এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারা তাদের সুন্দরভাবে অনুসরণ করবেতাদের সকলের উপর অসংখ্য-অগনন দরুদ ও সালাম বর্ষণ করুন।
অতঃপর: সিফাতুস সালাত’ তথা সালাতের নিয়ম-পদ্ধতি সংক্রান্ত এটা একটা ছোট পুস্তিকাএতে আমি তাকবির থেকে আরম্ভ করে সালাম পর্যন্ত কুরআন ও হাদিসের দৃষ্টিকোন থেকে সালাতের নিয়ম-পদ্ধতি বর্ণনা করেছি। এ পুস্তিকা লেখার ক্ষেত্রে আমি আমাদের শায়খ আল্লামা আব্দুল আজিজ ইব্‌ন আব্দুল্লাহ ইব্‌ন বাজ এর দরস ও তাকরির থেকে অনেক উপকৃত হয়েছি। আল্লাহ তাকে জান্নাতে সুউচ্চ স্থান দান করুন।
দোয়া করছি আল্লাহ আমাদের এ ক্ষুদ্র আমলকে বরকতময় করুন এবং একে একমাত্র তার সন্তুষ্টির জন্য কবুল করুন। এর দ্বারা আমাকে উপকৃত করুন জীবনে ও মরণে এবং প্রত্যেক পাঠককে। তিনি দোয়া কবুলকারী ও মনোবাঞ্চনা পূর্ণকারী।

লেখক
শুক্রবারের প্রথম প্রহর
১৮/০৮/১৪২০হি.

আমরা কিভাবে কুরআন বুঝব?

আমরা কিভাবে কুরআন বুঝব?



ভূমিকা :
আল-কুরআনুল কারীম মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার পক্ষ থেকে নাযিলকৃত সর্বশ্রেষ্ঠ ও চিরন্তন মুজিযাবিশ্ব মানবতার মুক্তিসনদ। এতে রয়েছে মানব জীবনের সকল দিক ও বিভাগ সম্পর্কে সুস্পষ্ট হিদায়াত ও দিক-নির্দেশনারয়েছে আলোকবর্তিকাউপদেশরহমত ও অন্তরের যাবতীয় ব্যাধির উপশম। আল্লাহ সুবহানাহু বলেন,
﴿يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدىً وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ (57) قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ﴾
‘‘হে মানুষ! তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে এসেছে উপদেশ এবং অন্তরসমূহে যা থাকে তার শিফাআর মুমিনদের জন্য হিদায়াত ও রহমাত। বল, ‘আল্লাহর অনুগ্রহে ও রহমাতে। সুতরাং এ নিয়েই যেন তারা খুশী হয়। এটি যা তারা জমা করে তার চেয়ে উত্তম।’’[1] 

রবিবার, ২৬ মে, ২০১৩

মিথ্যা থেকে বাঁচার উপায়

মিথ্যা থেকে বাঁচার উপায়



মিথ্যা থেকে বাঁচার উপায়

মিথ্যা যে একটি বদ অভ্যাস তাতে কেউ সন্দেহ করে বলে আমি মনে করি না, কারণ মিথ্যাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধ্বংসকর বলে মন্তব্য করেছেন আরো বলেছেন, মিথ্যা মুনাফেকীর নিদর্শন। মানুষ মিথ্যা বলতে বলতে এক সময় আল্লাহর দরবারে মিথ্যাবাদী বলে সাব্যস্ত হয়। আর সত্য বলা ও সত্য বলার প্রচেষ্টায় রত থাকলে আল্লাহ্ তাকে সত্যবাদী বলে লিখে নেন; এখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদীসের ভাষ্যই উদ্ধৃত করলাম।

বিলাপ-মাতম ও কবর জিয়ারত

বিলাপ-মাতম কবর জিয়ারত


বিলাপ-মাতম ও কবর জিয়ারত


প্রশ্ন: নারীদের জন্য কবর জিয়ারত করা কি হারাম, মৃত ব্যক্তি যদিও তাদের আপন কেউ হয় ? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (لعن الله المرأة النائحة والمستمعة) এ হাদিসে المستمعة শব্দের অর্থ কি? এর দ্বারা কি সে নারী উদ্দেশ্য, যে ইনিয়ে-বিনিয়ে মানুষের কথা নকল করে, অথবা সে নারী উদ্দেশ্য, যে গান--বাজনা শ্রবণ করে, অথবা সে নারী উদ্দেশ্য, যে টেলিভিশন দেখে ও রেডিও শোনে। আশা করি এর ব্যাখ্যা দেবেন। আল্লাহ আপনাদের উত্তম বিনিময় দান করুন।
উত্তর:
আল-হামদুলিল্লাহ
নারীদের জন্য কবর জিয়ারত করা জায়েজ নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(زُورُوا الْقُبُورَ فَإِنَّهَا تُذَكِّرُكُمْ الْآخِرَةَ)
তোমরা কবর জিয়ারত কর, কারণ তা তোমাদের আখেরাত স্মরণ করিয়ে দেয়।

নারীদের হাই-হিল পরার হুকুম কি?

নারীদের হাই-হিল পরার হুকুম কি?



নারীদের হাই-হিল পরার হুকুম কি?

আলহামদুলিল্লাহ
নারীদের জন্য হাই-হিল পরা বৈধ নয়, কেননা হাই-হিল পরে নারীদের পড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে আর ইসলামি শরিয়ত সাধারণ অর্থে আমাদেরকে আশঙ্কাজনক বিষয় থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে
(আর তোমরা নিজদেরকে হত্যা করো না) [ সূরা আন-নিসা:২৯ ] 
অন্য এক আয়াতে এসেছে
(তোমরা তোমাদের নিজদেরকে ধ্বংসে নিপতিত করো না [ সূরা আল বাকারা:১৯৫ ]

নারী-পুরুষ সংমিশ্রণের বিধান

নারী-পুরুষ সংমিশ্রণের বিধান



নারী-পুরুষ সংমিশ্রণের বিধান

সৌদি আরবের ইলমী গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে নিম্নবর্ণিত জিজ্ঞাসা করা হয়েছে :
(এক ব্যক্তি এখনো নারী-পুরুষ সংমিশ্রণ সমস্যায় ভুগছে। আপনারা যদি তার মাতা-পিতা ও ভাই-বেরাদরকে এ ব্যাপারে উপদেশ দিতেন যাতে সে তাদের মাতা-পিতার অনুমতি নিয়েই দূরে থাকতে পারে এবং উত্তমরূপে শরিয়তে বিধান চর্চায় সক্ষম হয়? )

উত্তরে তারা বলেছেন:
গায়রে মাহরাম অর্থাৎ যাদের মাঝে বিবাহ বৈধ এমন নারী-পুরুষের সংমিশ্রণ, নারীদের কর্তৃক তাদের চেহারা ও শরীরের কিছু অংশ উন্মুক্ত করণ অন্যায়, অবৈধ।
আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হুকুম দিয়েছেন তিনি যেন তাঁর স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মুমিন নারীদেরকে পর্দা করার ব্যাপারে নির্দেশ দেন। ইরশাদ হয়েছে :
﴿ يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ يُعْرَفْنَ فَلا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا ﴾.
( হে নবী, তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বল, তারা যেন তাদের জিলবাবের কিছু অংশ তাদের নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়, তাদেরকে চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে। ফলে তাদেরকে কষ্ট দেয়া হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।) [ সূরা আল-আহযাব: ৫৯ ]
আরও ইরাশাদ হয়েছে:
﴿ وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ ﴾.
(আর তোমরা যখন নবীপত্নীদের কাছে কোনো সামগ্রী চাইবে তখন পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটি তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্র। ) [ সূরা আল-আহযাব: ৫৩ ]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ হাদিসে এসেছে, তিনি বলেছেন: 
‘একজন পুরুষ একজন নারীকে নিয়ে একাকী হলেই শয়তান তাদের তৃতীয়জন হয়ে যায়’।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন: 
‘স্ত্রী অথবা মাহরাম ব্যতীত কোনো পুরুষ কোনো নারীর কাছে কখনোই রাত্রীযাপন করবে না’। 

সে হিসেবে পরিবারের সকল সদস্যের উচিত, আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়নে একে অন্যকে সাহায্য করা; যাতে সবাই সত্যিকার অর্থে মুমিন হতে সক্ষম হয়।
ইরশাদ হয়েছে :
﴿ وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ ﴾.
( আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় ও অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ  ও তার রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ) [  সূরা তাওবা: ৭১ ]
আরও ইরশাদ হয়েছে:
﴿ وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُبِينًا ﴾.
( আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোনো নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন পরুষ ও নারীর জন্য নিজদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে। )  [ সূরা আহযাব: ৩৬ ]

আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দান করুন।

গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটি
আব্দুল্লাহ বিন গাদয়ান.. আব্দুর রাজ্জাক আফিফি.. আব্দুল আযীয বিন বায র.
[ স্থায়ী কমিটির ফতোয়া (১৭/৯১-৯৩) ফতোয়া নং ( ১৪৭৮২) এর দ্বিতীয় প্রশ্ন ]

মুফতী: ইলমী গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটি
সূত্র: ইসলামহাউজ

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।

চিন্তা ও উৎকন্ঠার ইসলামি এলাজ

চিন্তা ও উৎকন্ঠার ইসলামি এলাজ



দুশ্চিন্তা-মুসিবত ও পেরেশানী দূর করার উপায়

পার্থিব জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ও স্বাভাবিক ব্যাপার হচ্ছে দুঃখ, দুঃশ্চিন্তা ও পেরেশানী। কারণ, দুনিয়া কষ্ট, মুসিবত ও সঙ্কটপূর্ণ স্থান। দুনিয়া এবং জান্নাতের মধ্যে পার্থক্য এখানেই। জান্নাতে নেই কোন দুঃখ, দুশ্চিন্তা ও বিষণ্নতা। আল্লাহ তাআলা বলেন,
لَا يَمَسُّهُمْ فِيهَا نَصَبٌ وَمَا هُمْ مِنْهَا بِمُخْرَجِينَ
'সেখানে তাদেরকে ক্লান্তি স্পর্শ করবে না এবং তারা সেখান থেকে বহিষ্কৃতও হবে না।' (  সূরা হিজর : ৪৮)